কলকাতা লিগের ডার্বিতে বিশ্রী হারের ‘লজ্জিত’ হলেও চব্বিশ ঘণ্টা পরেই ০-৪ স্কোরলাইনকে বিরাট গুরুত্ব দিতে রাজি নন মোহনবাগান কোচ থেকে কর্তা সবাই। বরং তাঁদের মতে, আইএসএলে চলে যাওয়া সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা বাগানে ফিরে এলে ছবিটা অন্য রকম হয়ে যাবে আই লিগে। তখন নাকি দেখা যাবে ডার্বিতে কার শক্তি কত!
‘‘কলকাতা ডার্বির আগেই আমি বলেছিলাম আমাদের বেশির ভাগ ফুটবলার জুনিয়র। শক্তিতে আমরা পিছিয়ে আছি ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে। ওদের টিম অনেক ভাল। প্রথম টিমের প্রায় সব ফুটবলারই আছে ওদের। সেখানে আমাদের আই লিগ জেতা টিমের মাত্র দু’জন ফুটবলারকে নিয়ে নেমেছি আমি। যারা আইএসএলে চলে গিয়েছে তারা ফিরলে আমাদের টিমের শক্তি অনেক বাড়বে,’’ সোমবার বিকেলে বলছিলেন সঞ্জয় সেন। বাগান কোচ ডার্বি ম্যাচে হারের পর রবিবার কিছুটা বিমর্ষ থাকলেও এ দিন মনে হল ফের চাঙ্গা। সম্ভবত ক্লাব কর্তারা তাঁর পাশে দাঁড়ানোয়। অফিস করেছেন অন্য কাজের দিনের মতোই। সামনে কলকাতা লিগের আরও দু’টো ম্যাচ আছে বাগানের। অবনমনের আশঙ্কাও আছে। সঞ্জয় চাইছেন, বাকি দু’টো ম্যাচ জিতে ভাল জায়গায় পৌঁছতে। সে জন্য অনুশীলনে নেমে পড়ছেন আজ মঙ্গলবার সকালেই। বলছিলেন, ‘‘ডার্বিতে চার গোল খাওয়াটা খারাপ হয়েছে। রেফারি ওদের দ্বিতীয়ার্ধে সাহায্য করেছেন। ডুডুর লাল কার্ড কোনও ভাবেই হয় না। কিন্তু আই লিগ তো এখনও আছে। সবাই ফিরুক। তখনও তো ডার্বি থাকবে। দেখা যাক।’’
“কলকাতা ডার্বির আগেই বলেছিলাম আমাদের বেশির ভাগ ফুটবলার জুনিয়র।
শক্তিতে আমরা পিছিয়ে আছি ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে। যারা আইএসএলে চলে গিয়েছে
তারা ফিরলে টিমের শক্তি অনেক বাড়বে।” —সঞ্জয় সেন
মেহতাব, খাবরা, রবার্ট-সহ আইএসএলের বেশির ভাগ ফুটবলারকে দলে রেখে কলকাতা ডার্বি খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। জিতেছে কলকাতা লিগ। ছুঁয়েছে ইতিহাস। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য যেখানে প্রায় পুরো শক্তি নিয়ে নেমেছিলেন, সেখানে সঞ্জয়ের হাতে ছিল এক ঝাঁক জুনিয়র ফুটবলার। যাঁদের ডার্বির অভিজ্ঞতাই নেই। সনি নর্ডি, বলবন্ত সিংহ, বিক্রমজিৎ সিংহ, শৌভিক চক্রবর্তী, প্রীতম কোটাল-সহ আই লিগ জয়ী টিমের বারো জন নিয়মিত ফুটবলার আইএসএলে খেলতে চলে গিয়েছেন। তাঁদের চুক্তি সরাসরি। ক্লাব সূত্রের খবর, স্পনসর নিয়ে ঝামেলা না মেটায় আর্থিক সমস্যা রয়েছে বাগানে। সে জন্যই আই লিগ জয়ী টিমের বেশির ভাগ ফুটবলারকে ছয় মাস মাইনে দিয়ে রাখতে চাইনি ক্লাব।
যে ব্যাখ্যা অবশ্য পুরোপুরি মানতে নারাজ বাগান কর্তারা। অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘এক মাসের একটা কলকাতা লিগের জন্য ছয় মাস ধরে ফুটবলারদের মাইনে দিতে যাব কেন? আমাদের লক্ষ্য ছিল কলকাতা লিগ থেকে যদি কেন লুইস বা তীর্থঙ্কর সরকারের মতো কোনও ফুটবলারকে আই লিগের জন্য তুলে আনা যায়। চার গোল যদি লজ্জার হয়, তা হলে মেহতাব, সৌমিকদের মতো তারকা ফুটবলার খেলিয়ে একটা কলকাতা লিগ জেতা আরও লজ্জার।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমাদের একটাই ভুল হয়েছে, ক্লাবের এ মরসুমের লক্ষ্যটা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল আগেই।’’
পাশের ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে যখন সোমবার বিকেলেও আলো আর আলো, তখন বাগান তাঁবু যেন অন্ধকার। একশো দিন আগের আই লিগ জেতার উচ্ছ্বাসের হ্যাংওভার কেটে গিয়ে চলছে আগের দিনের বিশ্রী হারের ময়নাতদন্ত আর রেফারির মুণ্ডপাত। এমনকী পরের বার কলকাতা লিগ শুধুই অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারদের নিয়ে খেলার কথা ভাবছেন অনেক কর্তা। তাঁদের বক্তব্য, ঘরোয়া লিগকে শুধু জুনিয়র ফুটবলার তুলে আনার মঞ্চ করা হবে এটা প্রকাশ্যে ঘোষণা করে নামানো হোক টিম মোহনবাগানকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy