Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

কোর্টের হার-জিতকে ছাপিয়ে গেল কোর্টের বাইরের বিপর্যয়

খেলা চলাকালীন তারকা খেলোয়াড়ের কোচের হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া। তার জেরে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকা। চাপে পড়ে সেই খেলোয়াড়ের জেতার মুখ থেকে ম্যাচ হেরে বসা— সবই দেখা গেল এ দিন।

অসুস্থ কোচ।

অসুস্থ কোচ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:২৬
Share: Save:

অস্ট্রেলীয় ওপেনের মহানাটকীয় শনিবার।

খেলা চলাকালীন তারকা খেলোয়াড়ের কোচের হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া। তার জেরে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকা। চাপে পড়ে সেই খেলোয়াড়ের জেতার মুখ থেকে ম্যাচ হেরে বসা— সবই দেখা গেল এ দিন। এ রকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা এর আগে কখনও মরসুমের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামে দেখা গিয়েছে বলে মনে করা যাচ্ছে না।

ঘটনাটা কী?

রড লেভার এরিনায় ম্যাচ চলছিল সার্বিয়ান তারকা আনা ইভানোভিচ ও ম্যাডিসন কিস-এর। দ্বিতীয় সেট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই হঠাৎ প্লেয়ার্স বক্সে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান ইভানোভিচের কোচ নাইজেল সিয়ার্স। যিনি আবার ব্রিটিশ এক নম্বর অ্যান্ডি মারের শ্বশুরও। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দ্রুত ঘটে যায় ব্যাপারটা। নাইজেলের অবস্থা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দর্শকরা। কিছুক্ষণ পর মেডিক্যাল টিম স্ট্রেচারে তাঁকে প্লেয়ার্স বক্স থেকে বের করে নিয়ে যায়। তখন তাঁর মুখে অক্সিজেন মাস্ক। জ্ঞান ছিল। কথাও বলছিলেন। তবে হাতে রক্ত লেগে ছিল। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ইভানোভিচ প্রথমে কিছু বুঝতে পারেননি। যখন জানতে পারেন, চোখে-মুখে দুশ্চিন্তা জমা হয়। কিছুক্ষণ দু’-হাতে মুখ ঢেকে বসেওছিলেন। তার পর কোর্টেই ফোন করে খোঁজ-খবর নিতে দেখা যায় তাঁকে। যখন ঘটনাটা ঘটে প্রাক্তন এক নম্বর ৬-৪, ১-০ এগিয়ে ছিলেন। টেনিস অস্ট্রেলিয়া এর পর বিবৃতিতে আটান্ন বছর বয়সি সিয়ার্সের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা জানায়। সঙ্গে এও জানানো হয় তাঁর শারীরিক অবস্থার খবর প্লেয়ারদের জানানোর পরই খেলা ফের শুরু হবে কি না তা ঠিক হবে। প্রায় ৫৫ মিনিট পর ফের খেলা শুরু হলে বিপর্যস্ত ইভানোভিচ শেষ পর্যন্ত ৬-৪, ৪-৬, ৪-৬ হেরে যান।

এটাই অবশ্য প্রথম নয়, দু’দিন আগেও কোর্টে কেঁপে গিয়েছিলেন ইভানোভিচ প্রায় একই রকম ঘটনায়। এক দর্শক সিঁড়ি দিয়ে পড়ে যাওয়ায়। আনা তখন বলেছিলেন, ‘‘ওঁর পড়ে যাওয়ার শব্দটা আমিও শুনতে পেয়েছিলাম। হাত-পা কী রকম ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল শুনে। পরে এক রেফারি বলছিলেন এ রকম ঘটনা এর আগে কখনও হয়নি।’’

নাইজেল অসুস্থ হয়ে পড়ার সময় অ্যান্ডি মারেরও ম্যাচ চলছিল মার্গারেট কোর্ট এরিনায়। তিনি শ্বশুরের অসুস্থতার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। নাইজেলের মেয়ে অর্থাৎ মারের স্ত্রী কিম সিয়ার্স আবার সন্তানসম্ভবা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মারে জুনিয়রের জন্মানোর সম্ভাবনা ফেব্রুয়ারিতে। এমনকী আগেই মারে বলে দিয়েছেন সন্তান যদি এর মধ্যেই জন্মায় তা হলে টুর্নামেন্টের মাঝেই মেলবোর্ন ছাড়বেন তিনি। এর মধ্যে তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচ জেতার পর শ্বশুরের এই ঘটনা শুনে তিনি সাংবাদিক বৈঠক বাতিল করে দ্রুত হাসপাতালে চলে যান।

এ সব ঘটনার মধ্যে দু’বছর আগের চ্যাম্পিয়ন স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কা চতুর্থ রাউন্ডে উঠলেন একটিও সেট না খুইয়ে। সুইস তারকা ৬-২, ৬-৩, ৭-৬ (৭-৩) হারান চেক লুকাস রসোলকে। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার জন্য অবশ্য চতুর্থ বাছাইকে সোমবার লড়তে হবে ১৩ নম্বর বাছাই কানাডিয়ান মিলোস রাওনিকের বিরুদ্ধে। টেনিস সার্কিটের অন্যতম পাওয়ার-সার্ভার যুক্তরাষ্ট্রের জন ইসনারও এগোলেন স্পেনের ১৮ নম্বর বাছাই ফেলিসিয়ানো লোপেজকে হারিয়ে।

মেয়েদের সিঙ্গলসে আবার চেক প্রজাতন্ত্রের বারবোরা স্ট্রাইকোভার অঘটন। তিনি ছিটকে দিলেন তৃতীয় বাছাই স্পেনের গারবিনা মুগুরুজাকে। তাঁর সামনে এ বার দু’বারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কার চ্যালেঞ্জ। যিনি ৬-১, ৬-১ উড়িয়ে দেন জাপানি কোয়ালিফায়ার নাওমি ওসাকাকে।

ভারতীয়দের মধ্যে সানিয়া মির্জা এ দিন জোড়া সাফল্য পেলেন দুটি বিভাগে প্রি-কোয়ার্টারে উঠে। মেয়েদের ডাবলসে শীর্ষ বাছাই সানিয়া-মার্টিনা হিঙ্গিস জুটি ৬-২, ৬-৩ হারান ইউক্রেনিয়ান প্রতিদ্বন্দ্বীদের। মিক্সড ডাবলসে ক্রোয়েশিয়ার ইভান ডডিজের সঙ্গে জুটিতে অস্ট্রেলিয়ার আজলা টমজানোভিচ-কিরিয়সকে হারান ৭-৫, ৬-১। সানিয়া-মার্টিনাকে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে লড়তে হবে রাশিয়ার শ্বেতলানা কুজনেৎসোভা ও ইতালির রবার্তা ভিন্সির বিরুদ্ধে। মিক্সড ডাবলসে সানিয়াদের পরের প্রতিপক্ষ কাজাখস্তানের ইয়ারোস্লাভা শেভেদোভা ও পাকিস্তানের আইসাম-উল কুরেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

australian open djokovich ana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE