বুধবার দিল্লির বিরুদ্ধে রাজস্থানের খেলা গড়িয়েছিল সুপার ওভারে। আগে ব্যাট করে ১১ রানের বেশি তুলতে পারেনি রাজস্থান, যা দিল্লি তুলে দেয় সহজেই। ভুল পরিকল্পনার কারণেই কি সুপার ওভারে হারতে হল রাজস্থানকে? ম্যাচের পর উঠছে প্রশ্ন।
দিল্লির হয়ে ২০তম ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ম্যাচ ‘টাই’ করে দিয়েছিলেন মিচেল স্টার্ক। তিনিই সুপার ওভারে বল করতে আসেন। রাজস্থান নামায় শিমরন হেটমায়ার এবং রিয়ান পরাগকে। মূলত বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশনের কথা ভেবেই। তৃতীয় ব্যাটার রাখা হয়েছিল যশস্বী জয়সওয়ালকে। চতুর্থ এবং পঞ্চম বলে রান আউট হন পরাগ এবং যশস্বী। সন্দীপ শর্মার চার বলেই দিল্লির জয়ের রান তুলে দেন কেএল রাহুল এবং ট্রিস্টান স্টাবস।
ম্যাচে ভাল খেলেছিলেন রাজস্থানের নীতীশ রানা। ২৮ বলে ৫১ রান করেছিলেন। তাঁকেই কি সুপার ওভারে নামানো উচিত ছিল না? চেতেশ্বর পুজারার মতে, নীতীশ থাকলে রাজস্থান আরও রান তুলতে পারত। তিনি বলেছেন, “নীতীশকে তিনে নামানো উচিত ছিল। তবে শুরুতেই ওকে নামানো উচিত ছিল কি না জানি না। আমার মনে হয় যশস্বীকে প্রথমে নামানো দরকার ছিল। একমাত্র কারণ স্টার্কের বিরুদ্ধে ওর রেকর্ড। সব ফরম্যাটে ভাল খেলে স্টার্ককে।” উল্লেখ্য, টি-টোয়েন্টিতে স্টার্কের ১৫ বলে ২৬ রান রয়েছে যশস্বীর। এক বারও আউট হননি। টেস্টে তিন বার আউট হলেও ২০৩ বলে ১৩৩ রান করেছেন।
পুজারার সংযোজন, “জানি সুপার ওভার ছিল এবং স্টার্ক ইয়র্কার দেওয়ার পরিকল্পনা করেই নেমেছিল। মানসিক ভাবেও এগিয়ে ছিল। তবে যশস্বী কয়েকটা বল খেললে স্টার্কও চাপে পড়ে যেত।”
একই কথা বলেছেন আর এক বিশেষজ্ঞ ইয়ান বিশপও। তাঁর কথায়, “যশস্বীকেই শুরুতে খেলানো দরকার ছিল। আমি নীতীশের প্রতিও একটু পক্ষপাতদুষ্ট। রানার ক্ষেত্রে শক্তি কাজে লাগিয়ে শট আশা করি না। তবে ওর ছোটখাটো চালাকিগুলো কাজে লেগে যেতে পারত।”
হেটমায়ারকে নামাতে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দিল্লির অধিনায়ক অক্ষর পটেলও। বলেছেন, “হেটমায়ারের তো ম্যাচেই ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। আমি ভেবেছিলাম যশস্বী আর রিয়ান খেলতে নামবে। যা-ই হোক, আমাদেরই সুবিধা হয়েছে।”
স্টার্ক সাধারণত বাঁহাতিদের বিরুদ্ধে ভাল বল করেন। তিনিও অবাক রাজস্থানের পরিকল্পনা দেখে। বলেছেন, “আমার বল ভিতর দিকে ঢুকছে দেখেও কেন ওরা বাঁহাতি ব্যাটারদের নামাল বুঝলাম না। একটা নো বল করে ভুল করেছি। কিন্তু আমার দলের ব্যাটিং গভীরতা যা, তাতে রানটা তুলে দেওয়া কঠিন ছিল না।”
নীতীশকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “দল পরিচালন সমিতি, অধিনায়ক এবং সিনিয়র ক্রিকেটারেরাই এটা ঠিক করে। আমার মনে হয় সঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। হেটমায়ার দুটো ছয় মারলে এত প্রশ্ন উঠতই না। হেটমায়ার আমাদের দলের ফিনিশার এবং আগেও সেটা করে দেখিয়েছে।”
আরও পড়ুন:
নীতীশের সংযোজন, “আমরা একটা বড় শট খেলতে পারিনি। চেয়েছিলাম সুপার ওভারে ১৫ রান তুলতে। কারণ, রান তাড়া করতে নামলে বিপক্ষ দল একটা উইকেট হারালেই চাপে পড়বে। তবে স্টার্কের প্রশংসা প্রাপ্য। বহু দিন বাদে আইপিএলে এমন ডেথ বোলিং দেখলাম।”
সন্দীর শর্মার মতো মিডিয়াম পেসারের জায়গায় রাজস্থান কি জফ্রা আর্চারকে দিয়ে বল করাতে পারত না? নীতীশের উত্তর, “স্যান্ডি তো এর আগেও আমাদের হয়ে এমন ওভার করেছে। এই পরিস্থিতিতে বল করার জন্য ও-ই সেরা বিকল্প ছিল বলে মনে করি।”