দক্ষিণ আফ্রিকা রওনা হওয়ার আগে কেউ যদি বলত, টেস্ট আর ওয়ান ডে হেরে আসবে ভারত, কেউ বিশ্বাস করত! এই দক্ষিণ আফ্রিকা দল, যাদের নেই কোনও জাক কালিস বা গ্রেম স্মিথ। অথবা এ বি ডিভিলিয়ার্স বা হাসিম আমলা। বা ডেল স্টেন। বাস্তবে কিন্তু সেটাই দেখতে হল। টেস্ট সিরিজ়ে হারের পরে ওয়ান ডে সিরিজেও উড়ে গেল ভারত। পার্লে দ্বিতীয় ম্যাচে শুক্রবার ২৮৮ রানের লক্ষ্য যে ভাবে মাত্র তিন উইকেটে তুলে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা, তা সত্যিই অপ্রত্যাশিত।
যেটুকু যা লড়াই হল, তা-ও ঋষভ পন্থ, শার্দূল ঠাকুর আর শেষের দিকের ব্যাটসম্যানদের অবদানের জন্য। পন্থকে চার নম্বরে তুলে আনার সিদ্ধান্তটা দারুণ কাজ করল। আর ও বুঝিয়ে দিয়ে গেল, আগামীর রাস্তায় মাস্টারস্ট্রোক হতে পারে এই সিদ্ধান্ত। ৭১ বলে ৮৫ করে শামসির বলে আউট হওয়ার সময় অবশ্য ভীষণই হতাশ দেখাল ওকে। হওয়ারই কথা। শামসির সঙ্গে বেশ উত্তেজনাপূর্ণ দ্বৈরথ হচ্ছিল পন্থের। দু’এক বার শামসি এসে কথা বলে ওকে উত্যক্ত করার চেষ্টাও করল। আর সেই ফাঁদে পা দিল পন্থ। মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ গিয়ে গেল। গত এক বছরে ভারতের সেরা প্রাপ্তি শার্দূল ঠাকুর। ওর অলরাউন্ড দক্ষতা উতরে দিয়ে যাচ্ছে অনেক ম্যাচে। কী টেস্টে, কী সীমিত ওভারের ক্রিকেটে! শুক্রবারও ৩৮ বলে ৪০ নট আউট আর সঙ্গে কুইন্টন ডি’ককের উইকেট। অসমাপ্ত সপ্তম উইকেটে অশ্বিনের সঙ্গে ৪৮ রান যোগ করে লড়াকু স্কোরে নিয়ে যায় শার্দূলই। কিন্তু হায়, বোলিংয়ের সময় সেই লড়াইটাই দেখা গেল না।
এক জন অধিনায়কের সব চেয়ে বড় প্রভাব দেখা যায়, য়খন তার দল ফিল্ডিং করে। অধিনায়ক বিরাটকে ছাড়া বোলিংয়ের সময় নিষ্প্রাণ দেখাচ্ছে দলকে। দক্ষিণ আফ্রিকার সব ব্যাটসম্যানই রান করে গেল। ওপেনিং জুটিতে কুইন্টন (৭৮) এবং ইয়ানেমন মালান (৯১) তুলে দিয়ে গেল ১৩২। ওখানেই ম্যাচের ভাগ্য মোটামুটি নির্ধারণ হয়ে যায়। কে এল রাহুলের মধ্যে জুটি ভাঙার জন্য সেই ছটফটানিটাই দেখা গেল না। ওকে দেখে সেই সব অধিনায়কের কথা মনে পড়ছে যারা বোলারদের হাতে বল তুলে দিয়ে স্লিপে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে, কখন ব্যাটসম্যান ভুল করবে!