Advertisement
E-Paper

উইলিসের সেই বল ভুলতে পারেননি কপিল

প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কপিল দেব নিখাঞ্জ শোকস্তব্ধ বব উইলিসের প্রয়াণে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৮
অতীত: বিরাশিতে এজবাস্টনে প্রস্তুতি ম্যাচে গাওস্কর-উইলিস। ফাইল চিত্র

অতীত: বিরাশিতে এজবাস্টনে প্রস্তুতি ম্যাচে গাওস্কর-উইলিস। ফাইল চিত্র

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ২৪ ঘণ্টা আগে। কিন্তু সত্তর ও আশির দশকে ইংল্যান্ডের সেই বিখ্যাত পেসার রবার্ট জর্জ ডিলান উইলিসের প্রয়াণে ক্রিকেট বিশ্বের শোকাচ্ছন্নতা বৃহস্পতিবারেও কাটেনি। চলছে স্মৃতিচারণ। উঠে আসছে বব উইলিসের নানা অজানা অধ্যায়ের কাহিনি।

প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কপিল দেব নিখাঞ্জ শোকস্তব্ধ বব উইলিসের প্রয়াণে। তাঁর কথায়, ‘‘আশির দশকের শুরুতে ইংল্যান্ডে একটা টেস্ট ম্যাচে ব্যাট করছিলাম। বোলার বব। হঠাৎ একটা শর্ট বল ধেয়ে এল। আমি পুল করে (কপিলের বিখ্যাত সেই ‘নটরাজ’ শট) বলটা মাঠের বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বলটা আমার অনুমানের চেয়েও জোরে ছিল। ফলে বলটা আমার কানে এসে লাগে। জীবনে ওই একবারই বল আমার গায়ে লেগেছিল।’’ প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক যোগ করেন, ‘‘ভয়ঙ্কর জোরে বল করত বব। ওকে খেলা খুব কঠিন ছিল। কোনও দিন দেখিনি ব্যাটসম্যানের দিকে এগিয়ে এসে কিছু বলছে বা আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক করছে। মাঠে বেশি কথাই বলত না বব। ওঁর হয়ে বলই কথা বলত।’’

সন্দীপ পাটিল তিরাশির বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আগ্রাসী ভূমিকায় ব্যাট করেছিলেন বব উইলিসের বিরুদ্ধে। পাটিলের স্মৃতিচারণ, ‘‘আটটি চার মেরে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ৩২ বলে ৫১ রান করেছিলাম। ইংল্যান্ডের ফাইনালে ওঠা হয়নি ঘরের মাঠে। অন্য কোনও বোলার হলে রাগে সে দিন আমার সঙ্গে কথাই বলত না। কিন্তু বব আমার অর্ধশতরানের পরেই এসে করমর্দন করে ফাইনালে ওঠার জন্য আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছিল।’’

বিশ্ব ক্রিকেটের আর এক সেরা অলরাউন্ডার প্রাক্তন নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক রিচার্ড হ্যাডলি বলছেন, ‘‘ববের বলেই চুরাশিতে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড-নিউজ়িল্যান্ড সিরিজে ৯৯ রানে আউট হয়েছিলাম। তবে ওই টেস্টে ৮ উইকেট নিয়েছিলাম। জিতি আমরাই। দ্বিতীয় ইনিংসে বব আমার বলে আউট হয়। ম্যাচের পরে রসিকতা করে বলেছিল, তোমাকে শতরান পেতে দিলাম না বলে আমাকে ঠিক আউট করলে।’’

শোকস্তব্ধ প্রাক্তন ইংল্যান্ড ফুটবলার গ্যারি লিনেকারও। তাঁর কথায়, ‘‘ইংল্যান্ডের একজন সেরা ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব চলে গেলেন, বহু বার দেখা হয়েছে। এ রকম রসিক ও অমায়িক মানুষ খুব কম দেখেছি।’’

কলকাতাতেও সত্তর ও আশির দশকে দু’টি টেস্ট খেলে গিয়েছেন প্রয়াত এই ইংল্যান্ড পেসার। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ১৯৭৭ সালের জানুয়ারিতে ইডেনে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্টে ইংল্যান্ডের ১০ উইকেটে জয়। ২০১২ সালে অ্যালেস্টেয়ার কুকের দল ইডেনে ভারতকে হারানোর আগে এটাই ছিল ইডেনে ইংল্যান্ডের শেষ জয়। সেই ম্যাচে স্পিন সহায়ক ইডেনের ২২ গজে ২৭ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংকে একাই উড়িয়ে দিয়েছিলেন উইলিস। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, একাশির অ্যাশেজ সিরিজ যদি হয়ে থাকে ইয়ান বোথামের। তা হলে ওই সিরিজে হেডিংলে টেস্টের নায়ক বব উইলিস। যদিও ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন বোথাম। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩ রানে ৮ উইকেট নেন বব ডিলান ও দামি ওয়াইনের ভক্ত উইলিস। ১১১ রানে অলআউট হয়ে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ হারে ১৮ রানে।

এ ছাড়াও ছিয়াত্তরে হেডিংলেতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৪২ রানে পাঁচ উইকেট, সাতাত্তরে লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭৮ রানে ৭ উইকেট, আশি সালে ট্রেন্ট ব্রিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বব উইলিসের ৬৫ রানে পাঁচ উইকেট দখল প্রমাণ করে, বোলার হিসেবে সে সময় কতটা বিধ্বংসী ও গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন তিনি।

বর্তমান সময়ে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা স্টুয়ার্ট ব্রড বা জিমি অ্যান্ডারসনরাও বলছেন, ‘‘বব ছিলেন বাড়ির অভিভাবকের মতো। ভুলত্রুটি হলে নিজে ফোন করে ভুল ধরাতেন। আবার সাফল্য পেলে সকলের সামনেই উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতেন।’’

Bob Wills Kapil Dev Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy