Advertisement
E-Paper

‘আইপিএল জিতব ভাবিনি, আজ রাতে শিশুর মতো ঘুমোব’, চোখের জল সামলে বললেন বিরাট কোহলি

বিরাট কোহলি জানিয়ে দিলেন, এত বছর অপেক্ষা করতে করতে এক সময় মনে হয়েছিল আইপিএল হয়তো আর জিততেই পারবেন না। সেই লক্ষ্যপূরণ হওয়ার পর এ বার বাচ্চাদের মতো ঘুমোবেন তিনি।

cricket

তখন ট্রফি জয় নিশ্চিত। মাঠের ধারেই মুখে হাত দিয়ে কান্না চাপার চেষ্টা বিরাট কোহলির। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ ০০:৩৩
Share
Save

কান্না শুরু হয়েছিল চার বল বাকি থাকতেই। জশ হেজ়লউডের বলটা শশাঙ্ক সিংহ বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিতেই হাঁটু মুড়ে মাটিতে বসে পড়লেন তিনি। দু’হাতে ঢাকলেন চোখ। পাশ থেকে দুই সতীর্থের পিঠ চাপড়ানি, গোটা মাঠের গর্জন, সতীর্থদের পাগলপারা উচ্ছ্বাস— কিছুই ছুঁতে পারছিল না তাঁকে। ১৮টা বছর তো কম অপেক্ষা নয়!

ম্যাচ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট পর ধারাভাষ্যকার ম্যাথু হেডেন যখন তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গেলেন, তখনও চোখ ছলছল। মাথার চুল উস্কোখুস্কো। বোঝাই যাচ্ছিল, ঘোর তখনও কাটেনি। তার মধ্যেই বিরাট কোহলি জানিয়ে দিলেন, এত বছর অপেক্ষা করতে করতে এক সময় মনে হয়েছিল আইপিএল হয়তো আর জিততেই পারবেন না। সেই লক্ষ্যপূরণ হওয়ার পর এ বার বাচ্চাদের মতো ঘুমোবেন তিনি।

কোহলির কথায়, “এই ট্রফি দলের জন্য যতটা, ততটাই সমর্থকদের জন্য। ১৮টা বছর পেরিয়ে গিয়েছে এই দিনটা দেখতে। এই দলটাকে নিজের যৌবন, নিজের সেরা সময় এবং অভিজ্ঞতা দিয়েছি। প্রত্যেক মরসুমে ট্রফি জেতার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, নিজের সবটা দিয়েছি। তাতেও ট্রফি পাইনি। অবশেষে এই দিনটা দেখতে পাওয়া অবিশ্বাস্য এক অনুভূতি।”

কোহলির সংযোজন, “কোনও দিন ভাবিনি এই দিনটা দেখতে পারব। তাই শেষ বলটা হওয়ার পর নিজের আবেগ আর সামলাতে পারিনি। নিজের শক্তির প্রত্যেকটা আউন্স এই দলটাকে দিয়েছি।”

এক দিনের বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, দেশের হয়ে সবই জিতে ফেলেছেন। এ বার ক্লাবের হয়ে আইপিএলও হয়ে গেল। এই ট্রফি ক্রিকেটজীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? কোহলির জবাব, “সত্যি বলতে, অনেকটা উপরের দিকেই থাকবে। গত ১৮ বছর ধরে নিজের সবটা এই দলকে দিয়েছি। যা-ই হোক না কেন, এই দলের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে। কখনও কখনও মনের মধ্যে বিভিন্ন ভাবনাচিন্তা এসেছে (দল ছাড়ার)। তবু এই দলের সঙ্গে থেকে গিয়েছি। সমর্থকদের পাশে দাঁড়িয়েছি, ওঁরাও আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। ওঁদের সঙ্গেই জেতার স্বপ্ন দেখেছি। ট্রফিজয়টা আরও ভাল লাগছে কারণ আমার হৃদয় এবং আত্মা রয়েছে বেঙ্গালুরুর সঙ্গেই। আইপিএলের শেষ দিন পর্যন্ত এই দলের সঙ্গেই থাকব।”

কোহলির সংযোজন, “আমি বড় প্রতিযোগিতা জিততে ভালবাসি। বড় মুহূর্তে বাঁচতে ভালবাসি। এই ট্রফি জয়ের অভিজ্ঞতাটাই এত দিন ছিল না। আজ রাতে আমি বাচ্চাদের মতো ঘুমোব।”

ম্যাচ শেষের পর থেকেই ক্যামেরা ঘুরছিল শুধু কোহলিকে ঘিরেই। অধিনায়ক রজত পাটীদার আগেই বলেছিলেন, তাঁরা কোহলির জন্য ট্রফি জিততে চান। এ দিন মাঠে জিতেশ শর্মা-সহ একাধিক সতীর্থও সে কথা বলে গেলেন। তবে কোহলি মোটেই একা এই কৃতিত্ব নিতে রাজি নন। এখনকার সতীর্থদের পাশাপাশি দুই প্রাক্তন সতীর্থের কথা বার বার স্মরণ করালেন। তাঁরা হলেন এবি ডিভিলিয়ার্স এবং ক্রিস গেল।

প্রথমে হেডেনকে কোহলি বলেন, “এবিডি এই দলের জন্য যা করেছে তা কোনও মতেই অস্বীকার করা যাবে না। ম্যাচের পর ওকে বলেছিলাম, ‘এই জয় যতটা আমাদের, ততটাই তোমার। আমি চাই তুমিও আমাদের সঙ্গে উৎসব করো’। চার বছর আগে অবসর নিয়েছে ও। এখনও বেঙ্গালুরুর হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতার রেকর্ড ওর রয়েছে। আইপিএলে ওর প্রভাব কতটা সেটা এর থেকেই বোঝা যায়। ট্রফি তোলার সময় ওকেও পোডিয়ামে চাই।”

পরে নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর সঙ্গে কোহলি কথা বলতে আসার সময়ে পাশে ছিলেন ডিভিলিয়ার্স এবং গেল। কোহলি বললেন, “আমরা তিন জন একসঙ্গে কত বছর এই দলটার সঙ্গে কাটিয়েছি। আমরা তিন জনেই নিজেদের সেরা সময়টা বেঙ্গালুরুকে দিয়েছি। সেই স্মৃতি কখনও ভোলা যাবে না। তাই আজ ট্রফি জেতার সময়ে সবার আগে ওদের কথাই মাথায় আসছে। আমি ভাগ্যবান যে আজ ওদের পাশে পেয়েছি। চাই এর পর ওরা দলের সঙ্গে বেঙ্গালুরু গিয়ে ট্রফিজয়ের উৎসব করুক।” দুই ক্রিকেটার সত্যিই ট্রফি নেওয়ার সময় মঞ্চে হাজির ছিলেন।

শুধু সতীর্থই নয়, উঠে এল সহধর্মিনীর কথাও। বেঙ্গালুরুর জয় যখন নিশ্চিত, তখন ক্যামেরা ধরেছিল অনুষ্কা শর্মাকে। অবিশ্বাসী চোখ নিয়ে তখন তাঁর মুখে হাত। অনুষ্কা সম্পর্কে কোহলি বললেন, “২০১৪ সাল থেকে বেঙ্গালুরুকে সমর্থন করছে। ও নিজেও বেঙ্গালুরুর মেয়ে। আমাকে সবচেয়ে বেশি কাছ থেকে দেখেছে ও। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যখন গিয়েছি, যখন ভেঙে পড়েছি, আর কিছুই ভাল লাগেনি, তখন অনুষ্কাই আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাকে ভরসা দিয়েছে। নতুন করে উঠে দাঁড়ানোর সাহস জুগিয়েছে। সহধর্মিনী পাশে না থাকলে এর কিছুই সম্ভব হত না।”

কোহলি মন খুলে কথা বলবেন, আর একটু বিতর্ক থাকবে না তা কী হয়! ব্যতিক্রম হল না মঙ্গলবারও। কোহলি বললেন, “খুব বেশি দিন ধরে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাব না। সব কিছুরই একটা শেষ আছে। বুটজোড়া তুলে রাখার পর বাড়িতে বসে যেন এটা বলতে পারি, আমি নিজের সবটা দিয়েছি। কখনও ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে খেলতে চাই না। ২০ ওভার ফিল্ডিং করে ম্যাচে প্রভাব ফেলতে চাই। সারা জীবন এ ভাবেই খেলে এসেছি। ঈশ্বরও আমাকে সেই প্রতিভা দিয়েই পাঠিয়েছেন।”

সমালোচকদের একহাত বিরাটের বক্তব্য, “নিলামের পর অনেকেই আমাদের কৌশল নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। কিন্তু নিলামের পরের দিন থেকেই আমরা দল নিয়ে খুশি ছিলাম। দলের শক্তি নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস ছিল। প্রত্যেকের অবদান ছাড়া ট্রফি জয় কখনওই সম্ভব হত না। এই ট্রফি সবার।”

Virat Kohli RCB Royal Challengers Bengaluru Anushka Sharma Chris Gayle AB de Villiers

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।