Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
সাফ কাপ

‘মনে পড়ে যাচ্ছিল ১৯৮৪ সালের ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের স্মৃতি’

এ বারের সাফ কাপে অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে খেলতে গিয়েছে ভারত। সুনীল ছেত্রী, প্রীতম কোটালদের মতো সিনিয়রেরা কেউ নেই। অনেকেই তাই সাফ কাপে ভারতের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন

উচ্ছ্বাস: ফাইনালে উঠে উৎসব ভারতের। বুধবার। টুইটার

উচ্ছ্বাস: ফাইনালে উঠে উৎসব ভারতের। বুধবার। টুইটার

সুব্রত ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৫
Share: Save:

ভারত ৩ পাকিস্তান ১

ভারত বনাম পাকিস্তান মানেই রক্তচাপ বৃদ্ধি। ফুটবলে ওরা আমাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারত ৯৬। পাকিস্তান ২০১ নম্বরে। জানতাম, বুধবার সাফ কাপ সেমিফাইনালে ভারতকে আটকানোর মতো শক্তি ওদের নেই। তা সত্ত্বেও ম্যাচটা শুরু হওয়ার আগে দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। সেটা আরও বাড়ল ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠের অবস্থা দেখে।

এ বারের সাফ কাপে অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে খেলতে গিয়েছে ভারত। সুনীল ছেত্রী, প্রীতম কোটালদের মতো সিনিয়রেরা কেউ নেই। অনেকেই তাই সাফ কাপে ভারতের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। আমি কিন্তু প্রথম থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম মনবীর সিংহদের নিয়ে। ওদের দেখে মনে পড়ে যাচ্ছিল ১৯৮৪ সালের ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের স্মৃতি।

চিরিচ মিলোভান আমাদের কোচ ছিলেন। কৃশানু দে, বিকাশ পাঁজির মতো একঝাঁক জুনিয়র ফুটবলারকে জাতীয় দলে নিয়েছিলেন তিনি। কলকাতায় এশিয়ান কাপের ম্যাচে জিতেছিলাম ২-০ গোলে। স্টিভন যেন মিলোভানকে মনে করাচ্ছেন।

গত ৩৪ বছরে পাকিস্তানের ফুটবল অনেকটাই বদলে গিয়েছে। একটা দল হিসেবে খেলার চেষ্টা করছে। তার কারণ অবশ্য পাকিস্তানের ব্রাজিলীয় কোচ জোসে আন্তোনিয়ো ও একাধিক ফুটবলারের ইউরোপে খেলার অভিজ্ঞতা। যদিও তা ভারতের মতো দলকে আটকানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। স্টিভনের কোচিংয়ে আমাদের ছেলেরা নিজেদের মধ্যে প্রচুর পাস খেলছে। ক্লান্তিহীন ভাবে ওভারল্যাপে উঠছে। তবুও প্রথমার্ধ গোলশূন্য ছিল। কারণ, বর্ষায় মাঠ ভারী হয়ে যাওয়ায় আমাদের ছেলেরা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারছিল না। দুই, পাকিস্তানের রণকৌশল ছিল রক্ষণ শক্তিশালী করে কাউন্টার অ্যাটাকে গোলের জন্য ঝাঁপানো। ফলে নিজেদের পেনাল্টি বক্সের সামনে ওরা পায়ের জঙ্গল তৈরি করছিল।

এই রণকৌশলের মোকাবিলা করার সেরা অস্ত্র উইং দিয়ে আক্রমণ করা। প্রথমার্ধে সেটা ঠিক মতো হচ্ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে দেখলাম, খেলার ধরন বদলে ফেলল ভারত। বাঁ প্রান্ত থেকে বল নিয়ে উঠে কুরিয়ন যে সেন্টার করল, তা আলতো টোকায় গোলে ঠেলে দিল মনবীর। দ্বিতীয় গোল ৬৯ মিনিটে। এ বারও নায়ক মনবীর। পাকিস্তানের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে জোরাল শটে গোল। ৮৩ মিনিটে পরিবর্ত হিসেবে নেমে তৃতীয় গোল সুমিত পাসির। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে উত্তেজনা থাকবে না, তা আবার হয় নাকি। ৮৬ মিনিটে অকারণে হাতাহাতি করে লাল কার্ড দেখল দুই ফুটবলার। ভারতের লালিয়ানজ়ুয়ালা ছাংতে ও পাকিস্তানের মহসিন আলি। এর দু’মিনিটের মধ্যে ব্যবধান কমাল মহম্মদ আলি।

ভারতের দুরন্ত জয়ের রাতে আমি বেশি উচ্ছ্বসিত মনবীরের সাফল্যে। ওর উত্থান যে কলকাতা ময়দান থেকে। বছর তিনেক আগে ওকে প্রথম দেখেছিলাম মহমেডানে। পরিশ্রমী, মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে পারে। হার না মানা মানসিকতা। ৮৩ মিনিটে স্টিভন ওকে তুলে না নিলে হয়তো হ্যাটট্রিকও করে ফেলতে পারত। তবে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই মনবীর। ফাইনালে মলদ্বীপের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেই আক্ষেপ মিটিয়ো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football SAFF Cup India Pakistan Final
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE