Advertisement
০২ মে ২০২৪
ICC ODI World Cup 2023

বিশ্বকাপের এক মাস, অবশেষে গোটা দেশের মান রাখল ইডেন, কী ভাবে?

আমদাবাদ, মুম্বই, দিল্লি যা পারেনি, সেটাই করে দেখাল কলকাতা। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার ঠিক এক মাসের মাথায় গোটা দেশের মান বাঁচাল কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স। কী ভাবে?

odi world cup

ভরে গেল ইডেন, দর্শকদের মধ্যে দেখা গেল বিরাট উন্মাদনা। ছবি: পিটিআই

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৫৭
Share: Save:

৫ অক্টোবর। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি ইংল্যান্ড ও নিউ জ়িল্যান্ড। আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের প্রায় ৮০ শতাংশ আসনই ফাঁকা। হতবাক হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। অনেকে বলেছিলেন ভারত খেলতে নামলে ছবিটা বদলে যাবে। কিন্তু চেন্নাই, ধর্মশালা বা পুণের মাঠেও তা দেখা যায়নি। যখন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা মাঠে খেলছেন তখনও ১০০ শতাংশ আসন ভরেনি। সেটাই করে দেখাল ইডেন গার্ডেন্স। করে দেখালেন কলকাতার সমর্থকেরা। টসের আগেই ভরে গেল ইডেন। ৫ নভেম্বর, বিশ্বকাপের ঠিক এক মাসের মাথায় গোটা দেশের মান বাঁচাল ইডেন।

রবিবার ইডেন যে কানায় কানায় ভরে যাবে তা বুঝিয়ে দিয়েছে ম্যাচের আগের কয়েক ঘণ্টা। বেলা গড়াতেই মেট্রোতে বেড়েছে ভিড়। অন্য দিন ছুটির দিনে একটু ফাঁকা আসে মেট্রো। কিন্তু রবিবার দাঁড়ানোর জন্যও কসরত করতে হচ্ছিল। চারদিকে শুধুই নীল জার্সি। বেশির ভাগই ভারতের নতুন জার্সি পরেছেন। কেউ কেউ অবশ্য পুরনো জার্সি পরেও এসেছেন। আর যাঁরা জার্সি পাননি তাঁরা নীল রঙের জামা পরে নিয়েছেন। দক্ষিণেশ্বর থেকে চাঁদনি চক পর্যন্ত সময় লাগে মেরেকেটে ৩০ মিনিট। সেই রাস্তা আসতে সময় লেগে গেল প্রায় ৪৫ মিনিট। প্রতিট স্টেশনে ভিড়ের চাপে মেট্রোর দরজা বন্ধ করতে সময় লাগছে। বাঁশি বাজিয়েই চলেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। একটা সময়ে তো প্রতিটা কামরায় নিরাপত্তাকর্মীরা উঠে পড়লেন। বেশির ভাগ ভিড়টা নামল এসপ্ল্যানেডে। কিছুটা আবার তার আগের স্টেশন চাঁদনি চকেও। সেখান থেকেই দল বেঁধে হাঁটা লাগালেন তাঁরা। গন্তব্য ইডেন।

ম্যাচের দিন বাইকেও ভিড়। তবে বেশির ভাগ বাইকচালক বা আরোহী কারও মাথায় হেলমেট নেই। মাঠের বাইরে বাইক রাখার জায়গা থাকলেও হেলমেট রাখার নেই। আর সেই হেলমেট সঙ্গে নিয়ে তাঁরা ঢুকতেও পারবেন না। সেই কারণেই হেলমেট নেই। তবে ট্রাফিক পুলিশও তাঁদের ধরলেন না। খেলার দিনে হয়তো সবেতেই ছাড়। মেট্রোর মতো ভিড় দেখা গিয়েছে বাসেও। ধর্মতলাগামী সব বাসেই ভিড় করেছেন সমর্থকেরা। প্রত্যেকেরই আশা, আগে মাঠে ঢুকতে হবে। মেট্রো বা বাসের বাইরে দেখা গিয়েছে, হেঁটেই অনেকে মাঠের দিকে যাচ্ছেন। চাঁদনি চক বা ধর্মতলা তো বটেই, সেই মৌলালি থেকেই অনেকে হাঁটছেন মাঠের উদ্দেশে। তাঁরা বেশির ভাগই লোকাল ট্রেনে শিয়ালদহে নেমে তার পর দল বেঁধে মাঠের দিকে যাচ্ছেন। হাওড়া স্টেশনে নেমেও অনেকে হেঁটেই মাঠের দিকে গিয়েছেন।

মাঠে যখন জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হচ্ছিল, তখন মাইকের আওয়াজ ছাপিয়ে শোনা যাচ্ছিল দর্শকদের চিৎকার। ৬০ হাজারের বেশি দর্শক যখন একসঙ্গে গলা মেলান তখন কী পরিবেশ তৈরি হয় তা দেখিয়ে দিল ইডেন। মাঠে যখন রোহিত ছক্কা মারলেন, বা বিরাটের ব্যাট থেকে বল তিরবেগে বাউন্ডারির দিকে গেল তখন সেই চিৎকার আরও কয়েক গুণ বেড়ে গেল। নিজের ৩৫তম জন্মদিনে অর্ধশতরান বা শতরানের পরে বিরাট যখন দর্শকদের অভিবাদন করলেন তখন গোটা ইডেন দাঁড়িয়ে। কো-হ-লি, কো-হ-লি চিৎকার শোনা গেল মাঠের বাইরে থেকেও।

india vs south africa

খেলা শুরুর আগেই ভরে গিয়েছিল ইডেন গার্ডেন্স। ছবি: পিটিআই।

এই ছবিটা কিন্তু ভারতের বাকি মাঠেও দেখা যায়নি। আমদাবাদে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও কিছু আসন ফাঁকা ছিল। ওয়াংখেড়ে বা দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম ভরে গেলেও এতটা উন্মাদনা দেখা যায়নি। হতে পারে সেখানে দর্শক সংখ্যা ইডেনের থেকে কম, কিন্তু উন্মাদনাতেও সবাইকে ছাপিয়ে গেল কলকাতার মাঠ। বুঝিয়ে দিল, কেন সেরা ক্রিকেটারেরা এই মাঠে খেলতে এতটা পছন্দ করেন। কেন বলা হয়, ভারতের হয়ে দ্বাদশ ব্যক্তি হিসাবে খেলেন ইডেনের জনতা। সত্যিই রবিবারে গঙ্গাপারে ক্রিকেট পেল যোগ্য সম্মান। গোটা বিশ্বের সামনে ভারতের মান বাঁচাল ইডেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE