ইসলামাবাদ জেলা আদালতের সামনে আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা। আট জন ক্রিকেটার এক দিনের সিরিজ় না খেলেই দেশে ফিরতে চান। বার বার কথা বলেও তাঁদের বোঝাতে ব্যর্থ হন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কর্তারা। শেষ পর্যন্ত আসরে নামতে হয় পাকিস্তানের সেনা সর্বাধিনায়ক আসিম মুনিরকে। উচ্চপর্যায়ে একাধিক আলোচনার পর সফল হন তিনি। শ্রীলঙ্কা দলের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সেনা সর্বাধিনায়কের সাহায্য নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী নকভি বলেছেন, ‘‘আমাদের সেনা সর্বাধিনায়ক নিজে শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন। ক্রিকেটারদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দেন সেনা সর্বাধিনায়ক। আমরা শ্রীলঙ্কা বোর্ডের সঙ্গেও কথা বলি। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকর্তারা, ক্রিকেটারেরা এবং সংশ্লিষ্ট সকলে দুর্দান্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।’’ নকভি জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা দিশানায়েকও উদ্বিগ্ন ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেন।
নকভি আরও বলেছেন, ‘‘আমরা কোনও ঝুঁকি নিইনি। শ্রীলঙ্কা দলের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে পাক সেনা, রেঞ্জার্স এবং ইসলামাবাদ পুলিশকে। তিন বাহিনীর সদস্যেরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে নিরাপত্তা দিচ্ছেন।’’ উল্লেখ্য, নকভি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁর দফতরের হাতেই।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কার টিম বাসে জঙ্গি হামলা হয়েছিল। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচেছিলেন ক্রিকেটারেরা। ইসলামাবাদের বিস্ফোরণের পর সেই স্মৃতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা। যদিও চরিথ আশালঙ্কারা ছিলেন রাওয়ালপিন্ডিতে। এক দিনের সিরিজ়ের তিনটি ম্যাচই সেখানে। তাঁদের যাতায়াতের ব্যাপার ছিল না। তবু বৃহস্পতিবার সকালেই দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার অন্তত আট ক্রিকেটার। তেমন হলে এক ম্যাচের পরই বাতিল করতে হত পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা এক দিনের সিরিজ়। ক্রিকেটমহলে মান বাঁচাতে আসরে নামেন পিসিবি কর্তারা।
আরও পড়ুন:
শ্রীলঙ্কা দল এবং বোর্ডের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা শুরু করেন পাক কর্তারা। দলের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তার আশ্বাস দেন তাঁরা। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা সেই আশ্বাসে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। ক্রিকেট শ্রীলঙ্কার কর্তাদেরও আট ক্রিকেটার দেশে ফেরার কথা জানিয়ে দেন। সেই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকর্তারাও ক্রিকেটারদের বাধ্য করতে চাননি। বেগতিক দেখে সেনা সর্বাধিনায়কের সাহায্য চান নকভি। উল্লেখ্য, শুক্রবার এক দিনের সিরিজ়ের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দু’দল। এর পর রয়েছে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং জ়িম্বাবোয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ়।