ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ় এখন ১-১। লর্ডসে তৃতীয় টেস্ট শুরু বৃহস্পতিবার থেকে। বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক ঋষভ পন্থ। ডিউক বলের মান নিয়ে দলের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। অন্য দিকে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস ভাল কিছুর আশা দেখছেন জফ্রা আর্চারকে ঘিরে।
এজবাস্টনে ৩৩৬ রানে জয় আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে ভারতীয় শিবিরে। প্রথম টেস্টে ভাল খেলেও হারের হতাশা এখন অতীত। শুভমন গিলেরা সিরিজ়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবেন বৃহস্পতিবার। পন্থকে প্রথমেই প্রশ্ন করা হয়, আপনি মাঠে এত কথা বলেন কেন। পন্থ বলেছেন, ‘‘আমার কোচ প্রয়াত তারক সিনহা বলেছিলেন, সব সময় নিজের সঙ্গে কথা বলবে। ছোট থেকেই তাই আমি এ ভাবে কথা বলতে অভ্যস্ত। এটায় আমার উপকারই হয়।’’ গত দু’টি টেস্টে উইকেট রক্ষা করার বা ব্যাট করার সময় পন্থের নানা মন্তব্য ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। মাঠে সব সময়ই প্রচুর কথা বলেন পন্থ।
তৃতীয় টেস্টের আগে ভারতীয় শিবিরের উদ্বেগ ডিউক বল। পন্থের কথাতেই তা পরিষ্কার। তিনি বলেছেন, ‘‘এই বলটার আকার খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। আগে কখনও এমন দেখিনি। ক্রিকেটারদের কাছে এই বিষয়টা অত্যন্ত বিরক্তিকর। প্রতিটি বল আলাদা ভাবে খেলতে হয়। কখনও কখনও বলটা বেশি নরম হয়ে যাচ্ছে। আবার বল পাল্টালে অন্য রকম হচ্ছে। ফলে ব্যাটারদের সমানে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। আমার মনে হয় না ক্রিকেটের জন্য এটা ভাল।’’
অধিনায়ক শুভমনের সঙ্গে আপনার বোঝাপড়া কেমন? পন্থ বলেছেন, ‘‘আমাদের সম্পর্ক কেমন, সেটা মাঠেই দেখা যায়। কী হতে পারে, কী হচ্ছে এ সব নিয়ে আমাদের কথা হয়। যখন দু’জন পরস্পরকে ভরসা করে তখন কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। মাঠে আমাদের মধ্যে যোগাযোগ খুব সহজ এবং স্বাভাবিক। আমরা সবে শুরু করেছি। আশা করছি, দলের সকলের সঙ্গেই একটা স্বাভাবিক বোঝাপড়া তৈরি হয়ে যাবে। আমরা একটা দল হিসাবে এগোতে চাই।’’
তৃতীয় টেস্ট খেলবেন জসপ্রীত বুমরাহ। যা আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করছে ভারতীয় শিবিরকে। পন্থও অস্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, ‘‘সময় যত এগোচ্ছে, আমাদের বোলারেরা তত ভাল পারফর্ম করছে। ওরা কতটা ভাল সেটা মাঠেই দেখিয়ে দিয়েছে। ওদের জন্য আমাদের দলটাকেও ক্রমশ আরও ভাল দেখাচ্ছে।’’
ঠিক এই জায়গাটাই ভাবাচ্ছে ইংল্যান্ড শিবিরকে। বুমরাহের সঙ্গে মহম্মদ সিরাজ এবং আকাশদীপ। ভারতের জোরে বোলিং আক্রমণ সামলানোর জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরির কথা বলেছেন স্টোকস। শুভমনদের ব্যাটিং তাণ্ডবও ভাবাচ্ছে তাঁদের। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘ভারতের সব ব্যাটারের জন্যই আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু ভাল খেলোয়াড়েরা সব সময়ই ভাল খেলে। যেমন প্রথম দু’টো টেস্টে শুভমন দুর্দান্ত খেলেছে।’’
তৃতীয় টেস্টে খেলবেন জফ্রা আর্চার। চার বছর পর টেস্ট ক্রিকেট খেলবেন তিনি। স্টোকস বলেছেন, ‘‘আর্চার দীর্ঘ দিন চোট-আঘাতে ভুগেছে। তবে চোট সারিয়ে দুর্দান্ত ভাবে ফিরে এসেছে। যে ভাবে খেলছে, সেটা আমাদের উৎসাহিত করছে।’’ স্টোকসের মতে টানা ম্যাচের মধ্যে প্রথম একাদশে সামান্য রদবদল লাভজনক হয়। তিনি বলেছেন, ‘‘এ রকম বড় সিরিজ়ে অনেক সময় পর পর দুটো টেস্ট খেলতে হয়। এমন সময় পরিবর্তন অনেকটা তরতাজা কাউকে নামানোর মতো। আমরা সত্যিই খুশি, পরিবর্ত হিসাবে আর্চারের মতো ক্রিকেটারকে পাচ্ছি। ও যখনই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলে, সেটা যে ধরনের ক্রিকেটই হোক বল হাতে খেলার রং বদলে দেয়। আমার তো মনে হয় প্রতিপক্ষ দলও এটা নিয়ে ভাববে। ওরাও জানে আর্চার কী করতে পারে।’’
ভারতীয় শিবির অবশ্য আর্চারকে নিয়ে চিন্তিত নয়। পন্থ বলেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি, মাঠে নামলে নিজের খেলা উপভোগ করার চেষ্টা করি। নিজের ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করি। কাউকে নিয়ে আলাদা করে ভাবার বিষয় নয়। হ্যাঁ, একটা ভাল লড়াই হতে পারে। আর্চারও কিন্তু বহু দিন পর টেস্ট খেলবে। তবে ও লাল বলের ক্রিকেটে ফেরায় আমি খুশি।’’