Advertisement
E-Paper

প্রাক্তন কোচের পরিকল্পনার কাছে হার ইস্টবেঙ্গলের, সুযোগ নষ্টের খেসারতও দিল লাল-হলুদ

আইএসএলে এ বারও টানা দু’টি ম্যাচে জেতা হল না ইস্টবেঙ্গলের। আবার হারে ফিরল তারা। আগের ম্যাচে হায়দরাবাদকে হারানোর পর জামশেদপুর এফসি-র কাছে হেরে গেল তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:২৯
football

নন্দকুমারের গোলেও হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল। ছবি: এক্স।

জামশেদপুর ২ (তাচিকাওয়া, মানজ়‌োরো)
ইস্টবেঙ্গল ১ (নন্দকুমার)

আইএসএলে এ বারও টানা দু’টি ম্যাচে জেতা হল না ইস্টবেঙ্গলের। আবার হারে ফিরল তারা। আগের ম্যাচে হায়দরাবাদকে হারানোর পর জামশেদপুর এফসি-র কাছে হেরে গেল লাল-হলুদ। তবে তিন পয়েন্ট পেতেই পারত। নিজেদের সুযোগ নষ্ট তো বটেই, প্রাক্তন কোচ খালিদ জামিলের কৌশলের কাছেও মাত লাল-হলুদ। চাপের মুখ জামিলের তিন বদল তাঁর দলকে তিন পয়েন্ট এনে দিল। ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতকে ভাবতে হবে কী ভাবে দলের গোল নষ্ট করার প্রবণতা সারানো যায়। নন্দকুমার প্রথমার্ধে এগিয়ে দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলকে। সমতা ফেরান রেই তাচিকাওয়া। জয়সূচক গোল জেরেমি মানজ়‌োরোর।

প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলকে কার্যত খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেষ দিকে জামশেদপুরের ভুলে তারা গোল দিয়ে এগিয়ে যায়। সেই গোল এবং দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক সুযোগ তাদের তিন পয়েন্ট এনে দিতেই পারত। কিন্তু ৮০ মিনিটে জামিলের তিন পরিবর্তন কাজে লাগল। নিখিল বারলা, তাচিকাওয়া এবং স্টেভানোভিচকে নামিয়ে দেন। পরের মিনিটেই বারলার পাস থেকে হেডে সমতা ফেরান তাচিকাওয়া। তবে জয়সূচক গোল মানজ়‌োরোর। এই ফুটবলারই আগের ম্যাচে পঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে দু’টি ফ্রিকিক পেয়ে দু’টিতেই গোল করেছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও তার অন্যথা হল না।

আসলে বৃহস্পতিবারের ম্যাচটা ছিল ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ক্লাবের প্রাক্তনীদের। প্রথম প্রাক্তনী হলেন কোচ খালিদ, যিনি লাল-হলুদের দায়িত্বে ছিলেন তারা আই লিগে খেলার সময়। দ্বিতীয় জন ড্যানিয়েল চিমাচুকু, যিনি দুই মরসুম আগে আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলে গিয়েছেন। তৃতীয় জনের দল বদলের দু’মাসও পেরোয়নি। সেই জেভিয়ার সিভেরিয়ো ছিলেন জামশেদপুরের প্রথম একাদশে।

প্রথমার্ধে এই তিন জনের দাপটেই কেঁপে গেল ইস্টবেঙ্গল। প্রথম থেকেই যে আক্রমণ শুরু হল তাদের, তা বজায় থাকল ম্যাচের ৩০ মিনিট পর্যন্ত। একের পর এক আক্রমণে ইস্টবেঙ্গলের অর্ধে তখন তখন ত্রাহি ত্রাহি রব। ন’জনে এসে ডিফেন্স করতে হচ্ছিল লাল-হলুদকে। সাত মিনিটেই নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয় জামশেদপুর। ইমরান খান একাই দৌড়ে ইস্টবেঙ্গলের বক্সে ঢুকে পড়েন। তাঁকে ট্যাকল করেন হিজাজি মাহের। ইমরান পড়ে গেলেও রেফারি পেনাল্টি দেননি।

১৪ মিনিটে আবার ইমরানের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিন মিনিট পরে ইস্টবেঙ্গল বেঁচে যায় গোলকিপার প্রভসুখন গিলের জন্য। মাঝমাঠ থেকে সিভেরিয়োর নেওয়া শট কোনও মতে আটকান গিল। পরের মিনিটে প্রতি আক্রমণ করে ইস্টবেঙ্গল। নন্দকুমার ঢুকে পড়েন জামশেদপুরের বক্সে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর শট বারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।

জামশেদপুর হাল ছাড়েনি। যে-ই বল পাচ্ছিলেন, হয় চিমা না হলে সিভেরিয়োর উদ্দেশে বল বাড়াচ্ছিলেন। মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ উঠে আসছিল মূলত ইমরান, সানা এবং মানজ়োরোর পা থেকে। চিমা এবং সিভেরিয়ো বক্সে থেকে ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। ৩৮ মিনিটের মাথায় পর পর দু’টি সেভ করেন প্রভসুখন। প্রথম বার ইমরানের থেকে বল পেয়ে শট মেরেছিলেন চিমা। তা কর্নার হওয়ার পর সেখান থেকে সিভেরিয়োর হেড ধরে নেন গিল।

প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার সময় জামশেদপুরের খেলায় ঝাঁজ কিছুটা কমে যায়। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে প্রতি আক্রমণে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে উঠে শট করেছিলেন ক্লেটন সিলভা। তা জামশেদপুরের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ডান দিকে যায়। জামশেদপুরের মোইরাংয়ের কাছে অনেকটাই সময় ছিল বল বার করে দেওয়ার। তিনি বলে পা ছোঁয়াতেই পারেননি। তাঁর পাশেই থাকা নন্দকুমার বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে জামশেদপুরের গোলকিপার রেহেনেশকে পরাস্ত করে জালে জড়ান।

দ্বিতীয়ার্ধেও জামশেদপুরের আক্রমণ বজায় থাকে। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সানান বল সাজিয়ে দেন সিভেরিয়োকে। কিন্তু স্প্যানিশ ফুটবলারের হেড বারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৬১ মিনিটে জামশেদপুরকে বাঁচিয়ে দেন রেহেনেশ। বিষ্ণুর শট কোনও মতে বাঁচিয়ে দেন গোলকিপার। ৭৫ মিনিট নিশু কুমারের ক্রস থেকে বিষ্ণুর হেড পোস্টে লাগে।

এর পরে মহেশ যে সুযোগটা নষ্ট করলেন, তা হয়তো খুব সহজে ভুলতে পারবেন না। মাঝমাঠ থেকে তাঁকে বল বাড়িয়েছিলেন ক্লেটন। সামনে ছিলেন একা গোলকিপার। জামশেদপুরের দুই ডিফেন্ডার তখন বেশ কিছুটা দূরে। নির্দিষ্ট জায়গায় বল রাখতে পারলে নিশ্চিত গোল। এই অবস্থায় মহেশ তাড়াহুড়ো বাইরে শট মেরে বসলেন। সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হল পরের মিনিটেই। জামশেদপুরের আক্রমণের সময় ডান দিক থেকে বল ভাসিয়েছিলেন নিখিল বারলা। সেই বলে হেড করে জালে জড়ান তাচিকাওয়া।

শেষের দিকে মনে হচ্ছিল তিন পয়েন্ট না হলেও ইস্টবেঙ্গলের এক পয়েন্ট নিশ্চিত। তখনই বিপত্তি। চিমাকে থামাতে গিয়ে বক্সের একটু আগে ফাউল করেন মহম্মদ রাকিপ। হলুদ কার্ডও দেখেন। সেখান থেকে ফ্রিকিকে সরাসরি গোল করে জামশেদপুরকে তিন পয়েন্টে এনে দেন মানজ়‌োরো।

East Bengal ISL 2023-24 Nandhakumar Sekar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy