Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রঞ্জি ফাইনালে হ্যাটট্রিক মাকে উৎসর্গ গুরবাণীর

রঞ্জি ট্রফি ফাইনালেও বল হাতে ম্যাজিক দেখাচ্ছেন রজনীশ গুরবাণী। ইনদওর-এ অনুষ্ঠিত ফাইনালের  দ্বিতীয় দিনেই হ্যাটট্রিক করে তিনি চাপে ফেললেন গৌতম গম্ভীর-দের দিল্লিকে। যারা আবার পুণেতে বাংলাকে হারিয়ে উঠে এসেছে ফাইনালে।

দুরন্ত: দিল্লির বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকের পরে রজনীশ গুরবাণী। ছবি: পিটিআই।

দুরন্ত: দিল্লির বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকের পরে রজনীশ গুরবাণী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৬
Share: Save:

গোটা রঞ্জি ট্রফিতে দাপট দেখানোর পরে ইডেনে সেমিফাইনালে তাঁর সুইংয়েই বিভ্রান্ত হয়েছিলেন কর্নাটক ব্যাটসম্যানরা। ফাইনালে চলে গিয়েছিল বিদর্ভ।

রঞ্জি ট্রফি ফাইনালেও বল হাতে ম্যাজিক দেখাচ্ছেন রজনীশ গুরবাণী। ইনদওর-এ অনুষ্ঠিত ফাইনালের দ্বিতীয় দিনেই হ্যাটট্রিক করে তিনি চাপে ফেললেন গৌতম গম্ভীর-দের দিল্লিকে। যারা আবার পুণেতে বাংলাকে হারিয়ে উঠে এসেছে ফাইনালে।

বিদর্ভের হয়ে প্রথম রঞ্জি ফাইনাল খেলতে নেমে শনিবার দুরন্ত পারফরম্যান্স করলেন রজনীশ গুরবাণী। বল হাতে ২৪.৪ ওভার বল করে ৫৯ রানে তিনি তুলে নিলেন ছয় উইকেট। যার মধ্যে রইল একটি ঝকঝকে হ্যাটট্রিকও। যে হ্যাটট্রিকে গুরবাণীর শিকার বিকাশ মিশ্র (৭), নবদীপ সাইনি (০) এবং ধ্রুব শোরে (১৪৫)। ইনদওর-এ এ দিন কার্যত গুরবাণীর দাপটেই ২৯৫ রানে প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে গেল দিল্লির। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের শেষে বিদর্ভের রান ২০৬-৪। ক্রিজে রয়েছেন, ওয়াসিম জাফর (৬১ ন.আ) এবং অক্ষর ওয়াখড়ে (০ ন.আ)।

প্রথম দিনে করা ২৭১-৬ এই অবস্থা থেকে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিলেন দিল্লির ধ্রুব শোরে ও বিকাশ মিশ্র। সেখান থেকে আর মাত্র ২৪ রান যোগ করেন দিল্লির লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ম্যাচের ১০১তম ওভারের শেষ দু’টি বলে গুরবাণী বোল্ড করেন বিকাশ ও নবদীপ সাইনিকে। পরের ওভারের প্রথম বলে শতরান প্রাপ্ত ব্যাটসম্যান ধ্রুব শোরেকে আউট করেই নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন গুরবাণী। সেই ওভারের পঞ্চম বলে ফের গুরবাণীর বল ছিটকে দেয় কুলবন্ত খেজরোলিয়ার উইকেট। এ দিন হ্যাটট্রিক করে রঞ্জি ফাইনালে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে নিজের নাম রেকর্ড বুকে তুললেন বিদর্ভের এই জোরে বোলার। এর আগে ১৯৭২-৭৩ ফাইনালে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তামিলনাড়ুর বি কল্যাণসুন্দরম।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ফৈয়জ ফজল (৬৭) ও ওয়াসিম জাফরের (৬১) দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস সুবিধেজনক জায়গায় রেখেছে বিদর্ভকে। যদিও এখনও ৮৯ রানে পিছিয়ে
রয়েছে বিদর্ভ।

রঞ্জি ফাইনালের আগের দিন পর্যন্ত জ্বরে কাবু হয়ে পড়েছিলেন গুরবাণী। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছিল যে তাঁর ফাইনালে খেলা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় বাড়িতে মাকে ফোন করেন তিনি। মা দিব্যা দেবীই তাঁর মনোবল বাড়িয়ে ফাইনাল খেলার প্রেরণা দিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন এই ফাস্ট বোলার। তাই রঞ্জি ট্রফি ফাইনালের হ্যাটট্রিকটিও তাঁর মা দিব্যা গুরবাণীকেই উৎসর্গ করছেন বিদর্ভের এই প্রতিশ্রুতিমান পেসার।

দ্বিতীয় দিনের শেষে ইনদওর থেকে ফোনে গুরবাণী বললেন, ‘‘হ্যাটট্রিক করেছি এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি যে এই ম্যাচটি খেলতে পারব তা ভাবতে পারিনি। ম্যাচের আগের দিন পর্যন্ত খুব জ্বর ছিল। তখন মা-ই আমাকে সাহস দিয়েছেন। তাই ফাইনাল‌ের হ্যাটট্রিকটি মা-কেই উৎসর্গ করলাম।’’

গুরবাণী সঙ্গে ধন্যবাদ দিচ্ছেন তাঁর বাবা নরেশ গুরবাণী-কে। ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসার টানেই নিজের ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার থেকে ক্রিকেটার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন নরেশবাবু। তাই হ্যাটট্রিকের পর বাবার কথাও খুব মনে পড়ছে গুরবাণীর। তিনি বলেন, ‘‘বাবা না বললে আমি হয়তো ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যেতাম। তাঁর কথাতেই ক্রিকেট খেলতে শুরু করি। তবে এখনও ম্যাচের তিনটি দিন বাকি রয়েছে। প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকতে পারলে দলের মনোবল আরও বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE