ম্যাচের নায়ক। গোলের পরে ক্যালাম। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
মেহতাবের কর্নার থেকে হেডে গোলটি করেই গ্যালারির দেখে আঙুল তুলে ছুটে আসছিলেন গোলদাতা ক্যালাম অ্যাঙ্গাস। শরীরে ভাষাটা যেন ‘আরে দিওয়ানো, আমাকে চেনো’ মার্কা।
ম্যাচ শেষের পর বৃষ্টি ও ঘামে ভেজা জার্সিটা খুলে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় সম্প্রচারকারী সংস্থার টিভি ক্রু জানতে চাইলেন গোলের পর গ্যালারিতে কাদের ইশারা করছিলেন? ক্যালামের চটজলদি উত্তর, ‘‘যারা এই অঝোর বৃষ্টিতেও আমাদের সমর্থন করতে এসেছিল তাদের।’’
ক্যালামের গোল বাদে এ দিনের বাকি ম্যাচের ছবিটা কী রকম? ইস্টবেঙ্গল কোচ মর্গ্যানের মন্তব্যটাই এই ম্যাচের এককথায় নির্যাস। ‘‘আমাদের গোলটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। শেষমেশ যে ওটা হয়েছে সেটাই স্বস্তির। যাক, আজ গোল খেতে হয়নি।’’
বৃষ্টিভেজা ছুটির বিকেলে বারাসত স্টেডিয়ামে কলকাতা লিগের জায়ান্ট কিলার টালিগঞ্জ অগ্রগামীর (৫ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট) বাধা টপকে পুরো তিন পয়েন্ট পেল ইস্টবেঙ্গল। পাঁচ ম্যাচে পনেরো পয়েন্ট নিয়ে আপাতত শীর্ষে, আসল কথা এটাই।
বছর তিনেক আগেও ইস্টবেঙ্গলে মর্গ্যানের সহকারী ছিলেন এ দিনের টালিগঞ্জ কোচ রঞ্জন চৌধুরী। এ দিনের ম্যাচে তাঁর ‘হিম্মত’ দেখানোর ম্যাচ হয়ে গিয়েছিল একটা সময়। লেক কালীবাড়ির উল্টো দিকে ‘নাইন এ সাইড’ মাঠে প্র্যাকটিস করিয়েই মহমেডানকে হারিয়েছেন র়ঞ্জন। এ দিনও অঘটন ঘটাতে পারতেন যদি অ্যালফ্রেডের শট বারে লেগে না বাইরে যেত! শেষের দিকে গোল খেয়ে টালিগঞ্জ কোচের খেদোক্তি, ‘‘আমার ছেলেরা একটাই ভুল করল। আর সেখান থেকেই গোলটা করে গেল ওরা।’’
মর্গ্যানের প্রাক্তন সহকারী জানতেন এই ইস্টবেঙ্গল দল সাজায় ৪-১-৩-২। আর খেলা তৈরির কারিগর মেহতাব আর দুই সাইড ব্যাক। যাঁরা অবিনাশ, ডিকাদের দিয়ে আক্রমণের রাস্তা তৈরি করে। রঞ্জন পাল্টা হিসেবে আলফ্রেড, রাজা আর সুরাবুদ্দিনদের ত্রিভুজ দিয়ে সেই রাস্তা ব্লক করে দিয়েছিলেন প্রথমেই। যাতে রফিকরা মাঝমাঠে তালগোল পাকিয়ে যান। এই সুযোগে প্রথমার্ধে মাঝমাঠ পুরোপুরি চলে গিয়েছিল মুর অ্যাভেনিউয়ের ক্লাবের দখলে।
কিন্তু শেষবেলায় আচমকা গোল খেয়ে তাদের পরিকল্পনা কিছুটা বেসামাল হয়ে যায়। টালিগ়ঞ্জ কোচ তা সত্ত্বেও রক্ষণাত্মক না হয়ে বুক চিতিয়ে দলকে আক্রমণাত্মক খেলিয়ে গেলেন। যা দেখে মর্গ্যানের শংসাপত্র, ‘‘বিপক্ষকে সম্মান করুন। ওদের কোচ-ফুটবলারদের প্রশংসা করবেন না?’’
এ দিন জিতে তাদের আকাঙ্খিত হেপ্টা লিগের মাঝপথ পেরিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু এখনও রক্ষণে অনেক ফাঁকফোকর। আদিলেজাদের ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে সাহেব কোচের। বাকি পাঁচ প্রতিপক্ষ যদি এই জায়গায় আঘাত করে? মর্গ্যানের হয়ে জবাব দিচ্ছেন তাঁর একদা প্রতিপক্ষ বর্তমান টালিগঞ্জ কোচ। ‘‘ডার্বিতেই ঠিক হয়ে যাবে কলকাতা লিগ কার। তবে সেখানে কিছুটা এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। কারণ মর্গ্যানের এই টিমে বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকা ফুটবলার বেশি।’’
ইস্টবেঙ্গল: লুইস, সামাদ, অর্ণব, ক্যালাম, নারায়ণ, অবিনাশ (প্রহ্লাদ), মেহতাব, রফিক, লালরিন্দিকা (বিকাশ), আদিলেজা (ডং), জিতেন।
আজ কলকাতা লিগে
মোহনবাগান বনাম পিয়ারলেস (মোহনবাগান, ৫-৩০)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy