Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩

শান্তি-বৈঠকে গরহাজির স্মিথ, নিষ্পত্তি হল না

ঠিক ছিল, রাঁচী টেস্টের আগে একটা বন্ধুত্বের বাতাবরণ তৈরি করা হবে। দুই অধিনায়ক, ম্যাচ রেফারি মিলে একটা শান্তি বৈঠক করবেন। যেখানে তিক্ততা ভুলে ক্রিকেটীয় স্পিরিট মেনে খেলার অঙ্গীকার করা হবে।

চ্যালেঞ্জ: বুধবার রাঁচীতে মহড়া ভারত অধিনায়কের। মাহির শহরে কি রানে ফিরতে পারবেন বিরাট? পিটিআই

চ্যালেঞ্জ: বুধবার রাঁচীতে মহড়া ভারত অধিনায়কের। মাহির শহরে কি রানে ফিরতে পারবেন বিরাট? পিটিআই

রাজীব ঘোষ
রাঁচী শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৬
Share: Save:

ঠিক ছিল, রাঁচী টেস্টের আগে একটা বন্ধুত্বের বাতাবরণ তৈরি করা হবে। দুই অধিনায়ক, ম্যাচ রেফারি মিলে একটা শান্তি বৈঠক করবেন। যেখানে তিক্ততা ভুলে ক্রিকেটীয় স্পিরিট মেনে খেলার অঙ্গীকার করা হবে।

Advertisement

কাগজে কলমে ব্যাপারটা ঠিকই ছিল। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা সম্পূর্ণ অন্য রকম হয়ে দাঁড়াল। দুই অধিনায়কের শান্তি বৈঠক বুধবার হতেই পারল না। এবং তার জন্য কিন্তু দায়ী অস্ট্রেলিয়াই। বিরাট কোহালিকে দাঁড় করিয়ে রেখে শান্তি বৈঠকে এলেনই না স্টিভ স্মিথ। বেশ খানিকক্ষণ অপেক্ষার পরে স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান কোহালি।

ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন এবং আম্পায়াররাও অপেক্ষা করে ছিলেন। অনেক দেরিতে দল নিয়ে এলেন স্মিথ। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ম্যাচের আগে ভারত অধিনায়কের মুখোমুখি বসবেন বলে রিচার্ডসনকে কথাও দিয়েছেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। কিন্তু প্রশ্ন উঠে গেল, তা হলে কি শান্তি বৈঠক চাইছে না অস্ট্রেলিয়া? সব মিলিয়ে রাঁচী টেস্টের আগের দিনও উত্তেজনার আগুনটা ঠিক জ্বলতে থাকল। দুই অধিনায়কের সাংবাদিক বৈঠকে সেই আঁচটা ভালই টের পাওয়া গেল।

বুধবারের শান্তি বৈঠক নিয়ে সাংবাদিকদের স্মিথ বলেন, ‘‘একটু আগে রিচি রিচার্ডসন ও আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁরা বললেন, এই টেস্ট ম্যাচে আমরা দু’দলই যেন ক্রিকেটের নীতি মেনে খেলার চেষ্টা করি। খেলা শুরুর আগে আমাদের দেখা হবে। সেখানে সম্ভবত আমাদের দু’জনকেই ম্যাচ রেফারির কাছে এই নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।’’

Advertisement

কিন্তু বুধবার যে ভাবে বিরাটকে অপেক্ষা করিয়ে রেখে ঠিক সময়ে এলেন না স্মিথ, তাতে ভারত অধিনায়কের মেজাজ ম্যাচ শুরুর আগে কতটা ভাল থাকবে, সেটাই প্রশ্ন। পাশাপাশি আইসিসি ম্যাচ রেফারি স্মিথকে ফের কেন ছাড় দিলেন, সে প্রশ্নও উঠছে।

আরও পড়ুন: নতুন বলে মহড়া স্পিনারদের

জানা গেল, অধিনায়কদের বৈঠকে ঠিক সময়ে যাতে হাজির থাকেতে পারেন, তাই নেটে ব্যাটিং হয়ে যাওয়ার পরে নির্ধারিত সময়ের ৪৫ মিনিট আগেই সাংবাদিক বৈঠক করতে চলে আসেন কোহালি। যে জন্য ভারতীয় অধিনায়কের সাংবাদিক সম্মেলনে আসতে পারেননি বেশ কয়েক জন সাংবাদিকও। কিন্তু সবই বিফলে গেল।

বোলার: স্পিন করবে রাঁচীতে। স্মিথও নেটে স্পিনার। পিটিআই

কোহালির সাংবাদিক বৈঠকের পরে আরও প্রায় ৪৫ মিনিট স্টেডিয়ামে ছিল ভারতীয় দল। ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট সংস্থা সূত্রের খবর, শান্তি বৈঠক যখন হওয়ার কথা, তখনও অস্ট্রেলিয়া দল হোটেল ছেড়ে বেরোয়নি শুনে টিম বাসে উঠে পড়েন কোহালি।

অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার প্রতিনিধিরা অবশ্য স্মিথের এই দেরিতে আসার ব্যাপারটাকে হাল্কা করে দেখছেন। তাঁদের বক্তব্য, স্মিথদের কাছে নাকি এই বৈঠক ঠিক কখন হবে, সে খবরই ছিল না! তাঁরা বেশি ব্যস্ত পিচ আর ভারত অধিনায়ককে খোঁচানো নিয়ে।

বুধবারও সে দেশের এক সাংবাদিক কোহালিকে উস্কানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় ক্যাপ্টেন সেই ফাঁদে পা না দিয়ে বলে দেন, ‘‘যা হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে আর চর্চা চাই না।’’

তবে শান্তির বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হলেও দুই ক্যাপ্টেনের মধ্যে বাগযুদ্ধ যে থামেনি তার প্রমাণ ফের পাওয়া গেল টেস্ট শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে। বেঙ্গালুরু টেস্টের পরে যে জায়গায় ছিলেন সেই জায়গা থেকে একচুলও নড়েননি কোহালি। পরিষ্কার বলে গেলেন, ‘‘আমি বেঙ্গালুরুতে যা বলেছি, তা নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই।’’ ঘণ্টা দেড়েক পরেই স্মিথের পাল্টা জবাব, ‘‘ভুলটা আমার ছিল। কিন্তু বারবার একই জিনিস আমরা করেছি, এটা একদম বাজে কথা। বিরাটের বিবৃতিটা বোধহয় ঠিক নয়।’’

বৃহস্পতিবারের শান্তি বৈঠকও যে খুব একটা শান্তিপূর্ণ নাও হতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন স্মিথ। বললেন, ‘‘বৈঠকের মুড বুঝে আমি বিরাটকে কয়েকটা কথা বলতে চাই। ও ওর অবস্থান থেকে সরছে না। আর আমার বক্তব্য হল, ওরা পুরোপুরি ভুল।’’ বৃহস্পতিবার শান্তি বৈঠকে যদি দুই নেতার আস্তিন থেকে লুকনো অস্ত্র বেরিয়ে পড়ে, তার প্রভাব যুদ্ধক্ষেত্রে পড়বে না? ফের চরম আগ্রাসনের উৎসব দেখতে চলছে না তো রাঁচী?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.