১৯৯৮ সালে শেষ ফুটবল বিশ্বকাপে খেলেছিল নরওয়ে। তার পর থেকে লাগাতার ব্যর্থতা। অবশেষে দেশের ফুটবলের সেরা তারকা আর্লিং হালান্ডের পায়ে আবার বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার ছাড়পত্র অর্জন করল নরওয়ে। ২৮ বছর পর। নরওয়ের কাছে হেরে আবার বিশ্বকাপে খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল ইটালির। গত দুই বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি চার বারের বিশ্বজয়ীরা। আবার সেই সংশয় দেখা দিয়েছে। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি আফ্রিকার ফুটবল শক্তি নাইজিরিয়াও।
বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের লড়াই ছিল নরওয়ে ও ইটালির মধ্যে। নরওয়ের প্রয়োজন ছিল ড্র। ইটালিকে জিততেই হত। তা-ও ৯ গোলের ব্যবধানে। ম্যাচের ১১ মিনিটে ইটালিকে এগিয়ে দেন ফ্রানসেস্কো পিয়ো এসপোসিতো। ইটালির খেলার মধ্যে তাগিদ লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথমার্ধে আর গোল করতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধে বদলে যায় নরওয়ের খেলা। অনেক বেশি আক্রমণ শুরু করে তারা। ফলও পায়। ৬৩ মিনিটে গোল করে সমতা ফেরান আন্তোনিয়ো নুসা। ফলে আরও চাপ বাড়ে ইটালির উপর। তার পর দু’মিনিটের হালান্ড ঝড়। ৭৮ ও ৭৯ মিনিটে জোড়া গোল করে খেলার ফল নিশ্চিত করে দেন হালান্ড। ইটালির ক্লান্ত রক্ষণের সুযোগ কাজে লাগান তিনি। যোগ্যতা অর্জন পর্বে ১৬টি গোল করলেন হালান্ড। ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সিটির পাশাপাশি দেশের হয়েও ছন্দে রয়েছেন স্ট্রাইকার। সংযুক্তি সময়ে নরওয়ের চার নম্বর গোল করেন ইয়ুর্গেন স্ট্রান্ড লারসেন।
আরও এক বার যোগ্যতা অর্জন পর্বে হতাশ করল ইটালি। টানা তৃতীয় বার কি বিশ্বকাপে দেখা যাবে না ইটালিকে? প্লে-অফেও লড়াই সহজ হবে না। সেখান থেকে মাত্র চারটি দল মূল পর্বে উঠবে। সেই চার দলের মধ্যে ইটালি জায়গা করতে পারে কি না সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন:
আফ্রিকার দলগুলির মধ্যে আবার চমক দিল কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। প্লে-অফের ফাইনালে নাইজিরিয়াকে হারিয়ে দিল তারা। ফিফা ক্রমতালিকায় নাইজিরিয়ার কঙ্গোর থেকে ১৬ ধাপ উপরে। কিন্তু খেলায় তা বোঝা যায়নি। তিন মিনিটে এগিয়ে যায় নাইজিরিয়া। ৩২ মিনিটে সমতা ফেরায় কঙ্গো। নির্ধারিত সময়ে আর গোল হয়নি। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-৩ গোলে জেতে কঙ্গো। ফলে বিদায় নেয় নাইজিরিয়া। আফ্রিকা থেকে বিশ্বকাপে যে ন’টি দেশ সরাসরি সুযোগ পেয়েছে তারা হল— আলজেরিয়া, কেপ ভার্দে, ইজিপ্ট, ঘানা, আইভরি কোস্ট, মরক্কো, সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তিউনিসিয়া।
কঙ্গো এখনও পর্যন্ত এক বারই বিশ্বকাপ খেলেছে। ১০৭৪ সালে। তখন তাদের নাম ছিল জ়াইরে। সে বার অবশ্য একটিও গোল করতে পারেনি তারা। খেয়েছিল ১৪টি গোল। তার মধ্যে যুগোশ্লাভিয়ার বিরুদ্ধে ৯ গোল খেয়েছিল জ়াইরে। এ বারও সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি কঙ্গো। প্লে-অফ জেতায় ছ’দেশের ইন্টার-কনফেডারেশন প্রতিযোগিতায় জায়গা পেয়েছে তারা। বলিভিয়া ও নিউ ক্যালেডনিয়া আগেই জায়গা করে নিয়েছিল। তিনটি জায়গা এখনও ফাঁকা। জামাইকা, পানামা, সুরিনাম, কুরাসাও, হন্ডুরাস, হাইতি ও কোস্টা রিকার মধ্যে যে কোনও তিনটি দল জায়গা করে নেবে। ছ’দলের মধ্যে ক্রমতালিকায় থাকা শীর্ষ দু’দল ফাইনাল খেলবে। বাকি চার দল নিজেদের মধ্যে এক ম্যাচের সেমিফাইনাল খেলে ফাইনালে উঠবে। দুই ফাইনালের দুই জয়ী দল বিশ্বকাপের মূলপর্বে উঠবে। অর্থাৎ, এখনও বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ রয়েছে কঙ্গোর।