Advertisement
১৭ জুন ২০২৪
Bengal

শাহবাজের দাপটে ৩২০ তাড়া করে জয় বাংলার

শেষ দশ রান যখন বাকি, শাহবাজ ভেবেছিলেন দু’টি ছয় মেরে ম্যাচ বার করে দেবেন।

নায়ক: অপরাজিত ৬১ রানে জয় এনে দিলেন শাহবাজ। নিজস্ব চিত্র

নায়ক: অপরাজিত ৬১ রানে জয় এনে দিলেন শাহবাজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৭
Share: Save:

মরসুমের শুরু থেকেই মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে চেয়েছিলেন অরুণ লাল। বিজয় হজারে বা সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে কোচের বার্তা ফল দেয়নি। অথচ রঞ্জি ট্রফিতে একেবারে অন্য বাংলাকে দেখা যাচ্ছে।

বিপক্ষকে ভয় পাচ্ছেন না। প্রত্যেকে লড়ছেন। শুক্রবার জয়পুরের সোয়াই মানসিংহ স্টেডিয়ামে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দু’উইকেটে জিতল বাংলা। নায়ক সেই শাহবাজ আহমেদ। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করার পরে গুজরাতের বিরুদ্ধেও তাঁর বোলিংয়ে দাপট দেখা গিয়েছে। এ বার অবশ্য জ্বলে উঠলেন ব্যাট হাতে। তাঁর অপরাজিত ৬১-র সৌজন্যে ছয় পয়েন্ট নিশ্চিত করে কোয়ার্টার ফাইনাল অভিযানে আরও এক ধাপ এগোলেন অভিমন্যু ঈশ্বরনেরা। বাংলার পয়েন্ট এখন ২৬। উঠেছে চারে। শেষ ম্যাচ পঞ্জাবের বিরুদ্ধে পাটিয়ালায়। সেখানে তিন পয়েন্ট পেলেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে।

কিন্তু এই ছয় পয়েন্ট পেতে কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে বাংলাকে। কী ভাবে একজন সাধারণ ক্রিকেটার থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায়, এই ম্যাচ তারই উদাহরণ। বাংলার রান যখন ২০৮, ড্রেসিংরুমে ফিরে যান অনুষ্টুপ মজুমদার (৩৫)। অপরাজিত শাহবাজের সামনে তখন ১১২ রানের লক্ষ্য। সঙ্গে ক্রিজে অর্ণব নন্দী। কিন্তু ২৯ রানের মধ্যেই ভেঙে গেল জুটি। ২০ রান করে অর্ণব ফিরে যেতেই বাংলার ড্রেসিংরুমে ফিরল আতঙ্ক। কারণ প্রথম ইনিংসে ১২৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল তারা। টেলএন্ডারেরা মিলিয়ে ১ রান যোগ করেছিলেন সেই ইনিংসে। দ্বিতীয় ইনিংসে তার পুনরাবৃত্তি ঘটলে ছয় পয়েন্ট স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যেত!

শাহবাজ হাল ছাড়েননি। ক্যালকুলাস-ভক্ত এই ক্রিকেটার তখন জয়ের অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন। আকাশের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়ে ড্রেসিংরুমে জয়ের আশা জাগিয়ে তোলেন শাহবাজ। কিন্তু ৫৩ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান আকাশ। শেষ ৩৩ রান যখন বাকি, বাংলার ড্রেসিংরুম তখন নিস্তব্ধ। কোচ বলছিলেন, ‘‘কেউ নিজেদের জায়গা ছেড়ে এক ইঞ্চি নড়েনি।’’ শাহবাজ সেই মুহূর্তে কী ভাবছিলেন? বাংলার নতুন নায়ক বললেন, ‘‘শুধু মাথায় ছিল, জিততে হবে। নিজেকে বার বার বলেছি মেজাজ হারিয়ো না। এখান থেকে হারলে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার রাস্তাই থাকবে না।’’

শেষ দশ রান যখন বাকি, শাহবাজ ভেবেছিলেন দু’টি ছয় মেরে ম্যাচ বার করে দেবেন। কিন্তু তিনি ফিরে গেলে নামতে হত নীলকণ্ঠ দাসকে। যখন জিততে দরকার আরও ছয়। শাহবাজ নিজেকে সামলাতে পারেননি। সেই ছয় মেরেই জয় নিশ্চিত করে দিলেন।

বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লর কথা, ‘‘বাংলার ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ইনিংস। শুধু রান করে লাভ নেই। জেতাতে হবে। শাহবাজ সেটাই করেছে।’’ মুগ্ধ রঞ্জি-জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও, ‘‘শাহবাজের এই ইনিংস দেড়শো থেকে দুশো রানের সমান।’’

আজ, শনিবার সকালেই পাটিয়ালা রওনা হচ্ছে বাংলা। ১২ ফেব্রুয়ারি ম্যাচের আগে কোনও রকম উৎসব পালন করে মনঃসংযোগ নষ্ট করতে চায় না দল। অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন বলছিলেন, ‘‘পঞ্জাবের বিরুদ্ধে জিতে একেবারে উৎসব করা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Bengal Rajasthan Ranji Trophy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE