সফল খেলোয়াড়দের চাকরি দিতে নতুন আইন আনছে রাজ্য, ‘খেলাশ্রী’ প্রকল্পের উদ্বোধনে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের দীর্ঘ দিনের বঞ্চনার অভিযোগ এ বার শেষ হতে চলেছে। উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে পদকজয়ী রাজ্যের ক্রীড়াবিদদের চাকরি দিতে নতুন আইন আনার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। আগ্রহী ক্রীড়াবিদেরা সরাসরি যোগ করতে পারবেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দফতরে।

বৃহস্পতিবার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে রাজ্যের ৩২২ জন সফল ক্রীড়াবিদকে পুরস্কৃত করল রাজ্য সরকার। ৭২ জন খেলোয়াড় বা তাঁদের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন মমতা। গত দু’টি জাতীয় গেমস, ২০২২ সালের প্যারা জাতীয় গেমস এবং গত বছরের এশিয়ান গেমসে পদক জয়ী রাজ্যের খেলোয়াড়েরা পুরস্কৃত হলেন এ দিন। পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় ছিলেন রিচা ঘোষ, তিতাস সাধু, মুকেশ কুমার, অতনু দাস, অনুষ আগরওয়াল, প্রণতী দাস, মৌমা দাস, সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, ঐহিকা মুখোপাধ্যায়দের মতো ক্রীড়াবিদেরা। পুরস্কৃত হল বাংলার ফুটবল দলও।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করলেন খেলাশ্রী প্রকল্পের। রাজ্যের এই নতুন প্রকল্পে প্রাক্তন ক্রীড়াবিদেরা মাসিক ১০০০ টাকা করে সম্মানিক ভাতা পাবেন। প্রথম দফাতেই ১৫৬৭জন প্রাক্তন খেলোয়াড়কে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে মাসিক ভাতা পাবেন তাঁরা।

পুরস্কার প্রদানের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জঙ্গলমহল কাপ, সৈকত কাপ, রাঙামাটি কাপ, সুন্দরবন কাপ, হিমাল তরাই-ডুয়ার্স কাপ-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আমরা করি। যারা রানার্স আর চ্যাম্পিয়ন হয়, তাদের আমরা পুলিশে চাকরি দিই। ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় ৪৩০০ জন খেলোয়াড়কে চাকরি দিয়েছি।’’ এ প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘‘যাঁরা পুরস্কার পেলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ যদি মনে করেন চাকরি করতে ইচ্ছুক, আমি তাঁদের বলব তাঁদের বায়োডেটা অরূপ বিশ্বাসের হাতে দিয়ে দিন। কারণ আমি চাই আমাদের স্পোর্টসের ছেলে-মেয়েদের কেরিয়ার থাকলে কেরিয়ার তৈরি করবে। যারা সোনা, রুপো বা ব্রোঞ্জ বিজয়ী তারা সরকারি চাকরি পাবে। আমরা একটা বিশেষ ব্যবস্থা করে, নতুন আইন করে তার মধ্যে দিয়ে আপনাদের নিয়ে আসব। আমি মুখ্যসচিবকে আগেই বলেছি, কাগজপত্র তৈরি করতে। আপনারা সব সময় স্বাগত।’’ এর পর তিনি ক্রীড়ামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘‘আজকে যাঁরা পুরস্কার পেলেন বা ভবিষ্যতে যাঁরা পাবেন, তাঁদের জন্য ক্রীড়া দফতরে একটা ডেস্ক রাখতে। যাতে খেলোয়াড়েরা কাউকে না খুঁজে, বিভ্রান্ত না হয়ে তাদের বায়োডেটা সেখানে জমা দিতে পারে।’’

বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে মোট ৬ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ৩২২ জন ক্রীড়াবিদকে। তিরন্দাজি, শুটিং, হকি, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, ফুটবল-সহ বিভিন্ন খেলার অ্যাকাডেমি তৈরির কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।