Advertisement
E-Paper

Sambaran Banerjee: ‘বিরাট কোহলী-রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে রোহিত শর্মা-রাহুল দ্রাবিড় জুটির তুলনার সময় আসেনি’

রাহুল দ্রাবিড়ের ক্রিকেট জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই। দ্রাবিড়ের সবচেয়ে বড় সুবিধে হল, ও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পড়িয়ে এ বার স্নাতক ক্লাসে এসেছে।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০৭
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিউজ়িল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে ভারত ৩-০ উড়িয়ে দেওয়ার পরে একটা তুলনা খুব উঠছে। বিরাট কোহলী-রবি শাস্ত্রী জুটির সঙ্গে রোহিত শর্মা-রাহুল দ্রাবিড়ের। পরিষ্কার বলে রাখছি, এখনই এই তুলনা করার কোনও জায়গা নেই।

নিউজ়িল্যান্ড থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা— বিশ্বের সব প্রান্তে গিয়েই সাদা বল থেকে লাল বলে সাফল্য পেয়েছে বিরাট-শাস্ত্রী জুটি। রোহিতদের যাত্রা তো সবে শুরু হল। শাস্ত্রীর ক্রিকেটীয় মস্তিষ্ক নিয়ে আমি সব সময় শ্রদ্ধাশীল। এখনও মনে আছে, ১৯৯৩-১৯৯৪ মরসুমে রঞ্জি ফাইনালে একেবারে তরুণ একটা মুম্বই দলকে নিয়ে অরুণ লাল-সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়দের বাংলাকে কী ভাবে হারিয়ে দিয়েছিল। শুধু ক্ষুরধার ক্রিকেট বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে।

রাহুল দ্রাবিড়ের ক্রিকেট জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই। দ্রাবিড়ের সবচেয়ে বড় সুবিধে হল, ও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পড়িয়ে এ বার স্নাতক ক্লাসে এসেছে। মানে অনূর্ধ্ব-১৯, ভারতীয় ‘এ’ দলে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা এ বার কিছুটা কাজে দেবে। কিন্তু আবারও বলছি, তুলনা করার সময়ই আসেনি। এর পরে ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর আছে। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। একটা একটা ধাপ করে এগোতে দিন এই নতুন জুটিকে।

কোচেদের মধ্যে যেমন তুলনা আসে না, সে রকমই রোহিত আর বিরাটের নেতৃত্বের মধ্যেও তুলনা হয় না। দু’জন সম্পূর্ণ দু’ধরনের অধিনায়ক। রোহিতের মধ্যে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির একটা ছাপ আছে। মাঠে মাথা ঠান্ডা রাখে। আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখে। অন্য দিকে বিরাটের অধিনায়কত্বের সঙ্গে সৌরভের অধিনায়কত্বের অনেকটা মিল পাই। দু’জনেই মাঠে দারুণ আগ্রাসী। আগ্রাসনটাই ওদের একটা অস্ত্র। ব্যক্তিগত ভাবে আমিও আগ্রাসী নেতৃত্ব পছন্দ করি। এই আগ্রাসন দলকে অনেক সময়ই তাতিয়ে দেয়। রোহিত-দ্রাবিড়ের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে হতে চলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সবাই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে দেখবে, দীর্ঘদিনের আইসিসি ট্রফি না জেতার খরা কাটাতে পারে কি না ভারত।

এর জন্য কিন্তু এখন থেকেই তৈরি হতে হবে দ্রাবিড়দের। প্রতিযোগিতা শুরু হতে এক বছরও নেই। এমন ভাবে এগোতে হবে, যাতে বিশ্বকাপ শুরুর কয়েক মাস আগে প্রথম এগারো চিহ্নিত করা যায় এবং তাদের দিয়েই শেষ ছ’টা ম্যাচ খেলিয়ে নেওয়া যায়। গত দু’টো বিশ্বকাপে এই প্রথম এগারো তৈরি না থাকার ফলে অনেক ভুগেছি আমরা। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে চার নম্বর ব্যাটারকে নিয়ে অনেক নাটক হয়। শেষ পর্যন্ত বিজয় শঙ্কর খেলে কিছু করতে পারল না। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হার্দিক পাণ্ড্য বল করার মতো অবস্থায় আছে কি না, বুঝতে বুঝতেই ঘরে ফেরার বাজনা বেজে গেল। নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ় থেকে কী কী পাওয়া গেল? রবিবারের ইডেনে বাঁ-হাতি স্পিনার অক্ষর পটেল দুরন্ত বল করেছে। সে রকমই শুরুতে নেমে ঝড় তুলেছিল ঈশান কিশান। কিন্তু মনে হচ্ছে, চূড়ান্ত একাদশে এদের জায়গা দেওয়া কঠিন হবে।

কেন বলছি? অক্ষরের প্রসঙ্গে আসি। ও ভুল সময় জন্মেছে। কারণ ওর প্রতিন্দ্বন্দ্বীর নাম রবীন্দ্র জাডেজা। আর জাডেজা হল একটা দারুণ প্যাকেজ। বোলিং-ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়ের ত্রিফলা। কোনও দলই জাডেজার মতো ক্রিকেটারকে বাইরে রাখতে পারবে না। ঈশানকে দলে রাখলে ভারত শুরুর দিকে বিস্ফোরক এক জন ব্যাটার পাবে। যে দ্রুত রানটা তুলতে পারে। কিন্তু এখানেও প্রশ্ন, ওকে কার জায়গায় খেলানো হবে? রোহিত আর কে এল রাহুল হল সাদা বলের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটার। ওদের বসানো সম্ভব নয়। কিন্তু এখানে একটা কথা বলব। ভারত ইদানীং অনেক ম্যাচেই প্রথম ছ’ওভারে খুব রক্ষণশীল ব্যাট করছে। যা আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চলে না। ব্যতিক্রম হল ইডেনে। যেখানে রোহিত-ঈশান মিলে প্রথম ছ’ওভারে ৬৯ রান তুলে দিল। এই মানসিকতাই ভারতকে ধরে রাখতে হবে। তা যারাই ওপেন করুক না কেন।

এই সিরিজ় থেকে আরও দুটো প্রাপ্তি থাকছে। বেঙ্কটেশ আয়ার এবং হর্ষল পটেল। বেঙ্কটেশকে দেখে আমার গাড়ির ‘স্টেপনি’র কথা মনে পড়ছে। যখন প্রয়োজন, তখনই কাজে লাগানো যায়। ওপেন থেকে ছ’নম্বর পর্যন্ত যে কোনও জায়গায় খেলানো যায়। মাঝের বা শেষের ওভারে বল করানো যায়। কারণ ওর হাতে ভাল ইয়র্কার আছে।

হর্ষলও দারুণ ভাবে উঠে আসছে। শেষ দিকে স্লোয়ারগুলো খুব ভাল কাজে লাগাচ্ছে। চাপের মুখে ওয়াইড ইয়র্কার দিতে পারে। কাটার, নাকল বল— সবই হাতে আছে। তা ছাড়া ব্যাটটাও ভাল করে। অনেকেই হয়তো জানেন না, মুস্তাক আলি ট্রফিতে হরিয়ানার হয়ে হর্ষল ব্যাটিং ওপেনও করেছে। রোহিত-দ্রাবিড়ের কাজ হবে এখন থেকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে দলটাকে তৈরি করা। তুলনা যা হওয়ার, তা পরে হবে।

Rahul Dravid rohit sharma Virat Kohli Ravi Shastri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy