Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Mohun Bagan

শেষ মুহূর্তের গোলে মোহনবাগানকে হারাল চেন্নাইয়িন, আইএসএলের লড়াইয়ে চাপে সবুজ-মেরুন

পয়েন্ট তালিকায় ১১ নম্বরে থাকা চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে হেরে গেল মোহনবাগান। যে ম্যাচে তাদের হেসে খেলে জেতার কথা, সেটাই হেরে গেল শেষ সেকেন্ডের গোলে।

football

চেন্নাইয়িনের ফুটবলারের সঙ্গে বল দখলের লড়াই মোহনবাগানের হেক্টর ইয়ুস্তের। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ ২১:৩৩
Share: Save:

মোহনবাগান ২ (কাউকো, পেত্রাতোস)
চেন্নাইয়িন ৩ (মারে, এডওয়ার্ডস, ইরফান)

পয়েন্ট তালিকায় ১১ নম্বরে থাকা চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে হেরে গেল মোহনবাগান। যে ম্যাচে তাদের হেসে খেলে জেতার কথা, সেটাই হেরে গেল শেষ সেকেন্ডের গোলে। সংযুক্তি সময়ে বিতর্কিত পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলেও শেষ রক্ষা হল না। যুবভারতী স্টেডিয়ামে মোহনবাগান হারল ২-৩ গোলে। ম্যাচের খলনায়ক বিশাল কায়েথ। চেন্নাইয়িনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় গোলের নেপথ্যে তিনিই দায়ী।

হেরে গিয়ে আইএসএলের পয়েন্ট তালিকাতেও শীর্ষে ওঠা হল না সবুজ-মেরুনের। মুম্বই সিটিই শীর্ষে থাকল। তাদের ১৯ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট। মোহনবাগানের ১৯ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট। মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন জনি কাউকো এবং দিমিত্রি পেত্রাতোস। চেন্নাইয়িনের হয়ে গোল জর্ডান মারে, রায়ান এডওয়ার্ডস এবং ইরফান ইয়াদওয়াদের। তবে ভুললে চলবে না চেন্নাই গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদারের কথা। শেষ মুহূর্তে দু’টি সেভ না করলে চেন্নাইয়িনের ড্র করার কথা।

অসুস্থ থাকায় আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে আসতে পারেননি। এ দিন ডাগআউটেও ছিলেন না আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। দায়িত্ব সামলান সহকারী কোচ ম্যানুয়েল কাস্তালানা। কিন্তু পরিকল্পনার অভাব আগাগোড়া দেখা গেল মোহনবাগানের খেলায়। গোটা ম্যাচে প্রচুর সুযোগ নষ্ট করেছে তারা। বিপক্ষকে আক্রমণে আসার সুযোগ করে দিয়েছে বার বার। মাঝে আক্রমণ হলেও তা বজায় রাখতে পারেনি। বিশাল শেষ দিকে যে দু’টি ভুল করলেন, তা স্কুল স্তরের ফুটবলেও কেউ করবেন না।

মোহনবাগানের এ দিনের ম্যাচে কাউকোর খেলা নিয়ে জল্পনা ছিল। তাঁকে প্রথম একাদশেই রাখেন কাস্তালেনা। শুরু থেকেই আক্রমণ করতে থাকে মোহনবাগান। আর্মান্দো সাদিকুর সামনে একটি সুযোগ এসেছিল। তবে কিছু ক্ষণ পরেই দীপক টাংরির সৌজন্যে গোল হজম করা থেকে বেঁচে যায় মোহনবাগান। তিন জনের ডিফেন্স বদলে আরও এক জনকে নিয়ে আসেন হাবাস। তবে ক্রমশ খেলায় আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে চেন্নাইয়িন। ১৬ মিনিটে রাফায়েল ক্রিভেলারোর ফ্রিকিক থেকে মারের হেড অল্পের জন্য বাইরে যায়।

পর ক্ষণেই লিস্টন কোলাসো গোলে শট করেছিলেন। সেটি বাঁচিয়ে দেন চেন্নাইয়িনের গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার। এর পর সাদিকুও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। মোহনবাগানের আক্রমণ ক্রমশ বাড়ছিল। সুযোগ কাজে লাগিয়েই এগিয়ে দেন কাউকো। ভিন্সি ব্যারেটোকে কাটিয়ে কাউকোকে পাস দিয়েছিলেন লিস্টন। সেই বল থেকে গোল করেন ফিনল্যান্ডের ফুটবলার।

এর পর ক্রমাগত আক্রমণ করতে থাকে মোহনবাগান। কখনও লিস্টন, কখনও কাউকো উঠে গিয়ে চেন্নাইয়িনের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত রাখছিলেন। বিরতির আগে আবার একটি সুযোগ পেয়েছিলেন কাউকো। বাঁ দিক থেকে সাদিকুর ক্রস ভেসে এসেছিল কাউকোর কাছে। বক্সের বাইরে থেকে মারা কাউকোর শট সহজেই বাঁচিয়ে দেন দেবজিৎ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই শুভাশিস বসুর চোট পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ব্যারেটোর সঙ্গে সংঘর্ষে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু ফিজ়িয়োর তৎপরতায় কিছু ক্ষণ পরেই উঠে দাঁড়ান। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই আক্রমণে উঠছিল সমানতালে। দিমিত্রি পেত্রাতোসের একটি শট কোনও রকমে বাঁচান দেবজিৎ। ম্যাচ আরও মোহনবাগানের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

কিন্তু আক্রমণে সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হয় মোহনবাগানকে। ৭২ মিনিটে সমতা ফেরায় চেন্নাইয়িন। ডান দিক থেকে একাই আক্রমণে ওঠেন মারে। সামনে থাকা টাংরিকে অনায়াসে কাটিয়ে নীচু শট নেন গোলে। বিশাল কায়েথ তা বাঁচাতে পারেননি। যুবভারতী স্তব্ধ করে ৮০ মিনিটে এগিয়ে যায় চেন্নাইয়িন। এ ক্ষেত্রে দোষ প্রাপ্য কায়েথের। কর্নার বাঁচাতে আচমকাই গোল ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে আসেন তিনি। বলের সঙ্গে কোনও সংযোগই হয়নি। উল্টে বিশালকে এগিয়ে আসতে দেখে চেন্নাইয়িনের দীর্ঘদেহী ফুটবলার রায়ান এডওয়ার্ডস খানিকটা এগিয়ে এসে অনায়াস দক্ষতায় হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন।

সংযুক্তি সময়ে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় হাত দিয়ে সাদিকুর ঘাড় টেনে ধরেছিলেন। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। তবে সিদ্ধান্ত বিতর্কিত। ধারাভাষ্যকারেরাও বললেন, অঙ্কিতের সঙ্গে এমন কিছু সংঘর্ষ হয়নি সাদিকুর। সেই পেনাল্টি থেকে পেত্রাতোসের গোলের পর মোহনবাগানের সমর্থকেরা মনে করেছিলেন এক পয়েন্ট নিশ্চিত। ধারণা ছিল না শেষ মুহূর্তে ম্যাচ ও ভাবে ঘুরে যাবে। প্রতি আক্রমণে উঠে আসে চেন্নাইয়িন। বিশাল কেন অতটা এগিয়ে এসেছিলেন তিনিই বলতে পারবেন। ভাসানো বল গিয়ে পড়ে ইরফানের পায়ে। তাঁর সামনে তখন কেউ নেই। আনোয়ার আলি অনেকটাই দূরে। বল নিয়ে সোজা গিয়ে ফাঁকা গোলে ঠেলে দেন ইরফান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mohun Bagan ISL 2023-24 Chennaiyin FC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE