Advertisement
E-Paper

ডুরান্ড ফাইনালে কলকাতা ডার্বি! সোনালি দিন ফিরবে ইস্টবেঙ্গলে, না কি বদলা নেবে মোহনবাগান?

১৯ বছর পর ডুরান্ড কাপের ফাইনালে হতে চলেছে কলকাতা ডার্বি। কার্লেস কুয়াদ্রাতের হাত ধরে ট্রফি জিতে কি ইস্টবেঙ্গলের সোনার সময় ফিরবে, না কি বদলা নেবে জুয়ান ফেরান্দোর মোহনবাগান?

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:২৯
football

ছবি: টুইটার।

মরসুমের শুরুতে যে দৃশ্য দুই প্রধানের সমর্থকেরা কল্পনাই করতে পারেননি, সেটাই দেখা যেতে চলেছে রবিবার। ডুরান্ড কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। ১৯ বছর পর। শেষ বার ২০০৪ সালে মোহনবাগানকে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এ বার কি সবুজ-মেরুন শিবির বদলা নিতে পারবে? তাদের তো আরও একটি বদলা নেওয়ার রয়েছে। ডুরান্ড কাপের প্রথম সাক্ষাতেও হারতে হয়েছে।

প্রতিযোগিতা শুরুর আগে দুই ক্লাবের পরিস্থিতি ছিল দু’রকম। অগস্ট মাসের শুরুতেই কলকাতায় পা দিয়েছিলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। প্রথম ডার্বির ঠিক এক সপ্তাহ আগে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, এই দল নিয়ে আশা রয়েছে তাঁর। তা উবে যায় ডুরান্ডে তাদের প্রথম ম্যাচের পর। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দু’গোলে এগিয়েও ড্র করে ইস্টবেঙ্গল। সমর্থকেরা ধরে নিয়েছিলেন, গত তিন বছরে যা দেখা গিয়েছে তাই এ বারও হতে চলেছে।

কিন্তু চিত্রনাট্যে যে চমক অপেক্ষা করে রয়েছে তা বোঝেননি কেউই। গ্রুপের ম্যাচে মোহনবাগানকে অবিশ্বাস্য ভাবে হারিয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গল। বিশ্বকাপার থাকা ৭০ কোটির দল যে ধরাশায়ী হবে এটা কেউই ভাবতে পারেননি। তখন থেকেই সমর্থকদের নয়নের মণি কুয়াদ্রাত। একের পর এক ধাপ পেরোতে পেরোতে ফাইনালে উঠেছে ইস্টবেঙ্গল। কোনও ট্রফি জয়ের থেকে যে তাঁরা মাত্র একটি ম্যাচ দূরে থাকবেন এটা অতি বড় লাল-হলুদ সমর্থকও ভাবতে পারেননি।

অন্য দিকে, মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো শুরু থেকেই বলে আসছিলেন, ডুরান্ড তাঁর কাছে প্রাক্‌-মরসুম প্রস্তুতির মঞ্চ। আসল লক্ষ্য এএফসি কাপ। অর্থাৎ দলের ফল খারাপ হলে দায় যে তাঁর নয়, সেটা আগেভাগেই বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু দলের ফুটবলারেরা তাঁকে হতাশ করেননি। একের পর এক ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন। পেনাল্টি নিয়ে অবশ্য দু’টি বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু সব পিছনে ফেলে তারা ট্রফি জিততে মরিয়া।

সাম্প্রতিক সাক্ষাৎ

১২ অগস্ট, ২০২৩। ডুরান্ড কাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ১-০ গোলে জেতে ইস্টবেঙ্গল। সাড়ে চার বছর পর মোহনবাগানকে হারায় তারা। তার আগে টানা আটটি ম্যাচে হারতে হয়েছে। সেই ধারা আপাতত বজায় রাখাই লক্ষ্য ইস্টবেঙ্গলের।

ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত যা বললেন

১) ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে যে মোহনবাগানকে দেখেছিলাম এই দল তার থেকে আলাদা। ওই ম্যাচের পর ওরা অনেক ম্যাচ খেলেছে। ডুরান্ড, এএফসি কাপের ম্যাচ খেলেছে। বাংলাদেশ, নেপালের চ্যাম্পিয়ন দলকে হারিয়েছে। এখানে দেশের সেরা মুম্বই সিটিকে হারিয়েছে। দলের কৌশলও অনেক বদলে গিয়েছে। ওদের কোচ দলের মানসিকতা বদলে দিতে চাইছে। শারীরিক ভাবেও বেশ ফিট ওরা। তবে অনেক ম্যাচেই ওরা খুব কম ব্যবধানে জিতেছে। কখনও একটা পেনাল্টি থেকে খেলার মোড় ঘুরে গিয়েছে। তবে ওদের খেলা ভোঁতা করার জন্যে আমাদের হাতেও অস্ত্র রয়েছে।

২) এই ম্যাচে সব খেলোয়াড় সমান জায়গায় নেই। ক্লেটন সিলভা এখনও পুরোপুরি তৈরি নয়। কারণ ও বাকিদের থেকে দেরি করে এসেছে। হোসে পারদোও আগের ডার্বিতে খেলেনি। আমরা একটা নতুন প্রোজেক্টের মধ্যে রয়েছি। সবাইকে আসল মরসুমের আগে তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। ভবিষ্যতের জন্যেও একটা রূপরেখা তৈরি করে রাখতে হবে।

৩) রেফারিদের নিয়োগ করা তো আমাদের হাতে নেই। আমরা কোচ হিসাবে নিজেদের কাজ করার চেষ্টা করি। ওদের কাজ ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ রাখা। তবে কিছু বলতে হলে বলব, আইএসএলে অনেক ম্যাচেই বিদেশি রেফারি দেখেছি। সাধারণত বিদেশি রেফারিরা এলে এখানকার চাপের সঙ্গে সড়গড় থাকে না। ওরা আসে, ম্যাচ খেলায় এবং চলে যায়। কিন্তু দেশি রেফারিদের খেলালে এখানকার রেফারিদের মান বাড়বে। দিনের শেষে ওরাও মানুষ। ওদেরও অনেক চাপের মধ্যে খেলাতে হয়। তবে আধুনিক সময়ে অনেক ক্যামেরার মধ্যে খেলা হয়। তাই এখানে সেই প্রযুক্তি থাকলে ভাল হত।

মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো যা বললেন

১) দল নিয়ে এখনও কথা বলার জায়গায় আসিনি। কে খেলবে, কে খেলবে না সেটার জন্যে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করব। কারা তৈরি রয়েছে সেটা এখনও বলার সময় আসেনি। সুহেল, সুমিত জাতীয় শিবিরে চলে গিয়েছে। ওদের পাচ্ছি না। বাকিদের রিকভারি হচ্ছে না। এত ঘন ঘন ম্যাচ খেলতে হচ্ছে যে তাল মেলানো মুশকিল। অনেকেই রয়েছে যারা ৫০ শতাংশ তৈরি। কিন্তু এটা নিয়ে কোনও অজুহাত দিতে চাই না।

২) সত্যি কথা বলতে প্রথম ডার্বির আগে আমি এএফসি কাপ নিয়ে বেশি চিন্তিত ছিলাম। মাথায় মাচিন্দ্রা, আবাহনীর কথা ঘুরছিল। কিন্তু এখন সেই চাপ থেকে আমরা মুক্ত। এখন আমরা একটা ফাইনাল খেলতে নামব। গোয়া, মুম্বইয়ের মতো কঠিন দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামছি। আগামী মরসুমে খেলতে নামার আগে ফাইনাল আমাদের কাছে আরও একটা পরীক্ষা।

৩) কোচ হিসাবে নিজের দলের খেয়াল রাখাই আমাদের কাজ। এমন বিষয়ে প্রশ্ন করছেন যেটা আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। রেফারিদের নিয়ে কথা বলে নিজের শক্তি নষ্ট করতে চাই না। আমরা সবাই ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি চাই। তাই ভারতীয় রেফারিদের আরও বেশি করে তুলে আনাই আমাদের দরকার। আরও বেশি অ্যাকাডেমি তৈরি করার দরকার। বিদেশি রেফারি আনলেই সমস্যার সমাধান হবে এমনটা নয়।

সম্ভাব্য প্রথম একাদশ

মোহনবাগান (৪-৪-২): বিশাল কাইথ, শুভাশিস বসু, আনোয়ার আলি, হেক্টর ইয়ুসতে, আশিস রাই, সাহাল সামাদ, অনিরুদ্ধ থাপা, হুগো বুমোস, আশিক কুরুনিয়ান, জেসন কামিংস, দিমিত্রি পেত্রাতোস।

ইস্টবেঙ্গল (৪-৫-১): প্রভসুখন গিল, হরমনজ্যোত সিংহ খাবরা, জর্ডান এলসে, লালচুংনুঙ্গা, হোসে পারদো, এডউইন ভ্যান্সপল, নন্দকুমার, নিশু কুমার, সাউল ক্রেসপো, নাওরেম মহেশ, জেভিয়ার সিভেরিয়ো।

কখন শুরু খেলা?

যুবভারতী স্টেডিয়ামে বিকেল ৪টে থেকে।

কোন চ্যানেলে খেলা দেখা যাবে?

সোনি টেন ২।

Kolkata Derby East Bengal Mohun Bagan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy