Advertisement
E-Paper

ভারতীয় ক্রিকেটে ‘শান্ত’ আর ‘শয়তান’-এর বন্ধুত্ব! কে শান্ত, কে শয়তান?

অভিষেক শর্মা এবং শুভমন গিল ছোটবেলা থেকেই একে অপরের বন্ধু। পঞ্জাবের হয়ে একসঙ্গে বহু ম্যাচ খেলেছেন। এ বার ভারতের হয়ে সফল হওয়ার পালা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৩১
cricket

শুভমন গিল (বাঁ দিকে) এবং অভিষেক শর্মা। — ফাইল চিত্র।

শুভমন গিল এবং অভিষেক শর্মার একটি পুরনো ভিডিয়ো ইন্টারনেটে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। সমাজমাধ্যমের লাইভে শুভমনকে অভিষেক প্রশ্ন করেছিলেন, “সমর্থকেরা জিজ্ঞাসা করছে, তোমার বান্ধবী কে?” শুভমন বলতে থাকেন, “তোমার কথা শুনতে পাচ্ছি না।” অভিষেক ব্যঙ্গ করে বলেন, “হ্যাঁ, এখন তো কোনও আওয়াজই তোমার কানে যাবে না।”

টুকরো এই কথোপকথনই প্রমাণ করে দেয় দু’জনের সম্পর্ক কতটা গাঢ়। পঞ্জাবের এই দুই ছেলে যে এক দিন ভারতের হয়ে খেলবেন, তা অনেক আগেই বলেছিলেন কপিল দেবের প্রয়াত কোচ। সেটাই সত্যি হয়েছে। শুভমন তো অধিনায়কও হয়ে গিয়েছেন। এশিয়া কাপে ভারতের ওপেনার হিসাবে যাঁদের দেখা যাবে, সেই শুভমন এবং অভিষেকের বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকেই। এখন অপেক্ষা মাঠেও এই বন্ধুত্ব দেখানোর।

অনূর্ধ্ব-১৪ থেকে এই দু’জনকে একসঙ্গে দেখছেন পঞ্জাবের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা কোচ অরুণ বেদি। তিনি ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে বলেছেন, “একজন শান্ত, আর একজন শয়তান।” অনূর্ধ্ব-১৪ থেকেই ওপেন করছেন অভিষেক-শুভমন। সেই সময়ের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন অরুণ।

তাঁর কথায়, “তখন অনূর্ধ্ব-১৪ ক্রিকেটারদের নিয়ে ধ্রুব পাণ্ডব ট্রফি হত। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য খেলত। প্রথম বার আমার কোচিংয়ে ওরা ওই ট্রফিতে খেলে। অভিষেক অধিনায়ক, শুভমন সহ-অধিনায়ক ছিল। আমরা ফাইনালে দিল্লিকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিলাম। হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে লিগের একটা ম্যাচের কথা মনে পড়ছে। দু’দিনের ম্যাচ ছিল। দ্বিতীয় দিন চা-বিরতির সময় হিমাচল ১০ রানে এগিয়ে ছিল, হাতে পাঁচ-ছ’টা উইকেটও ছিল। আমি সাজঘরে বলছিলাম, ‘আজ হেরে যাব’। ওরা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে বলেছিল, ‘কেন হেরে যাব’?”

তার পরের কথা মনে পড়লে এখনও হাসি পায় অরুণের। বলেছেন, “চা-বিরতির পর প্রথম ওভারেই উইকেট নিল অভিষেক। সতীর্থদের তাতিয়ে দিয়ে আগ্রাসী ফিল্ডিং করল। আমরা হিমাচলের বাকি উইকেটগুলোও ফেলে দিলাম। ১০ ওভারে ৯০ রানের মতো তুলতে হত। সেটাও অনায়াসে তুলে দিল ওরা।”

সেই ম্যাচের পর অরুণ ডেকে পাঠিয়েছিলেন লখবিন্দর গিল এবং রাজকুমার শর্মাকে, যাঁরা শুভমন এবং অভিষেকের বাবা। বলেছিলেন, এক দিন তাঁদের ছেলেরা ভারতের হয়ে খেলবে। সেটাই পরে সত্যি হয়। এই কথা বলেছিলেন কপিলের প্রয়াত কোচ দেশপ্রেম আজ়াদও। তিনি এক দিন বলেছিলেন, “পঞ্জাব থেকে দুটো ছেলে এক দিন ভারতের হয়ে খেলবে। তারা হল অভিষেক এবং শুভমন। দু’জনেই অধিনায়ক হবে। যখনই ওদের দেখি, কিছু একটা অসাধারণ ব্যাপার দেখতে পাই।”

ওপেন করা ছাড়াও অভিষেক এবং শুভমন একে অপরকে মাঠের বাইরে ভাল চেনেন। শুভমনের ব্যাটের প্রতি অভিষেকের দুর্বলতার কথা কারও অজানা নয়। এক সাক্ষাৎকারে শুভমন জানিয়েছিলেন, কী ভাবে এই ব্যাট নিয়ে অভিষেকের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়েছিল। শুভমন বলেছিলেন, “অনূর্ধ্ব-১৬ খেলার সময় থেকে এটা চলছে। অভিষেক আমার ব্যাটে খেলত। একটা ম্যাচে ৮০-৯০ রানে ব্যাট করছিল। আমি চাইনি ব্যাটটা ভেঙে যাক। তাই ওকে ফিরিয়ে দিতে বলেছিলাম। সেটা নিয়ে বড় ঝগড়া হয়। তার পরে ও যত বার আমার ব্যাট চেয়েছে, ওকে দিয়েছি। সেই ব্যাট দিয়ে অনেক রান করেছে।”

অরুণ উল্লেখ করেছেন আরও একটি কথা। বলেছেন, “শুভমন আমাকে এক বার বলেছিল, ‘স্যর, অভিষেকের অর্ধেক রান আমার নামে হওয়া উচিত। ও তো নিজের ব্যাটে রানই করতে পারে না’।”

অনূর্ধ্ব-১৪ থেকে অভিষেক আর শুভমন রুমমেট। ম্যাচের আগের দিন পিৎজ়‌া খাওয়াও রীতিতে পরিণত হয়েছিল। শুভমন নিজেও বলেছিলেন, “ওটা একটা কুসংস্কার ছিল। পিৎজ়‌া খাও, রান বানাও, এটাই আমাদের মন্ত্র ছিল।”

Shubman Gill Abhishek Sharma Asia Cup 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy