আইপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহককে দেওয়া হয় কমলা টুপি। প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই ক্রিকেটপ্রেমীদের এ নিয়ে আগ্রহও থাকে যথেষ্ট। ব্যাটারদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় এক নিঃশব্দ প্রতিযোগিতা। এক-দুটো বড় রানের ইনিংস খেললে কমলা টুপি জেতা যায় না। দরকার হয় ধারাবাহিকতা।
লিগ পর্ব পর্যন্ত বেশ কয়েক জন ছিলেন কমলা টুপি জেতার দৌড়ে। লড়াই ছিল হাড্ডাহাড্ডি। বারে বারে বদলে গিয়েছে শীর্ষে থাকা ব্যাটারের নাম। বিরাট কোহলি, শুভমন গিল, জস বাটলার, মিচেল মার্শ, সাই সুদর্শন, লোকেশ রাহুল, সূর্যকুমার যাদবের মতো ব্যাটারেরা একে অপরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গিয়েছেন ক্রমাগত। প্রতিযোগিতার শেষ লগ্নে এসে বাকিদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন সুদর্শন।
গুজরাত টাইটান্স এলিমিনেটর হেরে প্রতিযোগিতার বাইরে চলে গেলেও কমলা টুপির দৌড়ে শীর্ষ স্থান ধরে রাখেন ২৩ বছরের তরুণ। ১৫টি ম্যাচ খেলে তিনি করেছেন ৭৫৯ রান। একটি শতরান এবং ছ’টি অর্ধশতরান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৮। গড় ৫৪.২১। স্ট্রাইক রেট ১৫৬.১৭। তিনিই জিতে নিলেন ১৮তম আইপিএলের কমলা টুপি।
ক্রিকেটার সুদর্শনের পরিণত হয়ে ওঠার নেপথ্যে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং কোহলির অবদান রয়েছে। সুদর্শনই বছর দুয়েক আগে বলেছিলেন, ‘‘মাহিভাইকে সবাই জানে। খুব শান্ত। আমি যখনই কথা বলতে গিয়েছি, ও সব সময় বলেছে নিজেকে চিনতে। দলের জন্য কী করতে পারব সেটা বুঝতে। নিজের জন্য খেলার থেকে সেটাই সব বেশি গুরুত্বপূর্ণ।” এ ছাড়াও নিজের ব্যাটিং নিয়ে সময় সুযোগ পেলেই কোহলির সঙ্গে কথা বলেন বাঁহাতি ওপেনিং ব্যাটার। বড় ইনিংস তৈরির পাঠ তিনি কোহলির কাছ থেকেই নিয়েছেন। চলতি মরসুমে বেশ ভাল ফর্মে রয়েছেন। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে আইপিএলে। সেই সুবাদে প্রথম বার ডাক পেয়েছেন ভারতের টেস্ট দলে। তামিলনাড়ুর ক্রিকেটার লেগ স্পিনও করতে পারেন প্রয়োজন হলে। দেশের হয়ে তিনটি এক দিনের আন্তর্জাতিক এবং একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এ বারের আইপিএলকে সুদর্শনের ক্রিকেট জীবনের উত্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসাবে চিহ্নিত করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে সূর্যকুমার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে তিনি ১৬টি ম্যাচ খেলে করেছেন ৭১৭ রান। পাঁচটি অর্ধশতরান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৩। গড় ৬৫.১৮। আইপিএলে ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের স্ট্রাইক রেট ১৬৭.৯১।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে কোহলি। ১৫টি ম্যাচ খেলে করেছেন ৬৫৭ রান। আটটি অর্ধশতরান করেছেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৩। গড় ৫৪.৭৫। স্ট্রাইক রেট ১৪৪.৭১।
চতুর্থ স্থানে গুজরাত অধিনায়ক শুভমন। ১৫টি ম্যাচ খেলে ৬৫০ রান করেছেন। ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক ছ’টি অর্ধশতরান করেছেন। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৯৩। গড় ৫০। স্ট্রাইক রেট ১৫৫.৮৭।
কমলা টুপির দৌড়ে পঞ্চম স্থানে শেষ করেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার মার্শ। ১৩টি ম্যাচে ৬২৭ রান করেছেন তিনি। একটি শতরান এবং ছ’টি অর্ধশতরান করেছেন। সর্বোচ্চ ১১৭। গড় ৪৮.২৩। স্ট্রাইক রেট ১৬৩.৭০।