দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের কাছে ৩৩৬ রানে হার হজম হচ্ছে না ইংল্যান্ড শিবিরের। এজবাস্টনের পিচকে দোষ দিচ্ছেন ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। টস জেতার পর প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তও তাঁদের বিপক্ষে গিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। মেনে নিয়েছেন, টেস্টের অধিকাংশ সময়ই তাঁর দল সুবিধাজনক জায়গায় ছিল না।
এজবাস্টনে হারের পর লর্ডসে মশালাদার পিচ চাইছেন ম্যাকালাম। এজবাস্টনের যে ২২ গজে দ্বিতীয় টেস্ট হয়েছে, তার চরিত্র ভারতীয় উপমহাদেশের মতো ছিল বলে মনে করেন তিনি। ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমকে ম্যাকালাম বলেছেন, ‘‘পিচে আরও গতি, বাউন্স চাই আমরা। বল আর একটু বেশি সুইং করলেও সমস্যা নেই। আশা করি তেমন পিচই পাব।’’ প্রাণবন্ত পিচে টেস্ট খেলতে চান ম্যাকালাম। পিচ নিয়ে নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এজবাস্টনে পিচ তাঁকে খুশি করেনি বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। ইংল্যান্ড কোচের বক্তব্য, ‘‘আমরা পিচ ঠিক মতো বুঝতে পারিনি। তাই প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দেখে মনে হয়েছিল, খেলা যত এগোবে পিচ ভাল হবে। বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের ভুল ছিল। পরে দেখলাম, পিচটা অনেকটা উপমহাদেশের মতো ছিল। তবে ভারত অসাধারণ খেলেছে। ব্যাটিংও ভাল হয়েছে ভারতের। বিশেষ করে শুভমন গিল অনবদ্য খেলল। সর্বোচ্চ মানের ব্যাটিং করেছে শুভমন।’’ ভারতের বোলারদেরও প্রশংসা করেছেন ম্যাকালাম। তিনি বলেছেন, ‘‘ওদের বোলারেরা দারুণ পারফর্ম করেছে। বিশেষ করে আকাশদীপ। ওরা এই ধরনের পিচে খেলে বড় হয়। এ রকম পিচে একটু বড় লেংথে বল করতে হয়। আমাদের সাধারণ বোলিংও ভারতকে সুযোগ করে দিয়েছে। পরের দিকে পিচে তৈরি হওয়া ক্ষতের সুবিধাও পেয়েছে ভারত। আমাদের প্রথম বল করার সিদ্ধান্তটাই ভুল ছিল।’’
এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের হার নিয়ে ম্যাকালাম আরও বলেছেন, ‘‘পিচ বোঝা ছাড়াও আরও কিছু ভুল হয়েছে আমাদের। একটা সময় ২০০ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল ভারতের। আমরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। টস জিতে প্রথমে বল করলে, আশা থাকে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে পারবে বোলারেরা। কখনও আমরা ভাবি না প্রতিপক্ষ প্রায় ৫৮০ রান করে দেবে। ওদের প্রথম ইনিংস শেষ হওয়ার পরই আমরা পিছিয়ে পড়েছিলাম ম্যাচে। আমরাই সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আকাশদীপ তো থাকছেই। পরের টেস্টে জসপ্রীত বুমরাহও খেলবে। তাই আমাদের আরও ভাল প্রস্তুতি নিতে হবে। আরও ভাল পরিকল্পনা প্রয়োজন। পরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সম্পূর্ণ তৈরি থাকতে হবে। মনে হয় একটু অন্য রকম লড়াই হবে লর্ডসে। আশাকরি, পিচও আমাদের জন্য ভাল হবে।’’
লর্ডসের প্রধান পিচ প্রস্তুতকারক কার্ল ম্যাকডারমটের সঙ্গে কথা বলেছেন ম্যাকালাম এবং ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। ঠিক কেমন পিচ তাঁরা চাইছেন, তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ম্যাকডারমট বলেছেন, ‘‘গত মাসে টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালের আগেও পিচ নিয়ে অনুরোধ এসেছিল। প্যাট কামিন্স, কাগিসো রাবাডারা এমন পিচ চেয়েছিল, যেখানে বল সিমে পড়ে নড়াচড়া করবে।’’
ম্যাকালামের গতি এবং বাউন্স সম্পন্ন পিচ চাওয়ার নেপথ্যে সম্ভবত রয়েছে অন্য পরিকল্পনা। ভারত-ইংল্যান্ড তৃতীয় টেস্টে খেলতে পারেন জফ্রা আর্চার। তাঁর বলের গতি কাজে লাগানোর কথা ভাবছেন ম্যাকালাম। আর্চারের সম্ভাবনা নিয়ে ইংল্যান্ড কোচ বলেছেন, ‘‘আর্চারকে সম্ভবত পাওয়া যাবে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আর্চারকে দেখে বেশ ফিট মনে হচ্ছে। শক্তিশালী মনে হচ্ছে। খেলার জন্য এক দম তৈরি। আমাদের পরিকল্পনায় অবশ্যই আর্চার আছে। আমরা খুব উত্তেজিত। আর্চারও ছটফট করছে খেলার জন্য। দীর্ঘ সময় চোট-আঘাতে ভুগেছে। অনেক দিন টেস্ট খেলতে পারেনি। তবে ও কী করতে পারে, আমরা জানি। আমরা নিশ্চিত ও সুযোগ কাজে লাগাবে।’’ উল্লেখ্য, ২০২১ সালের পর টেস্ট খেলেননি আর্চার। ম্যাকালামের আশা, সিরিজ়ের পরের দিকে গাস অ্যাটকিনসনকেও পাওয়া যাবে।