ডার্বির আগের দিনও মাঠ নিয়ে আলোচনা চলল। ফুটবলার থেকে দুই দলের কর্মকর্তাদের অনেককেই এ দিন মাঠ নিয়ে চিন্তায় পড়তে দেখা গিয়েছে। তবে বিতর্ক এড়াতে প্রকাশ্যে তা নিয়ে বিরূপ কিছু বলতে চাননি কোনও পক্ষই। শুক্রবার বিকেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠ দেখেন দুই দলের কোচেরাই। এক দিকে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ও তাঁর দল। অন্য পক্ষে সহকারী কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী, কর্নেল গ্লেনরা। মাঠে দুই রকম ঘাস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেক জায়গায় মাটি দেখাও যাচ্ছে। তবে মাঠ দেখার পর আইজল বা অন্য কিছু জায়গার চেয়ে শিলিগুড়ির মাঠকে অনেকটা ভাল বলেই মনে করছেন মোহনবাগানের ফুটবলার কর্নেল গ্লেন। মাঠ দেখার পর প্রশ্ন করা হলে এমনটাই জানান। মাঠে না খেলেই তাঁর এ ধরনের মন্তব্য বিতর্ক এড়াতেই করা বলে মনে করছেন অনেকে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম লাল-হলুদের হোম গ্রাউন্ড। তাই কিছু বলার আগে তাদেরও ভাবতে হচ্ছে। কোচের কথায়, ‘‘মাঠ খুব খারাপ নয়। এমনি কোনও সমস্যা নেই।’’ তবে আই লিগের মতো ম্যাচে মাঠের জন্য কোনও দল ‘অ্যাডভান্টেজ’ পাবে তা মনে করেন না বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। মাঠ যাই হোক গ্লেনের কথায়, ‘‘কারও কাছেই কিন্তু ম্যাচ সোজা হবে না।’’
শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গ ইস্টবেঙ্গল ভক্ত-সমর্থকে ভরা। তা অজানা নয় দু’দলেরই। আর সেটাই ঘরের মাঠে তাদের উজ্জীবিত করবে, বাড়তি সুবিধা জোগাবে বলে মনে করেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সমর্থক থাকাটা একটা বড় ব্যাপার। তার জন্য কিছুটা বাড়তি উৎসাহ তো থাকবেই। মাঠে সেটা ফুটবলারদের উজ্জীবিত করতে সাহায্য করবে। আমরাও তাদের জন্য যা করণীয় করব এটা বলতে পারি।’’ সে ক্ষেত্রে মাঠে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাড়তি অক্সিজেন মেলা ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে যতটা সুবিধার হবে তাঁদের ক্ষেত্রে ততটা নয় বলেই মনে করেন গ্লেন। গ্লেন জানিয়ে দিয়েছেন, সমর্থকদের পাশে পাওয়া প্রতিপক্ষের কাছে একটা বড় সাহায্য হবে। আমরাও লড়াই করতে প্রস্তুত। আত্মবিশ্বাসী। আমাদের পয়েন্ট নিতে হবে। সে ভাবেই আমরা খেলব।’’
শিলিগুড়ির ডার্বি বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যদের কাছে কার্যত বাঁচা মরার লড়াই। মেহতাব বা রবার্ট কেউই তা অস্বীকার করতে পারেন না। মেহতাব হোসেনের এটি ২৫তম ডার্বি হতে চলেছে। মেহতাবের কথায়, ‘‘অনেক ডার্বি খেলেছি। অনেক ম্যাচ জিতেছি। অনেক ড্র করেছি, হেরেছি। তবে এই ম্যাচে এমন একটা জায়গা আমরা যে জিতলে আমরা খেতাবের লড়াইতে থাকব। ড্র হলে হবে না। তাই ‘ডু অর ডাই’ এ ভাবেই আমাদের খেলতে হবে।’’ শিলিগুড়িতে সেই লড়াইতে সমর্থকেরা একটি বড় ভরসা বলে মনে করছে লাল-হলুদ শিবির।
মাঠের বাইরে গ্যালারিতেই শুধু নয়। ডার্বির মতো উত্তেজনা প্রবণ ম্যাচে মাঠের মধ্যেও অনেক কিছু ঘটার সম্ভবনা থাকে। ফুটবলারদের তাই দুই পক্ষের কোচরাই ঠিক ভাবে খেলা এগিয়ে নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য মনে করেন, ‘‘খেলার ধরনটাই অনেক সময় এমন হয় যে নিয়ন্ত্রণে থাকে না।’’ প্রতিপক্ষের সহকারী কোচ শঙ্করলাল জানান, ডার্বি সে সেখানে যখনই হোক তা উত্তেজনায় ভরা থাকে। তবে ফুটবলারদের বলা থাকে কেউ যাতে কার্ড না দেখে। কোনও বিতর্কে না জড়ায়। তবু এমন কিছু ঘটে যা নিয়ন্ত্রণ করা আয়ত্বের বাইরেই থাকে। আজ, কাঞ্চনজঙ্ঘা কী সের সাক্ষী হবে সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।