বাংলাদেশের মহিলা দলের প্রাক্তন নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা-সহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ করেছেন জাহানারা আলম। মহিলা দলের প্রাক্তন অধিনায়কের অভিযোগ ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। তা নিয়ে বাংলাদেশের একটি ইউটিউব চ্যানেল এবং দৈনিক পত্রিকা ‘প্রথম আলো’ যোগাযোগ করে মঞ্জুরুলের সঙ্গে। তাঁর দাবি, জাহানার সব অভিযোগ মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন।
জাহানারা আপনার বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে আপনার ব্যাখ্যা কী? মঞ্জুরুল বলেছেন, ‘‘প্রথমেই বলতে চাই জাহানারা আলমকে আমি শ্রদ্ধার চোখে দেখি। উনি দীর্ঘ দিন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেবা করেছেন। দীর্ঘ দিন জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। কিন্তু উনি যে অভিযোগগুলো করছেন, সেগুলোর সত্যতা কতটুকু? অভিযোগ উনি করতেই পারেন। আমিও করতে পারি। কিন্তু কতটা সত্যি সেটা জানা দরকার। এটা গুরুত্বপূর্ণ। যখনকার কথা বলে হচ্ছে, তখন আমি দলের সঙ্গেই ছিলাম। তখন কেন বলা হয়নি? তখন তো কোনও অভিযোগ করা হয়নি। চাইলে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার কাছেও অভিযোগ করতে পারতেন।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড অত্যন্ত পেশাদার সংস্থা। জাহানারার মতো খেলোয়াড়, অধিনায়ক কোনও অভিযোগ করলে বোর্ড নিশ্চই পদক্ষেপ করত। ক্রিকেটারদের রক্ষা করার দায়িত্ব বোর্ডের। বোর্ড সব সময় ক্রিকেটারদের পাশে থাকে।’’
ঋতুস্রাব নিয়ে জাহানারাকে কখনও কিছু জিজ্ঞেস করেছেন? মঞ্জুরুল বলেছেন, ‘‘একদমই না। কোথায় বলেছি, কবে বলেছি? প্রমাণ কোথায়? তেমন কিছু হলে ওঁর সতীর্থদের কেউ তো জানবে। তাঁরা বলুন।’’ আপনি নাকি খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেওয়ার নামে জড়িয়ে ধরতেন, শরীরের বিভিন্ন জায়গা স্পর্শ করতেন? এই অভিযোগও মানতে চাননি বাংলাদেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার। পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, ‘‘যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি আমি। যে কোনও সময় বাংলাদেশে গিয়ে কথা বলতে পারি। যখন বলা হবে, তখনই যাব। তদন্ত কমিটি আমাকে যা বলবে, তাই করব।’’ তাঁর আরও দাবি, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও তাঁকে যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে কখনও কিছু বলেনি।
তা হলে কেন এমন অভিযোগ উঠছে আপনার বিরুদ্ধে? মঞ্জুরুল বলেছেন, ‘‘আমার জানা নেই। শৃঙ্খলা এবং নিয়মের ব্যাপারে খুব কঠোর ছিলাম। সেটাই বোধহয় মূল সমস্যা ছিল। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও কঠোর থাকতাম। কারণ বাইরের কিছু খেলে ক্রিকেটারদেরই ক্ষতি। এটা যদি খারাপ কাজ হয়, তার জন্য যদি আমার শাস্তি হয়, তা হলে আমার কোনও আপত্তি নেই। হতে পারে দলে জায়গা না পাওয়ার হতাশা।’’ মঞ্জুরুল জানিয়েছেন, তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলেও কারও বিরুদ্ধে মানহানির মামলা বা কোনও আইনি পদক্ষেপ করবেন না।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের হয়ে ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত ১৭টি টেস্ট এবং ৩৪টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন মঞ্জুরুল। তিনি এখন চিনের মহিলা ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ।