ছেলেবেলায় কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রের। তিনি নিজেও পরে আর্জেন্টিনীয় মহাতারকার প্রভাবের কথা একাধিক বার উল্লেখ করেছেন। সেই জন্যই কি স্যান্টোসের হয়ে সম্ভবত শেষ ম্যাচে হাত দিয়ে গোলে বল ঠেললেন নেমার?
মেক্সিকোয় ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ আটের দ্বৈরথে ঘটেছিল সেই বিখ্যাত ‘হ্যান্ড অব গড’-এর ঘটনা। তা ফের ফিরে এল নেমারের সৌজন্যে।
ব্রাজিলের লিগে বোটাফোগো ও স্যান্টোসের ম্যাচ ছিল রবিবার। প্রথমার্ধের খেলা গোলশূন্য ভাবে শেষ হয়। সমর্থকরা আশা করেছিলেন, তাঁদের প্রিয় ফুটবলার হয়তো শেষ ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখবেন। কিন্তু নেমারকে যে এ ভাবে লাল কার্ড দেখতে হবে, তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারকে ফাউল করায় আগেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন তিনি। খেলার যখন প্রায় পনেরো মিনিট বাকি, তখনই ঘটে সেই অত্যাশ্চর্য ঘটনা! ৭৫ মিনিটে স্যান্টোসের একটি আক্রমণ বোটাফোগোর গোলরক্ষক আটকালেও বল নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ঝড়ে গতিতে ঢুকে পড়া নেমার বলের দখল নেওয়ার আগে এক ডিফেন্ডার বিপন্মুক্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই ডান হাত দিয়ে বল গোলে ঢুকিয়ে দেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই রেফারি নেমারকে লাল (দ্বিতীয় হলুদ) কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়তে বলেন।
নেমার উঠে যাওয়ার পরেই বিপর্যয় নেমে আসে স্যান্টোস শিবিরে। ম্যাচ শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে গোল করে বোটাফোগোকে জিতিয়ে দেন আর্তুর গিমারেস। ফলে সমর্থকরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। যদিও ম্যাচ শেষে সমাজমাধ্যমে নেমার সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তিনি লেখেন, “গোল করতে মরিয়া হয়ে উঠলে আমরা কখনও ভুল করি। সতীর্থ ও ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি লাল কার্ড না দেখলে নিশ্চিতভাবেই ৩ পয়েন্ট পেতাম। আমার জন্যই দল জিততে পারল না।’’
সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল থেকে জানুযারিতে শৈশবের ক্লাব স্যান্টোসে যোগ দিয়েছিলেন নেমার। ৩০ জুন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে স্যান্টোসের চুক্তি রয়েছে। তাদের পরবর্তী ম্যাচ বৃহস্পতিবার ফোর্টালিজ়ার সঙ্গে। লাল কার্ড দেখায় সেই ম্যাচে নেমার খেলতে পারবেন না। স্যান্টোস যদি নেমারের সঙ্গে চুক্তিবৃদ্ধিতে রাজি না হয়, তবে শৈশবের দলের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন নেমার।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)