Advertisement
E-Paper

প্রাণবন্ত পিচ উল্টে চাপে ফেলে দিল মনোজদের

মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে নিষ্প্রাণ পিচে খেলার পরে কেরলের বিরুদ্ধে পেস-সহায়ক উইকেট চেয়েছিল বাংলা শিবির। কারণ ছিল দু’টি। এক) মহম্মদ শামি থাকছেন এবং দুই) সরাসরি ম্যাচ জিতে ছয় পয়েন্টের জন্য ঝাঁপাতে চেয়েছিল বাংলা। 

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫১
উদ্বেগ: দিনের শেষে চিন্তিত দুই মুখ। অরুণ ও সৌরভ। নিজস্ব চিত্র

উদ্বেগ: দিনের শেষে চিন্তিত দুই মুখ। অরুণ ও সৌরভ। নিজস্ব চিত্র

মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে নিষ্প্রাণ পিচে খেলার পরে কেরলের বিরুদ্ধে পেস-সহায়ক উইকেট চেয়েছিল বাংলা শিবির। কারণ ছিল দু’টি। এক) মহম্মদ শামি থাকছেন এবং দুই) সরাসরি ম্যাচ জিতে ছয় পয়েন্টের জন্য ঝাঁপাতে চেয়েছিল বাংলা।

কিন্তু তাঁদের হয়তো মনে ছিল না যে, কেরলেরও বাসিল থাম্পি, সন্দীপ ওয়ারিয়েরদের মতো পেস শক্তি রয়েছে। মঙ্গলবার ইডেনে কেরলের বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রথম দিনে মনোজ তিওয়ারিদের জন্য ব্যুমেরাং হয়ে ফিরল তাঁদেরই পছন্দের পেস-সহায়ক পিচ। ঘাসের পিচে টস হারা মানেই অনেকটা পিছিয়ে পড়া। বাংলা সেই গুরুত্বপূর্ণ টসটা হারল এবং প্রাণবন্ত পিচে প্রথম ইনিংসে ১৪৭ রানেই শেষ হয়ে গেল। দিনের শেষে ১২ ওভার খেলে কেরল তুলে ফেলেছে এক উইকেটে ৩৫। তারা পিছিয়ে ১১২ রানে।

একমাত্র উইকেটটি দ্বিতীয় বলেই পেয়েছেন শামি। তার পর আর কোনও সাফল্য আসেনি বাংলার ঘরে। আজ, দ্বিতীয় দিন সকালে প্রথম ঘণ্টায় শামি-ডিন্ডা জুটি যদি কেরলকে চাপে ফেলে না দিতে পারেন, তা হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়ার আতঙ্ক তাড়া করতে পারে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ছয় ওভারের মধ্যেই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলা। শূন্য রানে আউট হন ওপেনার কৌশিক ঘোষ। আবারও ব্যর্থ সহ-অধিনায়ক সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (০)। প্রথম জন গত ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেছেন। দ্বিতীয় জন বাংলার ব্যাটিংয়ের প্রধান স্তম্ভ। রঞ্জি মরসুমের প্রথম তিন ম্যাচ মিলিয়ে চার ইনিংসে ৫৮ রান রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সুদীপের ব্যর্থতায় হতাশ বাংলার মেন্টর অরুণ লাল। দিনের শেষে তিনি বলেন, ‘‘একটি দলের মূল ব্যাটসম্যান রান না পেলে সমস্যা হওয়ারই কথা। ওকে প্রথম দলে রাখা ক্রমশ খুব কঠিন হয়ে উঠছে।’’

দু’জনেই বাইরের বল খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন সুইংয়ে। কৌশিকের উইকেট নেন বাসিল থাম্পি। যাঁকে ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ সম্পদ মনে করছেন অনেকে। সুদীপ ফিরে যান সন্দীপের বলে। ১১ রানে দুই উইকেট হারানোর পরে ক্রিজে আসেন মনোজ। অধিনায়ককে পাশে পেয়ে দ্রুত রান করেন রামন (৪০)। কিন্তু ভাল শুরু করলেও তা বড় ইনিংসে পরিণত করতে পারেননি বাংলার ওপেনার। তাঁকে ফিরিয়ে দেন সন্দীপ।

অনুষ্টুপ মজুমদারের সঙ্গে ইনিংসের হাল ধরার চেষ্টা করেন মনোজ। গত ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করলেও এ দিন শুরু থেকে শট খেলার প্রবণতা ছিল না তাঁর। থাম্পিদের বিরুদ্ধে মাটি কামড়ে পড়ে থাকার মনোভাব নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লাঞ্চের পরেই তৃতীয় ওভারে বাংলা অধিনায়কের লড়াকু ইনিংস শেষ করে দেন তরুণ পেসার এম ডি নিধীশ। ২২ রান করে এলবিডব্লিউ হন তিনি। অধিনায়ক আউট হওয়ার পর থেকে ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় (১), বিবেক সিংহ (১৩), মহম্মদ শামি (০), অশোক ডিন্ডা (০)-রা অনুষ্টুপকে সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। নবম উইকেটে মুকেশ কুমারের (৯) সঙ্গে ২৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে দলকে ১৪৭ রানে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন অনুষ্টুপ। ৫৩ রান করে নিধীশের বলে আউট হন তিনি। শেষে মুকেশকে ফিরিয়ে তাঁর চতুর্থ উইকেটটি নেন থাম্পি। তিন উইকেট নেন নিধীশ। সন্দীপ নেন দু’টি উইকেট। ডিন্ডাকে ফিরিয়ে এক মাত্র শিকার জলজ সাক্সেনার।

বাংলার ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল না ম্যাচটি ইডেনে হচ্ছে না ব্রিসবেনে। যদিও ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণ হিসেবে শট বাছাইকেই দায়ী করছেন মেন্টর অরুণ লাল। তিনি বলছেন, ‘‘বাইরের বল চালানোর প্রয়োজন ছিল না। মানছি উইকেট থেকে পেসারেরা সাহায্য পেয়েছে। কিন্তু এটাই তো ক্রিকেট। আমার মনে হয়, উইকেট নিয়ে একটু বেশিই ভেবেছে ব্যাটসম্যানেরা।’’ অধিনায়ক মনোজ অবশ্য মনে করেন, থাম্পিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংই তাঁদের পতনের মূল কারণ। অধিনায়কের কথায়, ‘‘কেউ আক্রমণাত্মক শট খেলতে গিয়ে আউট হয়নি। ভাল বোলিংয়ের শিকার হয়েছি আমরা।’’ পাশাপাশি, এত তাড়াতাড়ি হাল ছাড়ারও কারণ দেখছেন না মনোজ। কারণ তাঁর দলে ভারতীয় টেস্ট দলের এক নম্বর পেসার রয়েছেন। যিনি তাঁর দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দেন কেরল ওপেনার অরুণ কার্তিককে। মনোজ মনে করেন, বুধবার সকালে শামিই পিচের আর্দ্রতা ব্যবহার করে বিপক্ষকে সমস্যায় ফেলবেন। অধিনায়ক বলছেন, ‘‘ভেজা পিচে ব্যাট করা অত সোজা নয়। আমার বিশ্বাস কাল সকালেই সেটা টের পাবে কেরল।’’

দিনের শেষে সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও বাংলার ড্রেসিংরুমে গিয়ে দলকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেন। বাংলার হয়ে সর্বোচ্চ রান করা অনুষ্টুপ বলে গেলেন, ‘‘দাদি (সৌরভ) আমাদের বলেন, এ রকম পরিস্থিতি থেকে বাংলা অনেক ম্যাচ জিতেছে। আমরা যেন সেটা মাথায় রেখেই কাল খেলতে নামি।’’

দিনের শেষে কেরলের দ্বাদশ ব্যক্তি বিষ্ণু বিনোদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন মনোজ। অভিযোগ, বাংলা অধিনায়ককে দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায় অপ্রীতিকর কথা বলেন বিষ্ণু। যা বুঝতে না পারলেও অনুমান করতে পেরে তাঁর প্রতিবাদ করতে এগিয়ে যান মনোজ। তখনই দু’জনকে দু’দিকে সরিয়ে দেন উপস্থিত আম্পায়ারেরা।

Bengal Kerala Ranji Match
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy