ডার্বি ম্যাচের রেফারিরা অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।
সঠিক সময়েই কল্যাণী স্টেডিয়ামে ডার্বি খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল। ছিলেন রেফারি, লাইন্সম্যান, চতুর্থ রেফারি, ম্যাচ কমিশনার সকলেই। গ্যালারির একাংশ ভরিয়ে তৈরি ছিলেন দলীয় সমর্থকেরাও। কিন্তু, খেলাটাই শুরু করা গেল না। কারণ প্রতিপক্ষ মোহনবাগান মাঠেই আসেনি। নিয়ম মেনে আধঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ম্যাচ ওয়াক ওভার দিয়ে দেওয়া হল ইস্টবেঙ্গলকে।
প্রথম বার বড় ম্যাচে অধিনায়কের ব্যান্ড হাতে টস করতে নেমেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের অর্ণব মণ্ডল। কিন্তু, উল্টোদিকে ছিলেন না প্রতিপক্ষের অধিনায়ক। টস করবেন কার সঙ্গে! রেফারির সঙ্গে কথা বলেই ফিরতে হল তাঁকে। হাসতে হাসতেই মাঠে নামছিল পুরো দল। মাঝে মাঝেই নিজেদের মধ্যে হাসিতে ফেটে পড়ছিলেন রেফারিরা। বল নিয়ে নিজেদের মধ্যেই দেওয়া-নেওয়া করে উঠে গেলেন ডং, জিতেনরা। গুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচ কী ভাবে হাস্যকর নাটকে রূপান্তরিত হল রাতারাতি! অধিনায়ক অর্ণব তো বলেই দিলেন, ‘‘এটা বাংলার ফুটবলের জন্য খুব খারাপ বিজ্ঞাপন হল। প্রত্যাশিত ছিল না।’’ গত মরসুমে হিরো হয়ে ওঠা ডু ডং বলেন, ‘‘আমি খুব হতাশ। ভেবেছিলাম বড় ম্যাচে গোল করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হব। কিন্তু হল না।’’
অবশ্য এমনটাই হওয়ার ছিল। আগের রাতেই সাংবাদিক সম্মেলন করে মোহনবাগান কর্তারা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরা আজ ম্যাচ খেলছেন না। সেই বার্তা আগেই পৌঁছে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের কাছে। পৌঁছে গিয়েছিল আইএফএ থেকে কল্যাণী স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছেও। না খেলেই তিন পয়েন্ট পেয়ে প্রায় লিগ হাতের মুঠোয় চলে আসবে সেটাও জানতেন মেহতাব, অর্ণব, ডং-এরা। তবুও ডার্বির উত্তেজনা গায়ে মাখার থেকে বঞ্চিত হলেন তাঁরা। বঞ্চিত হলেন সমর্থকেরাও। এ ভাবে পয়েন্ট পেয়ে হতাশ ইস্টবেঙ্গলের মিড ফিল্ডার মেহতাব হোসেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘না খেলে পয়েন্ট পেতে ভাল লাগছে না একটুও! তার থেকেও বড় কথা, ফুটবলের জন্য এটা খুব খারাপ একটা বার্তা গেল।’’
ডার্বির টিম লিস্ট।
সারা বছর এই ম্যাচটি খেলার জন্য মুখিয়ে থাকেন ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ফুটবলাররা। মুখিয়ে থাকেন সমর্থকেরাও। নবাগতদের জন্য এটাই নায়ক হয়ে ওঠার মঞ্চ। প্রতি বছরের ডার্বি জন্ম দেয় নতুন তারকার। এ বার মরসুমের শুরুতেই এমন ধাক্কায় নব্য তারকাদের উদয়-সম্ভাবনা স্তব্ধ হয়ে গেল। প্রতিভা ছিল। ছিল প্রস্তুতিও। শুধু তা মঞ্চস্থ করা গেল না কিছু ফুটবল কর্তার একগুঁয়েমি আর গোয়ার্তুমি মনোভাবের জন্য। এক পক্ষ যে হেতু ‘আজ খেলব না’ বলেছে, তাই অন্য পক্ষকে বলতেই হল ‘আমরা নির্ধারিত দিন ছাড়া খেলব না’। আর যার হাতে সবটা ছিল সেই আইএফএ ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকল। যার ফলে জৌলুসহীন কলকাতা লিগের একমাত্র প্রত্যাশাও পূরণ হল না বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের কাছে। মেহতাব বলছিলেন, ‘‘প্লেয়াররা সব সময় ডার্বি খেলার জন্য মুখিয়ে থাকে। এই দিনটির জন্যই সারা বছর ধরে চলে প্রস্তুতি। সমর্থকরাও একরাশ আশা নিয়ে বসে থাকেন। সবাই বঞ্চিত হল।’’
ওয়াক ওভার পেয়ে কলকাতা লিগ জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। আর দরকার এক পয়েন্ট। খেলেই সেই এক পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। যার ফলে রেকর্ড গড়ে টানা সাত বার লিগ জিতে নিতে চলেছে লাল-হলুদ।
আরও খবর
কাল বড় ম্যাচ খেলছে না মোহনবাগান, ওয়াকওভার পাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy