পরের বছর আইপিএলে বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) কোন মাঠে খেলবে তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। এ বছর পদপিষ্টের ঘটনার পর থেকেই সেই মাঠে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ বন্ধ। অবশেষে স্বস্তি মিলল। বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামেই আরসিবি নিজেদের হোম ম্যাচ খেলতে পারবে। জানিয়ে দিল কর্নাটকের মন্ত্রিসভা। তবে মানতে হবে একটি শর্ত।
কর্নাটকের মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার দিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে। তারা স্পষ্ট জানিয়েছে, ডি’কুনহা কমিশনের প্রস্তাব পুরোপুরি মানলে তবেই চিন্নাস্বামীতে ম্যাচ আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হবে।
সিদ্ধান্তের পর কর্নাটকের উপ মুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার বলেন, “আমরা আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। ইতিবাচক আছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরকে বলেছি ওদের (কর্নাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কর্তা) সঙ্গে বৈঠক করতে। উনি ক্রিকেট কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তার পর উনিই সিদ্ধান্ত জানাবেন।”
শিবকুমার স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিচারপতি জন মাইকেল ডি’কুনহার রিপোর্টে দেওয়া প্রস্তাব অবশ্যই মানতে হবে রাজ্য সংস্থাকে। তাঁর কথায়, “ফলাফল নিয়ে আমরা ইতিবাচক। বরাবরই চাই এ রাজ্যে হোক আইপিএলের ম্যাচ। আগে যা হয়েছে ঠিক হয়নি। কিন্তু বেঙ্গালুরুর গর্বে দাগ লাগুক এটা কখনওই চাই না।”
গত ৭ ডিসেম্বর কর্নাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় ভোট দেওয়ার পর শিবকুমার বলেছিলেন, “কর্নাটক, বিশেষ করে বেঙ্গালুরুতে আগামী দিনে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে চাই আমরা। ভবিষ্যতে কেএসসিএ স্টেডিয়ামে বিভিন্ন অনুষ্ঠান এমন ভাবে আয়োজন করতে চাই, যা বেঙ্গালুরুকে গর্বিত করে তুলবে। সেই অনুষ্ঠান ঠিকঠাক ভাবে, আইন মেনে এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের দিকে বাড়তি মনোযোগ দিয়ে আয়োজন করতে চাই।”
শিবকুমার আরও বলেছিলেন, “আমরা আইপিএল অন্য কোনও রাজ্যে সরে যেতে দেব না। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামেই ম্যাচ হবে। এই প্রতিযোগিতা কর্নাটক এবং বেঙ্গালুরুর গর্ব। আমরা সেটা ধরে রাখতে মরিয়া।”
সম্প্রতি কর্নাটক সরকার নির্দেশ দিয়েছে, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ম্যাচ আয়োজন করতে হলে পূর্ণাঙ্গ পরিকাঠামোগত ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হবে স্টেডিয়ামকে। কর্নাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাকে এই নির্দেশ পাঠিয়েছে বেঙ্গালুরুর পূর্ত দফতর। স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা পরীক্ষার অবশ্যই ‘ন্যাশনাল অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড ফর টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরিজ়’-এর বিশেষজ্ঞদের অধীনে হতে হবে। তাঁরাই কঠিন মাপকাঠি দিয়ে যাচাই করে নেবেন আদৌ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম ম্যাচ আয়োজনের উপযুক্ত কি না।
আরও পড়ুন:
গত বছর আইপিএল জয়ের পর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সমর্থকদের সঙ্গে উৎসবের আয়োজন করেছিল আরসিবি। মাঠে ঢুকতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন ১১ জন। তার পর থেকেই সেই স্টেডিয়ামে খেলা বন্ধ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো বটেই, ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচও হচ্ছে না। জুলাইয়ে স্বাধীন কমিশনের বিচারপতি জন মাইকেল ডি’কুনহা জানিয়েছিলেন, বড় মাপের অনুষ্ঠান বা ম্যাচ আয়োজন করার ক্ষমতা নেই ওই স্টেডিয়ামের। জন নিরাপত্তার পক্ষে সেটি বিপজ্জনক।