Advertisement
E-Paper

কোলাদোর ছন্দে ডার্বির আগে চনমনে ইস্টবেঙ্গল

বিপক্ষে মারাদোনার কোচিংয়ে পশ্চিম এশিয়ার ক্লাবে খেলা ফুটবলার আদেমোলা কুটি ছিলেন। ম্যাচের আগে তাঁর গরমাগরম মন্তব্য শুনে আশা করা গিয়েছিল, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ধুন্ধুমার একটা ম্যাচ খেলার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৩
অপ্রতিরোধ্য: এরিয়ান রক্ষণ ভেঙে এগোচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলের জয়ের নায়ক কোলাদো। ছবি: রণজিৎ নন্দী

অপ্রতিরোধ্য: এরিয়ান রক্ষণ ভেঙে এগোচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলের জয়ের নায়ক কোলাদো। ছবি: রণজিৎ নন্দী

খেলা শুরুর ঠিক আগে ইস্টবেঙ্গল সদস্য গ্যালারিতে বসে মোবাইল ফোনে চোখ রেখে বড় ম্যাচের স্মৃতি রোমন্থন করছিলেন দুই কলেজ পড়ুয়া সমর্থক। এক মনে বছর খানেক আগে কলকাতা লিগের ডার্বিতে দো দং হিউনের সেই বিখ্যাত জোড়া ফ্রি-কিকে গোলের মুহূর্তগুলো দেখে হাততালি দিচ্ছিলেন তাঁরা।

খেলা শেষে লালরিনডিকা রালতে ও খাইমে সান্তোস কোলাদোর জোড়া গোলে এরিয়ানকে ৩-০ হারিয়ে তাঁদেরই একজন বলে গেলেন, ‘‘আই লিগের ডার্বিতে বছরের শুরুতে মোহনবাগান কেঁপে গিয়েছিল কোলাদোর সামনে। এ বার কলকাতা লিগেও মনে হচ্ছে সে রকমই হবে।’’

বিপক্ষে মারাদোনার কোচিংয়ে পশ্চিম এশিয়ার ক্লাবে খেলা ফুটবলার আদেমোলা কুটি ছিলেন। ম্যাচের আগে তাঁর গরমাগরম মন্তব্য শুনে আশা করা গিয়েছিল, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ধুন্ধুমার একটা ম্যাচ খেলার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁকে ম্লান করে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে টানা নব্বই মিনিট ঝলমল করলেন সেই কোলাদোই। বড় ম্যাচে তিনিই যে টেক্কা ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের।

সাংবাদিক সম্মেলনে ইস্টবেঙ্গল কোচও বলে গেলেন, ‘‘ওকে ইস্টবেঙ্গলে আমিই নিয়ে এসেছি। তাই জানি, ও কী মানের ফুটবলার। বিপক্ষকে কী ভাবে নাজেহাল করে।’’

লিগের প্রথম ম্যাচে জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে খেলেননি। কিন্তু তার পরে বিএসএস ও এরিয়ান— দুই ম্যাচে তিন গোল করে ফেললেন এই স্পেনীয় ফুটবলার। এ দিন দ্বিতীয়ার্ধে তাঁকে আটকাতে গিয়েই হিমশিম খেলেন এরিয়ানের ডিফেন্ডাররা। ৬১ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠ থেকে কাশিম আইদারা বল বাড়িয়েছিলেন। সেই বল ধরে পরিবর্ত হিসেবে নামা রোনাল্ডো অলিভিয়েরার সঙ্গে চকিতে ‘ওয়ান-টু’ খেললেন প্রথমে। তার পরে গতিতে চিকা ওয়ালিদের রক্ষণকে পিছনে ফেলে দুরন্ত প্লেসিংয়ে দলের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম গোল কোলাদোর।

খেলার একদম শেষ লগ্নে এরিয়ান বক্সে রোনাল্ডোকে ফাউল করেছিলেন বিপক্ষ ডিফেন্ডার ম্যাডি। কিন্তু রেফারি খেলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলে বক্সের মাথায় ‘লুজ বল’ ধরে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ এগিয়ে দেন সেই কোলাদো।

দ্বিতীয়ার্ধে কখনও মাঝমাঠে ভিতরে ঢুকে এসে, কখনও বা উইংয়ে সরে গিয়ে বিপক্ষকে ধোঁকা দিচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের এই আট নম্বর খেলোয়াড়। কোলাদোকে থামাতেই এই সময় ৪-৫-১ ছকে চলে গিয়েছিলেন এরিয়ান কোচ রাজদীপ নন্দী। কিন্তু তাতেও রোখা যায়নি কোলাদোকে। আরও গোল হতে পারত। কিন্তু বিদ্যাসাগর সিংহ গোলের সামনে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলায় ও এরিয়ান গোলকিপার সায়াদ বিন আবদুল কাদিরের নৈপুণ্যে গোল সংখ্যা বাড়েনি ইস্টবেঙ্গলের।

খেলা শুরুর আধ ঘণ্টার মধ্যেই চোট পেয়ে বাইরে চলে গিয়েছিলেন এরিয়ানের বিদেশি স্ট্রাইকার এমানুয়েল। অপর বিদেশি কুটিও নিষ্প্রভ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তাই এরিয়ান শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক রণনীতি নেওয়ায় গোল পেতে দেরি হচ্ছিল আলেসান্দ্রোর দলের। ৪১ মিনিটে বাঁ দিক থেকে মনোজ মহম্মদ ওভারল্যাপে গিয়েছিলেন। তাঁর বাড়ানো বলে পা ছোঁয়ালেই গোল পেয়ে যেতেন বিদ্যাসাগর সিংহ। কিন্তু তিনি তা পারেননি। সেই বল ধরেই ব্রেন্ডন মাইনাস করলে বাঁ পায়ে ১-০ করেন ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক।

ডার্বির আগে ৩-০ জয়। স্বভাবতই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর লাল-হলুদ শিবির। আলেসান্দ্রো বলছেন, ‘‘এই মাঠে খেলা কঠিন কাজ। সেখানে ৩-০ জয় আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে। আরও গোল হতে পারত। কিন্তু এটা তো বাস্কেটবল নয়। এই জয়ের পরে কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না।’’ কোলাদোর দুরন্ত ছন্দের পাশে লাল-হলুদের প্রাপ্তি রক্ষণ থেকে বাড়ানো মার্কি ক্রেসপির অনবদ্য সব থ্রু, মনোজ মহম্মদের ওভারল্যাপও।

বোঝাই যাচ্ছে ডার্বির আগে আত্মবিশ্বাসে চনমনে ইস্টবেঙ্গল।

ইস্টবেঙ্গল: লালথুম্মেউইয়া রালতে, সামাদ আলি, মার্তি ক্রেসপি, আসির আখতার, মনোজ মহম্মদ, ব্রেন্ডন (কমলপ্রীত সিংহ), কাশিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে, খাইমে সান্তোস কোলাদো, বৈথাং হাওকিপ (রোনাল্ডো অলিভিয়েরা), বিদ্যাসাগর সিংহ (অভিষেক আম্বেকর)।

Football Jaime Santos Colado East Bengal Aryan F.C. CFL 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy