মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কি পারবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র নক-আউটে যোগ্যতা অর্জন করতে? যুবভারতীতে মঙ্গলবার রাতে আহাল এফসি-র বিরুদ্ধে ০-১ হারের পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। কারণ, এ বার লড়াই আরও কঠিন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ম্যাচ ইরানের সেপাহান এফসি-র বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে। তার পরে খেলা রয়েছে জর্ডনের আল হুসেনের বিরুদ্ধে আগামী ২১ অক্টোবর। তাই মোহনবাগান মরিয়া সেপাহানের বিরুদ্ধেমনবীর সিংহকে খেলাতে।
ডুরান্ড কাপের ডার্বিতে চোটের কারণে খেলতে পারেননি মনবীর। ১-২ গোলে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হেরে বিদায় নিয়েছিল মোহনবাগান। মঙ্গলবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র প্রথম ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের আহাল এফসি-র বিরুদ্ধেও খেলতে পারেননি মনবীর। সূত্রের খবর, সবুজ-মেরুনের স্ট্রাইকার এখন অনেকটাই সুস্থ। তাই মনবীরকে রেখেই সেপাহান ম্যাচের রণকৌশল সাজাচ্ছেন কোচ হোসে ফ্রান্সিসকো মলিনা। তবে অনিরুদ্ধ থাপা ও আলবার্তো রদ্রিগেসকে নিয়ে অবশ্য কিছুটা অস্বস্তি বাড়ল তাঁর। দুই তারকাই সামান্য চোট পেয়েছেন আহাল এফসি ম্যাচে। অনিরুদ্ধ ও আলবার্তোকে দু’দিন বিশ্রামের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সেপাহান এফসিকে নিয়ে এখন থেকেই উদ্বেগ বাড়ছে সবুজ-মেরুন শিবিরে। ফ্রান্সের অনূর্ধ্ব-২০ ও ২১ জাতীয় দলে খেলা স্ট্রাইকার এনজ়ো ক্রিভেল্লি খেলেন এই ক্লাবে। এ ছাড়াও আছেন ইরান জাতীয় দলের একাধিক ফুটবলার। এঁদের মধ্যে ডিফেন্ডার আরিয়া ইউসেফি কাফা নেশনস কাপে ভারতের বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয়ী ম্যাচে পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিলেন। এই মরসুমে অবশ্য খুব একটা স্বস্তিতে নেই সেপাহান। ইরানের পেশাদার লিগে (পার্সিয়ান গাল্ফ প্রো লিগ) ১৬টি দলের মধ্যে রয়েছে ১৩ নম্বরে। তিনটি ম্যাচ থেকে অর্জিত পয়েন্ট মাত্র দুই (একটি হার ও দুটি ড্র)। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র প্রথম ম্যাচেও হেরেছে জর্ডনের আল হুসেনের কাছে ০-১ গোলে। তা সত্ত্বেও শক্তির বিচারে মোহনবাগানের চেয়ে অনেক এগিয়ে সেপাহান। যুবভারতীতে মঙ্গলবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র প্রথম ম্যাচে আহাল এফসি-র বিরুদ্ধে ০-১ হারের পরে মলিনা বলছিলেন, ‘‘সব ম্যাচ জিতব কিনা জানি না। তবে আমরা লড়াই করব।’’
আহাল এফসি-র বিরুদ্ধে হারের ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি বুধবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে মোহনবাগানে। প্রথম একাদশে খেলা ফুটবলারদের জন্য ছিল ‘রিকভারি সেশন’। বাকি ফুটবলারেরা অনুশীলন করেছেন। মাঠে নামার আগে ফুটবলারদের সঙ্গে আহাল এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচে ব্যর্থতার ময়নাতদন্তের পরে মলিনা দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেছেন।
যুবভারতীতে হারের পরে মঙ্গলবার রাতে মোহনবাগান কোচ দাবি করেছিলেন, গোলের অসংখ্য সুযোগ নষ্টের জন্যই জিততে পারেননি। বলেছিলেন, ‘‘আমি দলের খেলায় খুশি। আমরা একটা গোল করতে পারলেই ম্যাচের ফল অন্য রকম হত।’’ প্রথম একাদশে তিন বিদেশি জেসন কামিংস, টম আলড্রেড ও আলবার্তো রদ্রিগেসকে রেখেছিলেন মলিনা। পরিবর্ত হিসেবে নামান জেমি ম্যাকলারেন ও রবসন রবিনহোকে। আর এক বিদেশি দিমিত্রি পেত্রাতসকে পুরো ম্যাচেই বসিয়ে রেখেছিলেন রিজ়ার্ভ বেঞ্চে। ম্যাচের পরে অস্ট্রেলীয় তারকা কোচের সঙ্গে বিবাদেও জড়িয়ে পড়েছিলেন মাঠের মধ্যে। বুধবার অনুশীলনের আগে মলিনা আলাদা করে কথা বলেন দিমিত্রির সঙ্গে। তিনি অবশ্য মানতে রাজি নন, প্রথম একাদশে ছয় বিদেশিকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘সেরা প্রথম একাদশই নামিয়েছিলাম।’’
২০১৮ থেকে ’২২ পর্যন্ত স্পেনের ফুটবল ফেডারেশনের স্পোর্টিং ডিরেক্টর ছিলেন মলিনা। ভারতীয় ফুটবলে অভিষেকের মরসুমেই এটিকে-কে আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। গত বার মোহনবাগানকে দ্বিমুকুট জিতিয়েছেন। সেই মলিনা কি ম্যাকলারেন, দিমিত্রির মতো ফুটবলারকে বাদ দিয়ে প্রথম একাদশ গড়ার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবেন? নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনওকারণ রয়েছে?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)