Advertisement
১১ মে ২০২৪
Sports News

যে হাতে সোনা উঠেছিল, সে হাতেই ইটের বোঝা

১৭ বছরের রাজবীরকে হয়তো আর কারও মনে নেই। লুধিয়ানার রাজবীর সিংহ। ২০১৫তে চণ্ডীগড়ে যখন ফিরেছিলেন সুদূর লস এঞ্জেলেস থেকে পদক জিতে তখন শুভেচ্ছার জোয়ারে ভেসে গিয়েছিলেন।

এই রাজবীর সিংহই বিশেষ অলিম্পিক থেকে সোনা জিতে ফিরেছিলেন দু’বছর আগে। ছবি: সংগৃহীত।

এই রাজবীর সিংহই বিশেষ অলিম্পিক থেকে সোনা জিতে ফিরেছিলেন দু’বছর আগে। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৮:২৪
Share: Save:

ন’ফুট বাই পাঁচ ফুটের ঘরটায় বাস করে চারজনের পরিবার। তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এক প্রতিভা। যার হাত ধরে স্পেশাল অলিম্পিক থেকে ভারতের ঘরে এসেছিল জোড়া সোনা। তার পরটা শুধুই হারিয়ে যাওয়া। যে হাতে সোনা উঠেছিল সেই হাতেই ইটের বোঝা।

১৭ বছরের রাজবীরকে হয়তো আর কারও মনে নেই। লুধিয়ানার রাজবীর সিংহ। ২০১৫তে চণ্ডীগড়ে যখন ফিরেছিলেন সুদূর লস এঞ্জেলেস থেকে পদক জিতে তখন শুভেচ্ছার জোয়ারে ভেসে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরটা শুধুই শূন্যতা। এর পর অনেকটা সময় গড়িয়ে গিয়েছে। আসতে আসতে রাজবীরকে ভুলে গিয়েছে সকলে। রাজবীরও আর এগোতে পারেননি। এই মুহূর্তে রীতিমতো অর্থ কষ্টের মধ্যে হুইল চেয়ার ছেড়ে কোনওরকমে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হয়েছে সোনার ছেলেকে। খেতে হবে তো!

২০১৫তে স্পেশাল অলিম্পিক ওয়ার্ল্ড সামার গেমসে এক কিলোমিটার ও দু’কিলোমিটার সাইক্লিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরেছিলেন তিনি। তার পর বেঁচে থাকার লড়াইয়ে বাবার সঙ্গে হাত লাগাতে হয় লেবারের কাজে। তৎকালীন পঞ্জাব সরকারের তরফে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল আরও ১ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এর সঙ্গে আরও ১০ লাখ টাকার বন্ডও দেওয়া হয় যা এখনও হাতে পাননি রাজবীর।

সম্প্রতি পঞ্জাব সরকার এই খবর পেলে জানায়, তাদের এই সম্পর্কে কোনও ধারনা ছিল না।বর্তমান সরকার দায়িত্বে আসার আগেই এই প্রতিশ্রুতিগুলো দেওয়া হয়েছিল। পঞ্জাবের ক্রীড়াবিদদের জন্য যে ভাবে সরকার কাজ করে সে ভাবেই ওর জন্যও করা হবে বলেই জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। রাজবীরের বাবা বলবীর সিংহ জানিয়েছেন, ‘‘আমার ছেলে আমার কাছে সব সময়ই খুব স্পেশাল। ও হতাশ। এই অবস্থা কারও হওয়া ঠিক না।’’

আরও পড়ুন

এক অলিম্পিয়ানের পালিয়ে যাওয়া আর বেঁচে থাকার কাহিনি

রাজবীরের কথা জানার পর তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায় স্থানীয় এনজিও-র কর্ণধার গুরপ্রীত সিংহ। নিয়ে যান নিজের এনজিও-তে। যেখানে বয়স্ক লোকেদের দেখাশোনা করতেন রাজবীর। তাঁকে একটি সাইকেলও দেন গুরপ্রীত। তাঁর চিকিৎসারও দায়িত্ব নেন তিনি। অন্যন্যদের থেকেও সাহায্য চান রাজবীরের জন্য কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। কিন্তু লড়ে যাচ্ছেন গুরপ্রীত। যাতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া টাকাগুলো পেয়ে যান তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE