শিল্ড ফাইনালের ডার্বিতে সারা ম্যাচে আধিপত্য নিয়ে খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। ১২০ মিনিটে একটিও ভুল করেননি লাল-হলুদ গোলরক্ষক প্রভসুখন সিংহ গিল। তবু তাঁকে টাইব্রেকারের আগে তুলে নিয়ে দুর্গরক্ষক হিসেবে দেবজিৎ মজুমদারকে নামানো হয়। যে সিদ্ধান্ত নিয়ে হারের চব্বিশ ঘণ্টা পরেও আলোচনা অব্যাহত। এর পরে সবচেয়ে বড় বোমা ফাটান স্বয়ং লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রুসো। সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দেন, সহকারীদের কথা শুনে দেবজিৎকে তিনি নামিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।
এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি ইস্টবেঙ্গল শিবিরে প্রধান কোচের সঙ্গে অন্যান্য সহকারী কোচের মতবিরোধ চলছে? সেই ফাটলের কারণেই কি শিল্ড হাতছাড়া হল? তা না হলে কেন প্রকাশ্যে সহকারী কোচের কথা বললেন অস্কার? শোনা যাচ্ছে, দেবজিৎকে নামানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক কোচ সন্দীপ নন্দী। কারণ টাইব্রেকার বাঁচানোর ক্ষেত্রে প্রভসুখনের তুলনায় দেবজিতের পরিসংখ্যান ভাল। এই পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করেই দেবজিৎকে নামানো হয়। তবে অস্কার কিন্তু কারও নাম করেননি। প্রশ্ন উঠছে, লাল-হলুদ কোচের নিশানায় তবে কে?
দেবজিৎকে নামানো নিয়ে অস্কার শনিবার ম্যাচের পরে বলেছিলেন, “সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। সহকারী কোচদের কথা শুনে আমি দেবজিৎকে নামিয়েছিলাম। মনে রাখা উচিত ছিল প্রভসুখন ম্যাচে পেনাল্টি সামলেছিল।” প্রসঙ্গত প্রথমার্ধে গোলের নীচে তিনি থাকাকালীন জেসন কামিংস ক্রসবারের উপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেন।
পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে কেন সাউল ক্রেসপো, আনোয়ার আলির মতো ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও জয় গুপ্তকে টাইব্রেকারে শট মারতে দেওয়া হল? উত্তরে অস্কার বলেছেন, “ফুটবলারদের টাইব্রেকারে শট নেওয়ার ব্যাপারে আগে থেকেই জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তখন জয় আগ্রহ দেখিয়েছিল। সেই কারণেই ওকে শট নিতে দেওয়া হয়।”
পেনাল্টি ফস্কানোর পরে আফশোস যাচ্ছে না জয়েরও। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, এই ভুলের ক্ষতিপূরণ করবেন দলকে দশটি ট্রফি দিয়ে। সমাজমাধ্যমে জয় রবিবার লিখেছেন, “সমর্থক, ক্লাব এবং ইস্টবেঙ্গলের ভক্তদের বলতে চাই, পেনাল্টি নষ্টের সব দায় আমার। একটি ভুলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দশটি ট্রফি দেব ক্লাবকে। এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।”
অস্কারও এ দিন সমাজমাধ্যমে ভক্তদের বার্তা দিয়ে বলেছেন, “পেনাল্টি শুট আউটের কষ্ট অনুভব করতে পারছি। কঠোর পরিশ্রম করে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। এই বেদনাকে সঙ্গী করেই সামনের দিকে এগিয়ে যাব।” সোমবার সকালে গোয়া উড়ে যাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। সেখানেই প্রস্তুতি নেবেন সাউল ক্রেসপোরা।
শিল্ড জয়ের পরে চিংড়ি হাতে দিমিত্রি। ছবি: ফেসবুক।
এ দিকে ইরানে প্রিয় দল না যাওয়ায় মোহনবাগান সমর্থকদের বিক্ষোভ শিল্ড জয়ের পরে অনেকটাই প্রশমিত। কোচ হোসে মলিনা দু’দিনের ছুটি দিয়েছেন। মঙ্গলবার ও বুধবার কলকাতায় অনুশীলন করে বৃহস্পতিবার দল গোয়ার উদ্দেশে রওনা দেবে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কোচ দিমিত্রি পেত্রাতসদের জানিয়ে দিয়েছেন, শিল্ড জয়ের আনন্দে ভেসে না গিয়ে সুপার কাপেও ট্রফি জয়ের মানসিকতা নিয়ে নামতে হবে। সুপার কাপে ২৫ অক্টোবর অভিযান শুরু করবে দুই প্রধানই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)