ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের মাঝে স্থগিত হয়ে যাচ্ছে আইপিএল। বৃহস্পতিবার আইপিএলের ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আইপিএল আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হবে।
এর আগে ভারতে লোকসভা নির্বাচন এমনকি করোনার সময়েও আইপিএল বন্ধ হয়নি। নির্বাচনের কারণে ২০০৯ সালে আইপিএল হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। করোনার সময় ২০২০ সালে আইপিএল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ২০২১ সালে মুম্বইয়ের বিভিন্ন মাঠে আইপিএলের একটি পর্ব হয়। পরে তা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আমিরশাহিতে। কিন্তু ভারত-পাক সংঘাতের মাঝে স্থগিত হয়ে যাচ্ছে আইপিএল।
একেবারেই প্রাথমিক স্তরে অনুমান, এই বছরই সেপ্টেম্বরে বাকি প্রতিযোগিতা হতে পারে। অগস্টের শেষ দিকে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ় ছিল। সেই সিরিজ় হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই প্রতিযোগিতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। বোর্ড সেই সময়টা আইপিএল আয়োজন করার জন্য কাজে লাগাতে পারে। যদিও এখনও পর্যন্ত সে বিষয়ে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কোনও আলোচনা হয়নি। বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য দেশগুলির বোর্ডের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। সেই সময় সব দেশের ক্রিকেটসূচি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আপাতত আইপিএল স্থগিত করা হচ্ছে।
আইপিএলের সূত্র থেকে যা জানা গেল, নিরাপত্তার কারণে তো বটেই, মানবিক কারণেও আইপিএল স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে। জানা গেল, বৈঠকে এরকম আলোচনা হয়েছে, যেখানে ভারত-পাক সংঘর্ষ হচ্ছে, সেখানে আইপিএলের মতো বিনোদন এই মুহূর্তে অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। এক দিকে ভারতীয় সেনা যখন লড়াই করছে, তখন অন্য দিকে আইপিএলের মঞ্চে ডিজে বাজছে, চিয়ারলিডারেরা নাচছেন— এটা একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়। ফলে, প্রতিযোগিতা স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে খুব বেশি ভাবতে হয়নি।
আইপিএলে এখনও লিগ পর্বে ১২টি ম্যাচ বাকি। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার পঞ্জাব-দিল্লি ম্যাচটি বাতিল হলেও তার পয়েন্ট ভাগ করে দেওয়া হয়নি। বোর্ড যদি পরে আইপিএল আবার আয়োজন করে, তা হলে এই ম্যাচটিও হতে পারে। সেই সঙ্গে প্লে-অফের চারটি ম্যাচ রয়েছে। কলকাতায় কোয়ালিফায়ার ২ এবং ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল।
বৃহস্পতিবার আইপিএলের ম্যাচের মাঝেই জম্মুতে শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের হামলা। প্রত্যাঘাত করেছিল ভারতও। সংঘর্ষের কারণে ধর্মশালায় পঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। দর্শকদের মাঠ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল। আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল নিজে মাঠে নেমে দর্শকদের মাঠ ছাড়ার কথা বলেছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে পর পর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে জম্মুতে। আখনুর, সাম্বার মতো জায়গায় সাইরেন বাজছে। পাকিস্তানের দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপার থেকে একাধিক রকেট উড়ে আসতে দেখা গিয়েছে। সম্পূর্ণ ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়েছে এলাকায়। অর্থাৎ, গোটা এলাকার আলো বন্ধ। সূত্রের খবর, ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাক হামলা প্রতিহত করতে সক্রিয় হয়েছে। জম্মুর পাশাপাশি পঞ্জাব, রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকাতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে।