Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Neeraj Chopra

সুযোগ পেলেই চুরমা, ফুচকা! সারা বছর নীরজের খাদ্য তালিকায় কী কী থাকে?

নীরজের কাছে শেষ কথা ফিটনেস। সুযোগ পেলে চুরমা, ফুচকা খান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অ্যাথলিট। সেই সুযোগ আসে বছরে অল্প কয়েক দিন। বাকি দিন গুলিতে কঠোর ভাবে মেনে চলেন নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা।

picture of Neeraj Chopra

নীরজ চোপড়া। ছবি: টুইটার।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ১৪:৫১
Share: Save:

প্রথম ভারতীয় অ্যাথলিট হিসাবে অলিম্পিক্স সোনা জয়ের পর বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপেও সোনা জিতলেন নীরজ চোপড়া। বিশ্বের এক নম্বর জ্যাভলিন থ্রোয়ারের চোখ ধাঁধানো এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, একাগ্রতা। রয়েছে নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকাও। যা তাঁকে সোনা জয়ের শক্তি জোগায়।

নীরজের জীবনে ফিটনেস প্রথম এবং শেষ কথা। ফিটনেসের সঙ্গে কখনও সমঝোতা করেন না। কখনও খাওয়া দাওয়ার অনিয়ম হলে দ্বিগুণ পরিশ্রম এবং সংযমে নিজের শারীরিক মাপকাঠি ফিরিয়ে আনেন। খেলা নিয়ে এতটা যত্নশীল নীরজ কিন্তু বিশ্ব সেরা অ্যাথলিট হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে জ্যাভলিন শুরু করেননি।

ছোট বয়সে একটু মোটা ছিলেন নীরজ। ছেলেকে রোগা করার জন্য তাঁর বাবা স্থানীয় এক অ্যাথলেটিক্স কোচের কাছে ভর্তি করে দিয়েছিলেন নীরজকে। রোগা হওয়ার সেই পদ্ধতি ভাল লেগে যায় তাঁর। বেছে নেন জ্যাভলিনকে। নীরজ কখনও প্রয়োজনের অতিরিক্ত অনুশীলন করেন না। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে যতটুকু প্রয়োজন, ততটাই করেন। সঙ্গে মেনে চলেন কঠোর খাদ্য তালিকা।

কী থাকে নীরজের প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায়? নীরজের দিন শুরু হয় এক গ্লাস ফলের রস অথবা ডাবের জল দিয়ে। ঘুম থেকে ওঠার পর নীরজের এটাই চাই। প্রাতঃরাশে থাকে তিন থেকে চারটি ডিমের সাদা অংশ, দু’টি পাউরুটি, এক বাটি ডালিয়া এবং তাজা ফল। মধ্যাহ্নভোজ সারেন দই-ভাত, ডাল, গ্রিল করা মুরগির মাংস এবং স্যালাড দিয়ে। বিকালে অনুশীলনের মাঝে শুকনো ফল (ড্রাই ফ্রুট) খান নীরজ। বিশেষ করে কাঠ বাদাম (আমন্ড) এবং ফলের রস। রাতে হালকা খাবার খান বিশ্ব সেরা জ্যাভলিন থ্রোয়ার। রাতের খাদ্য তালিকায় থাকে স্যুপ, বিভিন্ন ধরনের সবজি সেদ্ধ এবং ফল।

কয়েক বছর আগে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেছেন নীরজ। ২০১৬ পর্যন্ত মাছ, মাংস ছুঁয়েও দেখতেন না তিনি। ছিলেন সম্পূর্ণ নিরামিষাশী। কোচদের পরামর্শে তার পর খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেন। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের আগে থেকে খেতে শুরু করেছেন স্যামন মাছ। দুপুরের খাবারে সপ্তাহে কয়েক দিন থাকে স্যামন। সে দিন মাংস খান না। এ ছাড়া ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রোটিন সম্পূরক বা প্রোটিন সাপ্লিমেন্টস খান। সঙ্গে থাকে বিভিন্ন রকম কঠোর ফিটনেস ট্রেনিং।

1455466আমেরিকার পোর্টল্যান্ডে অনুশীলন শুরু করার পর কিছুটা বাধ্য হয়েই খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে হয়েছিল নীরজকে। কারণ, সেখানে পর্যাপ্ত নিরামিষ খাবার পেতেন না। বেশি প্রোটিন রয়েছে এমন খাবারে প্রাধান্য দেন। চাল বা গমের খাবার নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি খান না। শরীরে ফ্যাট বা স্নেহ পদার্থের পরিমাণ ১০ শতাংশের কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করেন সব সময়। পুরুষ জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের জন্য এটাই আদর্শ। তাতে জ্যাভলিন ছোড়ার সময় সব থেকে বেশি শক্তি পাওয়া যায়। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের পর কয়েক মাসের অনিয়মে নীরজের শরীরে স্নেহ পদার্থের পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ১৬ শতাংশের মতো। ওজন বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ১৪ কেজি। নিয়মিত অনুশীলন শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই তা আবার ১০ শতাংশে নামিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। বাড়তি পরিশ্রম করে কমিয়ে ফেলেন ওজনও। খাদ্য তালিকা থেকে সম্পূর্ণ ছেঁটে ফেলেছিলেন মিষ্টি জাতীয় খাবার। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাকাডেমিতে গিয়ে নিজেকে বেঁধে ফেলেছিলেন কঠোর নিয়মের মধ্যে। ভাত, রুটি জাতীয় খাবার খাওয়া প্রায় বন্ধ করে দেন। বাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রোটিন সম্পূরকের পরিমাণ।

২৫ বছরের অ্যাথলিট মাঝে মাঝে অনিয়মও করেন। কাছাকাছি কোনও প্রতিযোগিতা না থাকলে সুযোগ পেলেই খান হরিয়ানার জনপ্রিয় খাবার চুরমা। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খান। এমন সুযোগ অবশ্য বছরে অল্প কয়েক দিনের বেশি হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Neeraj Chopra Diet Javelin Athlete
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE