টেস্ট জয়ের পর ভারতীয় শিবিরের উচ্ছাস।—ছবি পিটিআই।
বৃষ্টির ভ্রুকুটি ছিল। ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীদের চাপা শঙ্কাটাও ক্রমশই তাই গভীর হয়ে উঠছিল। কিন্তু, রবিবার এমসিজি-তে যাবতীয় শঙ্কা, টেনশন ফুত্কারে উড়িয়ে দিলেন ভারতীয় বোলাররা। এমসিজি-তে চলতি বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির তৃতীয় টেস্টে ১৩৭ রানে জিতে চার টেস্টের সিরিজে ২-১ এগিয়ে গেলেন বিরাট কোহালিরা। পঞ্চম ততা শেষদিনের প্রথম দুই ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। যে ঘটনা ভারতীয় শিবিরের আবহটা স্বভাবতই বেশ গুমোট করে তুলেছিল। তাহলে কি...? লাঞ্চ বিরতির পর খেলা শুরু হতে আকাশ অনেকটা ফর্সা। এমসিজি-র বাইশ গজে বল গড়াল।
শনিবারই পড়ে গিয়েছিল অজিদের আটটি উইকেট। কোহালিদের দরকার ছিল আর মাত্রই দুটি উইকেটের। কিন্তু, বিনা যুদ্ধে সুচাগ্র মেদিনী ছেড়ে দিতে যে অস্ট্রেলীয়রা একেবারেই রাজি হবেন না বোঝাই গিয়েছিল। আসলে অজিদের রক্তেই যে চোয়ালচাপা লড়াই। টিম পেনের দল সেই রাস্তা ছেড়ে বেরিয়ে আসবে এটা যে ভাবাই ভুল! প্যাট কামিন্স ও নেথান লায়ন এক্কেবারে সিংহের মতোই লড়ছিলেন বটে! মধ্যান্হভোজের বিরতির পর খেলা কিছুটা গড়াতেই ফের বুমরার ঝটকা! এই সিরিজে ক্রমশই যেন কোহালিদের উইনিং ফ্যাক্টর হয়ে উঠছেন এই ভারতীয় পেসার। প্রথম ইনিংসে হাফ ডজন শিকার ঝুলিতে পোরার পর অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসেও বুমরা তুললেন তিনটি শিকার। এমসিজি টেস্টে ৯ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ তিনিই।
১১৪ বলে ৬৩ রান করে বুমরার বলে কামিন্স সাজঘরে ফেরত যাওয়ার পরই নির্ধারিত হয়ে গেল মেলবোর্ন টেস্টের ভবিষ্যত্। প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় কামিন্সকে উঠে দাঁড়িয়ে গোটা এমসিজি। অতুলনীয় সম্মান। এর ঠিক পরের ওভারেই বর্ষীয়ান ইশান্ত সাজঘরের রাস্তা দেখালেন নেথান লায়নকে।
আরও পড়ুন: মেলবোর্ন টেস্টে ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের কারণ
স্বাধীনতার সময় থেকে অস্ট্রেলিয়া সফর করছে ভারত। আজ পর্যন্ত কোনও অধিনায়ক এ দেশ থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরতে পারেননি। কামিন্স যতই দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করুন, যতই বর্ডার-মাইকেল হাসিরা মনে করুন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট নতুন এক অলরাউন্ডারকে আবিষ্কার করেছে, বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির উপরে একটা হাত মনে হচ্ছে রেখেই ফেললেন কোহালি। আর সেটা শেষপর্যন্ত সত্যিই হলে ভারতীয় ক্রিকেটে জন্ম নেবে নয়া এক লোকগাথা।
দাঁতে দাঁত কামড়ে লড়েছিলেন বটে, কিন্তু অতীতের অ্যালান বর্ডার এবং জেফ থমসন হয়ে ওঠা হল না নেথান লায়ন ও প্যাট কামিন্সের। ১৯৮২-র সেই বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচে জেতার জন্য ২৯২ রান তাড়া করে শেষ উইকেটে অ্যালান বর্ডার এবং জেফ থমসনের জুটি ৭০ রান যোগ করে ফেলেছিলেন। যদিও সে বারও শেষ রক্ষা হয়নি। আর এ বার মেলবোর্নেও হল না। এমনকি এ দিন মেলবোর্নে বৃষ্টিও বাঁচাতে পারল না টিম পেনদের।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণির দেশ থেকে গতির তোপধ্বনি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy