আলাদিন আজারাইয়ের নামটা যে কোনও প্রতিযোগিতায় গোলদাতাদের তালিকায় শীর্ষে থাকবে। এই বিবৃতিতে কি সিলমোহর পড়ে গেল?
নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসির স্ট্রাইকার গত আইএসএলে করেছিলেন ২৩ গোল। সাত বার গোলের ঠিকানা লেখা পাসও বাড়িয়েছিলেন। ডুরান্ড কাপেও শীর্ষে সেই আলাদিনই। আটটি গোলের পাশাপাশি রয়েছে পাঁচটি অ্যাসিস্টও। শনিবারের যুবভারতী দেখল তাঁর তিনটি অ্যাসিস্ট ও একটি গোল। মোট ১৩টি গোলে অবদান রাখলেন মরক্কোর স্ট্রাইকার। জিতে নিলেন গোল্ডেন বল (প্রতিযোগিতার সেরা ফুটবলার) এবং গোল্ডেন বুট (সর্বোচ্চ গোলস্কোরার)। সেরা গোলরক্ষক হয়ে গোল্ডেন গ্লাভস্ও জিতলেন নর্থ ইস্টের গুরমিত সিংহ।
ম্যাচ শেষে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পরে কথা বলার সুযোগ এল। কারণ উপস্থিত প্রত্যেকেই প্রিয় নায়কের সঙ্গে বিশেষ দিনে নিজস্বীতে নিজেকে ফ্রেমবন্দি করে রাখতে চাইছিলেন। কাউকেই তিনি ফেরাননি। এর মাঝেই বলে দিলেন, “আমার গোলের থেকেও খুশি দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি যেন এই পারফরম্যান্স আগামী দিনেও ধরে রাখতে পারি।” টানা দু’বছর সাফল্যের শীর্ষে থাকার রহস্য কী? স্মিত হেসে উত্তর, “জানি না। হয়তো কঠোর পরিশ্রম।” আর কথা বলা গেল না। সতীর্থরা টেনে নিয়ে চলে গেলেন।
আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপকে কি এত সহজে হাতছাড়া করা যায়? পরে টিম বাসে ওঠার আগে বললেন, “জোড়া পুরস্কার আমার মেয়ে সোফিয়াকে দিতে চাই। যুবভারতী আমার পয়া মাঠ। কলকাতার সমর্থকদের উচ্ছ্বাস দারুণ লাগে।”
নর্থ ইস্টের কোচ খুয়ান পেদ্রো বেনালি সাংবাদিক বৈঠক করার সময়েই দেখা গেল এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। আচমকা পিছনের দরজা দিয়ে কয়েক জন ফুটবলার ছুটে এসে তাঁর মাথায় জল ঢেলে দিলেন। কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেও বেনালি বলে দিলেন, “আমি দুঃখিত। তবে এই খুশির ছোঁয়া আমাদের প্রাপ্য।”
আলাদিনকে নিয়ে তাঁর রণকৌশলের কথাও স্পষ্ট করেন বেনালি। নর্থ ইস্ট কোচের কথায়, “আমি জানতাম ওকেই সবাই আটকানোর চেষ্টা করবে। ফলে অন্য ফুটবলাররা তাতে স্বাভাবিক ছন্দে আক্রমণ করার সুযোগ পায়। তবুও তো দেখলেন তিনটি গোলের ক্ষেত্রে অবদান রাখল আলাদিন।” মরক্কোর স্ট্রাইকারই কি এই মুহূর্তে সেরা বিদেশি? বেনালি কিন্তু মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, “দলের ২৫ জন ফুটবলারই আমার কাছে সেরা। তাই আমি কাউকে এগিয়ে রাখতে চাই না।”
তিনি আলাদিনকে এগিয়ে রাখতে না চাইলেও ডায়মন্ড হারবারের কোচ কিবু ভিকুনা জানিয়ে দিচ্ছেন আলাদিনই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। যে যুবভারতীতে তাঁদের স্বপ্নের সফর শুরু হয়েছিল, সেই যুবভারতীতেই তাঁর দল ধাক্কা খেল। কিবুর কথায়, “আলাদিনই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিল। আই লিগ আর আইএসএল দলের মধ্যে ফারাক তো থাকবেই। ভবিষ্যতে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)