Advertisement
E-Paper

অঘটনের রাত উপহার দিয়ে তৃপ্ত রশিদ-মুজিবের মাথায় এখন শুধুই আফগানিস্তানের ভূমিকম্প

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে জয়ের পর থামতে চাইছেন না রশিদের। বিশ্বকাপের যে কোনও দলকে হারানোর বিশ্বাস রয়েছে তাঁদের। ফলের কথা না ভেবে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করতে চান আফগান ক্রিকেটারেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৩০
picture of Rashid Khan

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেশবাসীর জন্য প্রার্থনা রশিদের। ছবি: আইসিসি।

গত এক সপ্তাহে তিন বার কেঁপে উঠেছে আফগানিস্তানের মাটি। আত্মীয়, পরিজনদের জন্য উদ্বেগকে সঙ্গী করেই বিশ্বকাপ খেলছেন রশিদ খান, মহম্মদ নবি, মুজিব উর রহমান। তার মধ্যেই রবিবার এসেছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়। এক দিনের বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেল আফগানিস্তান। সঙ্কটের সময় দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুশি আফগান ক্রিকেটারেরা। রশিদের দাবি, বিশ্বকাপের যে কোনও দলকে হারাতে পারেন তাঁরা।

দেশে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচ ফি নিচ্ছেন না রশিদ। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার ম্যাচ ফির সব টাকা ত্রাণ তহবিলে দিয়ে দিচ্ছেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের পর রশিদ বলেছেন, ‘‘সন্দেহ নেই এই জয়টা আমাদের কাছে বেশ বড়। রবিবারের পারফরম্যান্স আমাদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করবে। যে কোনও দিন, যে কোনও প্রতিপক্ষকে হারাতে পারি আমরা। আমাদের ক্রিকেট দেশবাসীকে নিশ্চই খুশি করবে। ভূমিকম্পে ৩০০০-এর বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন দেশে। আশা করি, আমাদের জয় কষ্টে থাকা দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাবে। এটাই আমাদের তৃপ্তি দিচ্ছে।’’

সতীর্থদেরও কৃতিত্ব দিয়েছেন রশিদ। ইংল্যান্ড ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘সাজঘরে বক্তব্য রাখার সময় একটা বিষয় সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছি। সেটা হল ফলাফল যাই হোক, প্রতিযোগিতায় প্রতিটি ম্যাচের শেষ পর্যন্ত লড়াই করতেই হবে। ছোট ছোট লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চাইছি আমরা। যার প্রথম হচ্ছে, মাঠের ১১ জনকেই ১০০ শতাংশ দিতে হবে। হোটেলে ফেরার আগে আমরা সবাই যেন বলতে পারি, ১০০ শতাংশ-ই দিয়েছিলাম।’’ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিজের পারফরম্যান্সেও খুশি রশিদ। অনেক দিন পর এক দিনের ম্যাচে ৩ উইকেট দলের কাজে লাগায় আরও বেশি ভাল লাগছে তাঁর।

রশিদ প্রশংসা করেছেন ম্যাচের সেরা মুজিবের। তিনি বলেছেন, ‘‘মুজিব কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে পারফরম্যান্স করছে। আমরা নেটে এক সঙ্গে ব্যাট করি। কোন উইকেটে কেমন বল করলে সব থেকে কার্যকর হতে পারে, সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি। পরস্পরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিই। ওর মতো সতীর্থকে সব সময় পাশে পাওয়া দারুণ ব্যাপার। নবির জন্যও দারুণ লাগছে। রবিবার ১৫০তম এক দিনের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল। রহমত শাহও ১০০তম ম্যাচ খেলল এ দিন। সেই ম্যাচে এমন দুরন্ত জয় এল। এই মাঠেই ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিলাম আমরা। সে বার ১৪০ রানের মধ্যে ইংল্যান্ডকে আটকে রেখেও জিততে পারিনি। সেই হার থেকে শিক্ষা নিয়েছিলাম আমরা। তাই আরও বেশি আনন্দ দিচ্ছে এই জয়।’’

অন্য দিকে, ম্যাচের সেরা মুজিব বলেছেন, ‘‘গত বারের চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে জয় আমাদের কাছে গর্বের। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। সে জন্যই সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছি। দলের সকলের জন্য ভীষণ ভাল লাগছে। আমাদের দেশে যাঁরা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের উৎসর্গ করছি আমার ম্যাচের সেরার পুরস্কার।’’

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দিল্লির ২২ গজে সাফল্যের রহস্যও লুকিয়ে রাখেননি মুজিব। আফগান অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘পাওয়ার প্লেতে স্পিনারদের বল করা সব সময়ই কঠিন। মাত্র দু’জন ফিল্ডার থাকে বাউন্ডারি লাইনে। লাইন এব‌ং লেংথ নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছি। যাতে ধারাবাহিক ভাবে নির্দিষ্ট লাইন এবং লেংথ বজায় রাখতে পারি। স্টাম্পের মধ্যে আগ্রাসী বোলিং করার চেষ্টা করি। আমরা জানতাম পরের দিকে শিশির পড়বে। তবে এটা খেলারই অংশ। উইকেট ভালই ছিল। বল একটু থমকে ব্যাটারের কাছে যাচ্ছিল। উইকেটের সঠিক জায়গায় বল রাখতে চেয়েছিলাম। শিশিরের জন্য পরিকল্পনা পরিবর্তন করিনি।’’

রবিবার ব্যাট হাতেও ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন মুজিব। সে জন্য দলের সবাইকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। ২২ বছরের অলরাউন্ডারের কথায়, ‘‘দলের কথা বলব। নেটে সব সময় আমাকে উৎসাহ দেয় সবাই। অনুশীলনের সময় চেষ্টা করি যতটা সম্ভব জোরে বল মারার। যাতে নীচের দিকে নেমেও কিছু রান করতে পারি। অনেক সময় ২০-২৫ রানও গুরুত্বপূর্ণ হয়।’’

ICC World Cup 2023 Afghanistan Rashid Khan Mujeeb Ur Rahman England
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy