Advertisement
E-Paper

যুক্তরাষ্ট্রের ঘাস পোঁতা শুরু হল যুবভারতীতে

চারপাশের কংক্রিটের গ্যালারি না থাকলে মনে হত কোনও মরুভূমি! বালি আর বালি। চেনাই যাচ্ছে না যুবভারতীকে। তুলে ফেলা হয়েছে কৃত্রিম টার্ফ। গুটিয়ে সেগুলো ডাঁই করে রাখা মাঠের পাশে। আর মাঠে এক ফুট উঁচু বালির সারফেসের উপর ঘাস পুঁতে চলেছেন কয়েকশো কর্মী। যে-সে ঘাস নয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বীজ এনে বেঙ্গালুরুতে তা গজিয়ে, তুলে আনা হয়েছে দেশের বৃহত্তম স্টেডিয়ামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০৩:২৬
বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। চলছে যুবভারতীর ঘাস বোনার কাজ। মঙ্গলবার। ছবি: উৎপল সরকার

বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। চলছে যুবভারতীর ঘাস বোনার কাজ। মঙ্গলবার। ছবি: উৎপল সরকার

চারপাশের কংক্রিটের গ্যালারি না থাকলে মনে হত কোনও মরুভূমি!
বালি আর বালি। চেনাই যাচ্ছে না যুবভারতীকে। তুলে ফেলা হয়েছে কৃত্রিম টার্ফ। গুটিয়ে সেগুলো ডাঁই করে রাখা মাঠের পাশে। আর মাঠে এক ফুট উঁচু বালির সারফেসের উপর ঘাস পুঁতে চলেছেন কয়েকশো কর্মী। যে-সে ঘাস নয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বীজ এনে বেঙ্গালুরুতে তা গজিয়ে, তুলে আনা হয়েছে দেশের বৃহত্তম স্টেডিয়ামে। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করা হচ্ছে সাধারণ ঘাসের মাঠ।
বৃষ্টির জন্য সামান্য দেরি হলেও মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ। বিকেলে মাঠে গিয়ে দেখা গেল বাদামি রঙের মহার্ঘ ঘাসগুলো পোঁতা চলছে। সাধারণ ভাবে সবুজ ঘাস মরে যাওয়ার পর যে রকম দেখায়, অনেকটা সে রকমই দেখতে ওই ঘাসগুলো। পূর্ত দফতর এই কাজ করার জন্য যে বিশেষজ্ঞকে উড়িয়ে এনেছে সেই অমিত মলহোত্র তদারকি করতে করতে বলছিলেন, ‘‘অগস্ট মাসের শুরুতে দেখবেন পুরোটাই সবুজ হয়ে গিয়েছে। এ রকম ভাবেই বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামকে আমরা তৈরি করেছিলাম।’’
আশ্চর্য হতে হচ্ছিল তাঁর কথা শুনে। এই বাদামি ঘাসগুলো শুধু জল আর সারে সবুজ হয়ে যাবে! তাও আবার বালির উপর! বিশ্বের সেরা গল্ফ কোর্স তৈরি করার জন্য বিখ্যাত। স্পোর্টস টার্ফ অ্যান্ড গল্ফ কোম্পানির অন্যতম মালিক অমিত বলছিলেন, ‘‘ঘাস নানা রকমের হয়। এই ঘাসটার নাম বেরবুডা। ভারতে যে তিরিশ-পঁয়ত্রিশটা স্টেডিয়াম আমরা করেছি তার অনেকগুলোই এই ঘাসে তৈরি।’’ অমিতবাবুর কোম্পানি এআইএফএফের সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, এ দেশে ফুটবল মাঠ তৈরির জন্য।

যুবভারতীর মতো এশিয়ার অন্যতম সেরা স্টেডিয়াম তৈরির দায়িত্ব পেয়ে কিছুটা উত্তেজিত অমিত। জানিয়ে দিলেন, কান্তিরাভায় তিনি যেটা পারেননি, সেটা করেছেন এখানে। ‘‘ওখানকার চেয়ে এখানকার বালি অনেক মোটা। জল জমার কোনও প্রশ্নই নেই। খেলার সময় বৃষ্টি হলেও বল গতি হারাবে না।’’

শুধু যুবভারতী নয়, প্রধান গেটের পাশের দুটো প্র্যাকটিস মাঠও তৈরি হবে ওই ঘাসে। সেগুলোয় মাটি, খোয়া আর বালি ফেলার কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর পনেরো দিন আগেই কাজ শেষ করতে চাইছেন অমিত এবং তাঁর দলবল। কারণ কলকাতা লিগের তিনটে ডার্বিই সেপ্টেম্বরের প্রথম দশ দিনে করতে চাইছে আইএফএ। অর্থাৎ ডার্বি দিয়েই নতুন চেহারার যুবভারতীর ঘাসের মাঠের উদ্বোধন। তার পর আইএসএলের জন্য ১০ অক্টোবর থেকে মাঠ দিতে হবে আটলেটিকো দে কলকাতার জন্য। যুবভারতীর সিইও জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আটলেটিকোকে কবে থেকে মাঠ দিতে হবে সেটা ওরা বলেনি। তবে জানিয়েছে ১০ অক্টোবর থেকে খেলা আছে। সে জন্য যুবভারতীর মাঠ এবং গ্যালারি আগে তৈরি করে ফেলছি।’’

২০১৭-র অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য যুবভারতীর অনেক কিছুই বদলে যাচ্ছে। পঁচাশি হাজার চেয়ার বসানো হচ্ছে ধাপে ধাপে। গ্যালারির ছাদ এবং ভিভিআইপিদের জন্য ‘রুফ-টপ’ দেওয়া অত্যাধুনিক চেয়ার লাগানোর কাজ শুরু হচ্ছে। মাঠের দু’পাশে লাগানো হচ্ছে এখনকার চেয়েও বড় দু’টো ইলেকট্রনিক স্কোর বোর্ড। পুরো স্টেডিয়াম রং করা ছা়ড়াও বসবে আলাদা লিফট। মাঠের ভেতর আলোর সংস্কারের পাশাপাশি প্র্যাকটিস মাঠেও লাগানো হচ্ছে ফ্লাড লাইট। ফিফা কর্তারা বলে গিয়েছেন, দর্শক এবং মিডিয়ার জন্য সমস্ত রকমের স্বাচ্ছন্দ রাখতে হবে।

কিন্তু যুবভারতীর তুলে ফেলা অ্যাস্ট্রোটার্ফগুলো যাবে কোথায়? সিইও জ্যোতিষ্মানবাবু জানাচ্ছেন, ‘‘ওগুলো যাদবপুরের কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে লাগানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই কৃত্রিম টার্ফ এখনও সাত-আট বছর চলবে।’’ জানা গিয়েছে, যুবভারতীর অ্যাথলেটিক্সের জন্য টার্ফের কাজ শুরু হবে পরের বছর মার্চে। যা খবর, তাতে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের আগে অন্তত এক বছর বন্ধ রাখা হবে স্টেডিয়াম। অন্তত সে রকমই চাইছেন ক্রীড়া দফতরের অফিসাররা।

yubabharati krirangan under 17 world cup saltlake stadium grass sowing saltlake stadium grass american grass
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy