Advertisement
E-Paper

রাজস্থানের মরুভূমিতে আটকে গেল পঞ্জাব মেল, ঘরের মাঠে শ্রেয়সদের ৫০ রানে হারালেন সঞ্জুরা

চলতি আইপিএলে প্রথম ম্যাচ হারল পঞ্জাব কিংস। ঘরের মাঠে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে ৫০ রানে হারলেন শ্রেয়স আয়ারেরা। শনিবার আইপিএলের দু’টি ম্যাচই প্রথমে ব্যাট করা দল জিতল।

cricket

রাজস্থান রয়্যালসের ক্রিকেটারদের উল্লাস। শনিবার পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১৬
Share
Save

আইপিএলে যেখানে প্রথমে ব্যাট করে জেতা প্রায় অসম্ভব, শনিবার সেখানে দু’টি ম্যাচই জিতল প্রথমে ব্যাট করা দল। দুপুরের ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসের পর সন্ধ্যার ম্যাচে বাজিমাত করল রাজস্থান রয়্যালস। পঞ্জাব কিংসকে ৫০ রানে হারালেন সঞ্জু স্যামসনেরা। এ বারের আইপিএলে এই প্রথম বার রাজস্থানের অধিনায়কত্ব করছেন সঞ্জু। জয় দিয়ে শুরু করলেন তিনি। অন্য দিকে প্রথম দুই ম্যাচ জেতার পর ঘরের মাঠে ফিরে হারে ফিরলেন শ্রেয়স আয়ার।

চণ্ডীগড়ের মাঠে টস জিতে চোখ বন্ধ করে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রেয়স। শুরুতে যশস্বী জয়সওয়াল একটু সাবধানে খেলছিলেন। আগের তিন ম্যাচে মাত্র ৩৪ রান করেছেন তিনি। বোঝা যাচ্ছিল, চাপে রয়েছেন। যশস্বীকে থিতু হওয়ার সময় দেন সঞ্জু। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করছিলেন তিনি। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে বড় শট খেলছিলেন। পাওয়ার প্লে-তে কোনও উইকেট না হারিয়ে ৫৩ রান করে রাজস্থান।

কয়েকটি বল খেলার পর আত্মবিশ্বাস ফিরে পান যশস্বী। রান তোলার গতি বাড়ান তিনি। কিন্তু যে ভাবে তিনি সহজেই বড় শট খেলেন তা মারতে পারছিলেন না। ৮৯ রানের মাথায় রাজস্থানকে প্রথম ধাক্কা দেয় পঞ্জাব। লকি ফার্গুসনের বলে ৩৮ রানে আউট হন সঞ্জু। তিন নম্বরে নেমে রিয়ান পরাগ মারমুখী ব্যাটিং শুরু করেন। যশস্বীও রানের গতি বাড়ান।

অর্ধশতরান করেন যশস্বী। কিন্তু আইপিএলে এটি তাঁর সবচেয়ে মন্থর অর্ধশতরান। ৫০ পার করার পরে কয়েকটি বড় শট মারেন যশস্বী। শেষ পর্যন্ত ফার্গুসনের বলেই ৬৭ রানে ফেরেন তিনি। নীতীশ রানা শুরু থেকে বড় শট মারলেও বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি। ১২ রান করে আউট হন।

ডেথ ওভারের জন্য অর্শদীপ সিংহ, মার্কো জানসেন ও মার্কাস স্টোইনিসকে রেখেছিলেন শ্রেয়স। পরাগ ও শিমরন হেটমেয়ার প্রতি বলে বড় শট খেলার চেষ্টা করছিলেন। পঞ্জাবের পেসারেরা বলের গতির হেরফের করছিলেন। ফলে কয়েকটি বল ব্যাটে লাগেনি। রান তোলার গতি কমছিল। তার মাঝেই দুই ব্যাটারের একটি করে ক্যাচ পড়ে। সেই সময় দু’জন আউট হলে সমস্যায় পড়ত রাজস্থান। পঞ্জাবের খারাপ ফিল্ডিং তাদের সুবিধা করে দেয়।

শেষ দিকে হাত খোলা শুরু করেন পরাগ। হেটমেয়ার ২০ রান করে আউট হলেও শেষ পর্যন্ত থাকেন পরাগ। তাঁকে সঙ্গ দেন ধ্রুব জুরেল। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান করে রাজস্থান। পরাগ ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। চণ্ডীগড়ের এই মাঠে আইপিএলে এটিই সর্বাধিক রান। এই মাঠে এর আগে তিনটি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা দল দু’বার জিতেছিল। তাই পঞ্জাবের পক্ষে রান তাড়া করা যে সহজ হবে না তার ইঙ্গিত ছিল। সেটাই হল।

২০৬ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই প্রিয়াংশ আর্যের উইকেট হারায় পঞ্জাব। তাঁকে বোল্ড করেন জফ্রা আর্চার। তিন নম্বরে নেমে আগের দুই ম্যাচের ছন্দে শুরু করেছিলেন শ্রেয়স। আর্চারকে দু’টি চার মারেন তিনি। কিন্তু সেই ওভারের শেষ বলে আবার বড় শট মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন শ্রেয়স। প্রথম ওভারে পঞ্জাবকে জোড়া ধাক্কা দেন আর্চার। রান পাননি স্টোইনিস। এক রানে ফেরেন তিনি। পঞ্জাবের ভরসা ছিল ওপেনার প্রভসিমরন সিংহের উপর। কিন্তু তিনিও ১৭ রানে আউট হন। ৪৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে যায় পঞ্জাবের।

পাঁচ নম্বরে নেমে নেহাল ওয়াধেরা শুরু থেকে বড় শট খেলছিলেন। কিন্তু তাঁর একার পক্ষে ম্যাচ জেতানো সম্ভব ছিল না। ওয়াধেরাকে সঙ্গ দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত চুপ ছিল তাঁর ব্যাট। কিন্তু এই ম্যাচে ভাল খেলতে শুরু করলেন তিনি। শেষ ১০ ওভারে জিততে ১২৮ রান দরকার ছিল পঞ্জাবের। সেখান থেকেই খেলার ছবিটা বদলালেন দুই ব্যাটার।

আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন ওয়াধেরা ও ম্যাক্সওয়েল। বিশেষ করে রাজস্থানের তিন স্পিনারের বিরুদ্ধে হাত খোলা শুরু করেন তাঁরা। ডানহাতি, বাঁহাতি জুটির সুবিধা কাজে লাগাতে শুরু করেন। প্রতি ওভারে বড় রান আসছিল। অর্ধশতরান পূর্ণ করেন তরুণ ওয়াধেরা। আরও এক বার তিনি দেখালেন, কেন তাঁকে এত ভরসা করেন রিকি পন্টিং। ম্যাক্সওয়েলও ছন্দে ছিলেন। জরুরি রান রেট বাড়লেও লড়াই ছাড়েননি তাঁরা। বড় শট মারা ছাড়া উপায় ছিল না। সেটা করতে গিয়েই ৩০ রান করে আউট হন ম্যাক্সওয়েল।

শেষ পাঁচ ওভারে জিততে পঞ্জাবের দরকার ছিল ৭৫ রান। অর্থাৎ, প্রতি ওভারে ১৫ রান। ১৬তম ওভারের প্রথম বলেই ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ আউট করেন ওয়াধেরাকে। ৬২ রান করে আউট হন তিনি। বড় ধাক্কা খায় পঞ্জাব। পর পর দু’বলে দুই ব্যাটার আউট হওয়ার পর পঞ্জাবের শেষ ভরসা ছিল শশাঙ্ক সিংহ। গত বার ফিনিশারের তকমা পেয়েছিলেন তিনি।

এই ম্যাচে পারলেন না শশাঙ্ক। রাজস্থানের অভিজ্ঞ বোলারদের সামনে আর জুটি গড়তে পারল না পঞ্জাব। একের পর এক উইকেট পড়ল। একা শশাঙ্কের পক্ষে দলকে জেতানো সম্ভব ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৫৫ রানে শেষ হল পঞ্জাবের ইনিংস। হেরে মাঠ ছাড়তে হল গত বারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ককে।

Rajasthan Royals Punjab Kings IPL

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy