Advertisement
E-Paper

খেলতেন কি না সন্দেহ! ভরসা হারানো দিয়ামানতাকোসেই শাপমুক্তি ইস্টবেঙ্গলের, ডার্বিতে জোড়া গোল করে জাত চেনালেন লাল-হলুদ স্ট্রাইকার

মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে তাঁকে রাখেননি অস্কার ব্রুজ়ো। হামিদ আহদাদ চোট না পেলে আদৌ ডুরান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালে নামতেন কি না সন্দেহ। সেই দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসেই শাপমুক্তি ইস্টবেঙ্গলের।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৫ ২১:৪৭
football

দিয়ামানতাকোসের উল্লাস। ছবি: সমাজমাধ্যম।

মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে তাঁকে রাখেননি অস্কার ব্রুজ়ো। হামিদ আহদাদ চোট না পেলে আদৌ ডুরান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালে নামতেন কি না সন্দেহ। সেই দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসেই শাপমুক্তি ইস্টবেঙ্গলের। সিনিয়র দলের ডার্বিতে দেড় বছর পর জিতল তারা।

ডার্বি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে যাবতীয় আলোচনা ছিল ইস্টবেঙ্গলের চার বিদেশিকে নিয়েই। হামিদ গোল পাবেন কি? মিগুয়েল ফিগুয়েরা মাঝমাঠ সামলাতে পারবেন তো? রক্ষণে কেভিন সিবিলের উপর ভরসা রাখা কি বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে না? কোথাও কোনও আলোচনায় এক মিনিটও খরচ করা হয়নি দিয়ামানতাকোসকে নিয়ে।

আসলে ইস্টবেঙ্গল জনতা ভরসাই হারিয়ে ফেলেছিল দিয়ামানতাকোসের উপর। মরসুম শুরুর আগে তাঁকে ছেঁটে ফেলা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। চুক্তিভঙ্গ করা যায়নি জরিমানা হিসাবে মোটা টাকা দিতে হবে বলে। তাই কিছুটা দায়সারা ভাবেই তাঁকে রেখে দেওয়া হয়েছিল। কোচ অস্কার ব্রুজ়োও যে খুব একটা ভরসা রাখতে পেরেছিলেন তা-ও নয়। অথচ ব্রাত্য দিয়ামানতাকোসই দীর্ঘ দিন পর ডার্বি জয়ের স্বাদ এনে দিলেন লাল-হলুদ জনতাকে।

গত মরসুমের শুরুতে ইস্টবেঙ্গল নিয়েছিল দিয়ামানতাকোসকে। ঠিক তার আগের মরসুমেই কেরল ব্লাস্টার্সের হয়ে খেলে আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন তিনি। ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়ে শুরুতেই সাফল্য না পেলেও ধীরে ধীরে দলের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছিলেন। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে তিন ম্যাচে চার গোল করেছিলেন। মাদিহ তালালের সঙ্গে তাঁর জুটি ক্রমশ জমে উঠছিল। তালাল চোট পেয়ে মরসুম থেকে ছিটকে যেতেই দিয়ামানতাকোসও হারিয়ে যান।

আইএসএলের একের পর এক ম্যাচে শুধুই হতাশা উপহার দিয়েছেন দিয়ামানতাকোস। তিনি ছাড়া ইস্টবেঙ্গলের হাতে স্ট্রাইকারও ছিল না বিশেষ। অগত্যা প্রতি ম্যাচে প্রথম একাদশে তাঁকে রাখতেই হচ্ছিল। একাধিক গোল নষ্ট, অকারণে মাঠে পড়ে গিয়ে নাটক, রাগারাগি করে লাল কার্ড দেখা— দিয়ামানতাকোসের খেলায় সবই ছিল। শুধু গোল ছিল না। আইএসএলের ১৯টা ম্যাচে মাত্র চারটে গোল করেছিলেন। তাঁর মতো প্রথম সারির স্ট্রাইকারের পক্ষে যা একেবারেই বেমানান।

স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের মোহভঙ্গ হয়। মরসুমের আগে দলবদলের সময় দিয়ামানতাকোসকে ছেঁটে ফেলার কথা বার বার আলোচনায় এসেছে। তবে জরিমানার ভয়ে রেখে দেওয়া হয়। অস্কারও দিয়ামানতাকোসের উপর ভরসা রাখতে পারেননি। তাই হামিদকে আনা হয় বিকল্প স্ট্রাইকার হিসাবে। ডুরান্ড কাপে গোল করে হামিদ বুঝিয়েও দেন, তিনি ভাল খেললে এই ইস্টবেঙ্গল দলে দিয়ামানতাকোসের কোনও জায়গা নেই।

রবিবার সেই হামিদের চোট আচমকা একটা সুযোগ এনে দিয়েছিল দিয়ামানতাকোসের কাছে। দলের সঙ্গে ডাগআউটে বসে খেলা দেখছিলেন। ১০ মিনিট নাগাদ হামিদ খোঁড়াতে শুরু করতেই তাঁকে ওয়ার্ম-আপ করতে পাঠানো হল। পাঁচ মিনিট পরেই পরিবর্ত হিসাবে মাঠে। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল পেনাল্টি পাওয়ার পর অভিজ্ঞ সাউল ক্রেসপো নয়, বল নিয়ে এগিয়ে গেলেন দিয়ামানতাকোসই। জোরালো শটে বিশাল কাইথকে পরাস্ত করে এগিয়ে দিলেন ইস্টবেঙ্গলকে।

দ্বিতীয় গোলে নিজের জাত চেনালেন লাল-হলুদ স্ট্রাইকার। মহেশের কাছ থেকে বক্সে বলটা পাওয়ার সময় তাঁর ঘাড়ের কাছে ছিলেন আলবের্তো রদ্রিগেস। মাথা উঁচু করে গোলটা দেখেনওনি দিয়ামানতাকোস। সপাটে শট আলবের্তোর গায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যেতেই খুলে ফেললেন জার্সি। ছুট লাগালেন কর্নার ফ্ল্যাগের দিকে। বুকে হাত রেখে বার বার বললেন, আমি আছি।

ম্যাচের শেষে সেই দিয়ামানতাকোসকেই পাওয়া গেল অন্য রূপে। মহম্মদ রশিদের জার্সি হাতে নিয়ে চিত্রগ্রাহকদের সামনে পোজ় দিলেন। ইস্টবেঙ্গল আগেই জানিয়েছিল, ডার্বি জিতলে তা উৎসর্গ করা হবে রশিদের বাবাকে, যিনি শুক্রবার প্রয়াত হয়েছেন। কথা রাখলেন দিয়ামানতাকোস।

কথায় আছে, ভোরের সূর্য বলে দেয় বাকি দিন কেমন যাবে। রবিবারের পারফরম্যান্সে কি দিয়ামানতাকোস এটাই বোঝালেন, এই মরসুমটা তাঁরই?

Dimitrios Diamantakos East Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy