Advertisement
E-Paper

হাফলঙের চোখ এখন চেন্নাইয়ে, খেলছেন বাওরিংদাও

আইএসএল-এর কনিষ্ঠতম খেলোয়াড়। চেন্নাইয়ান এফসি-র হয়ে খেলছেন। হাফলঙের এই তরুণ ফুটবল খেলোয়াড় গত ১৭ অক্টোবর আঠারোয় পা রেখেছেন। আর সে কারণেই চেন্নাই এখন হাফলঙেরও দল।

উত্তম সাহা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ২০:০৫
বাওরিংদাও বড়ো থাকেন এই বাড়িতেই। —নিজস্ব চিত্র।

বাওরিংদাও বড়ো থাকেন এই বাড়িতেই। —নিজস্ব চিত্র।

হাফলং থেকে চেন্নাইয়ের দূরত্ব কতটা? জানা নেই।

চেন্নাইয়ের মানুষ কী ভাষায় কথা বলেন? জানা নেই।

চেন্নাই শহরটা ঠিক কেমন? জানা নেই।

সে শহরে ফুটবলের জনপ্রিয়তা কেমন? জানা নেই।

তামিলনাড়ুর এই রাজধানী শহর নিয়ে এমন অনেক কিছুই জানা নেই হাফলঙের বাসিন্দাদের। তবু, কিছু দিন ধরে চেন্নাইকে আপন করে নিয়েছেন হাফলঙের মানুষ। সৌজন্যে এক তরুণ তুর্কি। নাম, বাওরিংদাও বড়ো। তাঁর কারণেই নতুন করে ফুটবল জ্বরে মেতেছে অসমের পাহাড়ি শহর হাফলং।

কে এই বাওরিংদাও?

আইএসএল-এর কনিষ্ঠতম খেলোয়াড়। চেন্নাইয়ান এফসি-র হয়ে খেলছেন। হাফলঙের এই তরুণ ফুটবল খেলোয়াড় গত ১৭ অক্টোবর আঠারোয় পা রেখেছেন। আর সে কারণেই চেন্নাই এখন হাফলঙেরও দল। সে দলের কোনও খেলোয়াড় বল পায়ে এগিয়ে গেলেই হইহই শুরু হয় হাফলঙে। বাওরিংদাও হলে তো কোনও কথা নেই!

আরও পড়ুন

আইএসএল-এর ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ তিনিই

গত রবিবার হাফলঙের সবাই চেন্নাই-গোয়া লিগ ম্যাচ দেখেছেন। ঘরের ছেলে বাওরিংদাও সে দিন প্রথম সুপার লিগে খেলতে নেমেছেন। চেন্নাই সে দিন জিততে পারেনি বটে। ২-৩ গোলে হেরে যায়। ২১ নম্বর জার্সির বাওরিংদাও কোনও গোল করতে পারেননি। তবে, হাফলং আশাবাদী। বাওরিংদাও যখন এক বার মাঠে নেমে গিয়েছেন, পায়ের জাদু ঠিক দেখিয়ে ছাড়বেন। হাফলঙের এ বিশ্বাসের ভিত আচমকা গড়ে ওঠেনি। বাওরিংদাওকে ফুটবল নিয়ে হাফলংবাসী ছুটতে দেখছেন সেই শৈশব থেকে। হাফলং ডন বস্কো স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বল পায়ে এমন দৌড় দিতেন! সবাই বলতেন, ‘‘এক দিন এই ছেলে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।’’ বাওরিংদাওয়ের বাবা জীবন বড়োকেও অনেকে বলেছেন সে কথা।

বাওরিংদাওয়ের বাবা খুব বেশি দূর তাকাতে পারতেন না। নিজে বনবিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। স্ত্রী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। চার ছেলেকে নিয়ে ছ’জনের সংসার। এমন পরিবার কত দূরেই বা আর তাকাতে পারে! স্কুলের শিক্ষকরা তখন ভরসা জোগান। সাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জীবনবাবুই গুয়াহাটি নিয়ে যান ছেলেকে। আজও সেই দিনটার কথা মনে পড়ে তাঁর। মঙ্গলবার তিনি হাফলঙের বাড়িতে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘ছেলের তখন মাত্র ১২ বছর বয়স। মাকে ছাড়া কোথাও রাত কাটায়নি আগে। কী করে থাকবে, কী খাবে, চিন্তায় পড়েছিলাম। সমবয়সী আবাসিকদের দেখে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিলাম।’’

আরও পড়ুন

জামশেদপুরের হয়ে খেলতে পেরে নস্টালজিক সুব্রত

ছেলের অবশ্য বড় হতে বেশি দিন সময় লাগেনি। পরের বছরেই বাওরিংদাও হাফলং রেলওয়ে কলোনির বাড়িতে যান অনূর্ধ্ব ১৪ জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে। হাফলংবাসী রাজকীয় সম্বর্ধনা দেয় সে দিন বাওরিংদাওকে। ফুলের মালায় হারিয়ে যাচ্ছিল ছোটখাটো মুখখানা। পরে কত বার যে জাতীয় দলে খেলেছেন এই পাহাড়ি ছেলেটি! অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৭— কোনও কিছুই বাদ যায়নি। সিনিয়র হওয়ার আগেই সুযোগ পেয়ে যান আইএসএলে। গত বছর ড্রেসিং রুমের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এ বার নামলেন মাঠে।

হাফলঙের যুবকদের ফুটবল-পাগল করে দিলেন। আর শুধু হাফলং কেন, বাওরিংদাওয়ের জন্য গর্বিত গোটা অসম, উত্তর-পূর্বাঞ্চলও।ছেলের অবশ্য বড় হতে বেশি দিন সময় লাগেনি। পরের বছরেই বাওরিংদাও হাফলং রেলওয়ে কলোনির বাড়িতে যান অনূর্ধ্ব ১৪ জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে। হাফলংবাসী রাজকীয় সম্বর্ধনা দেয় সে দিন বাওরিংদাওকে। ফুলের মালায় হারিয়ে যাচ্ছিল ছোটখাটো মুখখানা। পরে কত বার যে জাতীয় দলে খেলেছেন এই পাহাড়ি ছেলেটি! অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৭— কোনও কিছুই বাদ যায়নি। সিনিয়র হওয়ার আগেই সুযোগ পেয়ে যান আইএসএলে। গত বছর ড্রেসিং রুমের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এ বার নামলেন মাঠে।

হাফলঙের যুবকদের ফুটবল-পাগল করে দিলেন। আর শুধু হাফলং কেন, বাওরিংদাওয়ের জন্য গর্বিত গোটা অসম, উত্তর-পূর্বাঞ্চলও।

Football Footballer Baoringdao Bodo ISL 4
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy