পঞ্জাব কিংসের হয়ে ২০২৩ আইপিএলে ৩০৯ রান করে চর্চায় উঠে এসেছিলেন জিতেশ শর্মা। সুযোগ পেয়েছিলেন ভারতের টি-টোয়েন্টি দলেও। কিন্তু সাত ইনিংসে মাত্র ১০০ রান করায় নিজের জায়গা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন।
ভাগ্যের চাকা ঘুরল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে যোগ দেওয়ার পরে। লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে মাত্র ৩৩ বলে তাঁর অপরাজিত ৮৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস নজর কাড়ে নির্বাচকদের। এমনকি ফাইনালে তাঁর প্রাক্তন দল পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ১০ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে আরসিবিকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। ২০২৫ আইপিএলে ১৫ ম্যাচে ২৬১ রান করায় এশিয়া কাপের দলে নেওয়া হল জিতেশকে। শেষ আইপিএলে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৭৬.৩৫। নির্বাচকেরা তাঁকে ফের সুযোগ দিয়েছেন দেশের জার্সিতে নিজেকে প্রমাণ করার।
জিতেশ বর্তমানে বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির সেন্টার অব এক্সিলেন্সে আছেন। এশিয়া কাপের জন্য নিজেকে তৈরি করছেন। চলতি সপ্তাহেই বেঙ্গালুরু উড়ে গিয়েছেন জিতেশ। তার আগে ছোটবেলার কোচ দিনানাথ নাওয়াঠের কাছে অনুশীলন করছিলেন তিনি। তাঁর কোচের কাছ থেকে জানা গেল বহু মূল্যবান তথ্য। অন্যতম, বিরাট কোহলির মন্ত্রে উন্নতি।
আনন্দবাজারকে নাওয়াঠে বলছিলেন, ‘‘আরসিবির হয়ে খেলার পর থেকে ওর মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখতে পেয়েছি। বিরাট কোহলি, জশ হেজ়লউডদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ব্যবহার করত। সেখান থেকে অনেক কিছু শিখেছে।’’ জিতেশের কোচ জানালেন, মাঝে মধ্যেই বিরাটের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা হয় জিতেশের। কোচের কথায়, ‘‘বিরাট নিজেও অনেক সময় ওকে ফোন করে। গত মাসেই লন্ডন গিয়েছিল জিতেশ। তখনও বিরাটের সঙ্গে দেখা করেছিল। কয়েক দিন আগেও বিরাটের কাছে বেশ কিছু পরামর্শ চেয়েছিল জিতেশ। যেমন কভারের উপর দিয়ে শট খেলতে বেশ সমস্যা হত জিতেশের। বিরাটের কাছে জানতে চেয়েছিল, কী করলে এই শটের উপরে নিয়ন্ত্রণ আসে। বিরাট ওকে বলেছিল, বলের দিকে কাঁধ নিয়ে যেতে। তা হলে অনায়াসে ব্যাটওসেই দিকেই যাবে।’’
জিতেশের কোচ আরও বলছিলেন, ‘‘ফিনিশারের ভূমিকাই পালন করে জিতেশ। বেশির ভাগ সময়ই ম্যাচ জেতাতে তাড়াহুড়ো করত। নিজের জন্য ও খেলে না। ম্যাচ জেতাতেও ধৈর্য লাগে। টি-টোয়েন্টি হলেও সব বলে তো আর শট খেলা যায় না। বিরাট ওকে বুঝিয়েছিল ধৈর্য বাড়াতে। বিরাটের কথা মেনে জিতেশ বল বেছে ছক্কা হাঁকাতে শিখেছে। এশিয়া কাপে যা সত্যি কাজে লাগবে।’’
বিদর্ভের হয়ে এত দিন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতেন জিতেশ। কিন্তু এ বার তিনি খেলবেন বরোদার হয়ে। আরসিবির প্রথম একাদশে খেললেও বিদর্ভের প্রথম একাদশে তিনি সুযোগ পেতেন না। তাই এই পরিবর্তন। যদিও আইপিএলের পরে বিদর্ভ প্রিমিয়ার লিগখেলেছেন জিতেশ। সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন নেকো মাস্টার ব্লাস্টার দলকে। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচে অর্ধশতরান করে তাদের চ্যাম্পিয়ন করেন জিতেশ। সেই আত্মবিশ্বাসও কাজে লাগাতে পারবেন এশিয়া কাপে। তাঁর কোচের কথায়, ‘‘যেখানেই খেলছে রান করছে। ওকে আটকানো খুব কঠিন। মাঠের যে কোনও প্রান্তে শট খেলতে পারে। স্কুপ ও রিভার্স স্কুপ ওর অন্যতম প্রিয় শট। অনায়াসে এই শটগুলো খেলতে পারে। এশিয়া কাপের আগে আরও পোক্ত করে নিচ্ছে এই শটগুলো।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)