Advertisement
১১ মে ২০২৪
IPL

কেকেআর-কে হারানো রাহুল চাহারের উত্থান কোন দুই মানুষের হাত ধরে

চার আইপিএলে ৩৩টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। উইকেট নিয়েছেন ৩৪টি। এর মধ্যে গত বছর ১৫ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন।

স্পিনের ছোবলে নাইটদের উড়িয়ে দেওয়ার পর রাহুল চাহার।

স্পিনের ছোবলে নাইটদের উড়িয়ে দেওয়ার পর রাহুল চাহার। ছবি - টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২১ ২১:৫৪
Share: Save:

ভারতের হয়ে মাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সংখ্যা ৩। তেমন নজর কাড়তে পারেননি। খুব দ্রুত আবার বিরাট কোহলীর সংসারে ফিরতে পারবেন বলেও মনে হয় না। তবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জার্সি গায়ে চাপালেই যেন আরও ক্ষুরধার হয়ে ওঠেন রাহুল চাহার। চার আইপিএলে ৩৩টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। উইকেট নিয়েছেন ৩৪টি। এর মধ্যে গত বছর ১৫ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন। ২০১৯ সালে নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট। আর এ বার তো দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁর ২৭ রানে ৪ উইকেটের সৌজন্যে ১০ রানে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে জিতেছে মুম্বই।

পাঁচ বারের আইপিএল দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য ২১ বছরের ছেলেটা রোহিত শর্মার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবেন। সেটা জন সমক্ষে বহুবার বলেওছেন। তবে তাঁর ক্রিকেট সত্বাকে জাগিয়ে তোলার জন্য আরও একজনকে ধন্যবাদ দিয়ে থাকেন এই লেগ স্পিনার। তিনি হলেন রাহুলের খুড়তুতো দাদা দীপক চাহার, যিনি আবার মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

ক্রিকেটের হাতেখড়ি থেকে রাজস্থানের হয়ে খেলা, সবকিছুর নেপথ্যে তাঁর দাদা দীপক চাহার। সেটা ২০১০-১১ মরসুম। দাদা দীপক একক দক্ষতায় রঞ্জি ট্রফির অভিষেক ম্যাচে হায়দরাবাদকে ২১ রানে গুটিয়ে দেন। নিয়েছিলেন ১০ রানে ৮ উইকেট। দাদার কীর্তি দেখে ভাইও উজ্জীবিত হয়ে উঠলেন। যদিও তখন রাহুল মাত্র ১০ বছরের ছেলে। এরপর ২০১৩-১৪ মরসুমে অনুর্ধ-১৬ বিজয় মার্চেন্ট ট্রফির প্রথম ম্যাচেই নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। সেই ওঁর পথ চলা শুরু।

দাদা দীপকের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাহুল। ফাইল চিত্র।

দাদা দীপকের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাহুল। ফাইল চিত্র।

যৌথ পরিবার। সেই পরিবারের সবচেয়ে ছোট ছেলে রাহুল। তাই ওঁকে সবাই আলদা চোখে দেখত। রাহুলের বাবা ক্রিকেট পছন্দ করতেন। কিন্তু রাজ্য দলের হয়ে খেলার জন্য ছোট ছেলেকে একা ছাড়তে চাইতেন না। তবে সেই সমস্যাও দীপক এবং ওঁর বাবা মিটিয়ে দেন। ফলে দাদার হাত ধরে রাজস্থানের অখ্যাত শহর ভরতপুর থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরে জয়পুরে চলে আসেন রাহুল। ততদিনে এলাকায় দীপকের নামডাক হয়েছে। তাই রাহুলের মনেও জোরে বোলার হওয়ার জেদ চেপেছিল। কিন্তু বাধা দেন ওর ‘আইডল’। দীপকের অনেক বোঝানোর পরে রাহুল সিদ্ধান্ত বদল করে স্পিন বল করতে শুরু করেন।

এরপর আর রাহুলকে বসে থাকতে হয়নি। ভাল বোলিংয়ের সুবাদে একের পর এক দরজা খুলে গিয়েছে। মার খেলেও ভয় পান না। কারণ তাঁর সহজ সরল ব্যাখ্যা, “আমি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নেটে রোহিত, হার্দিক, ক্রুণাল, পোলার্ডকে বল করি। ভারতীয় দলের নেটে বিরাট কোহলীকে বল করেছি। ওরা তো সবাই মারকুটে। তাই ম্যাচে কেউ আমাকে মারলেও চিন্তা করি না।”

তবে শুধু নিজের ইস্পাত কঠিন মানসিকতা নয়, অধিনায়ক রোহিতের একটা মন্ত্র তাঁর কানে যেন বেদ বাক্যের মতো গেঁথে গিয়েছে। ‘হিট ম্যান’ ওঁকে গত ম্যাচে বলেছিলেন, “তোমাকে তো নেটে আমিই খেলতে পারি না। মাটিতে পড়ে তোমার বল কোন দিকে ঘুরবে সেটা আমিই বুঝতে পারি না! ওরা কীভাবে বুঝবে!”

শাহরুখ খানের একটা উদ্ধৃতি মনে পড়ে গেল। ‘রাহুল...নাম তো শুনা হি হোগা।’ কলকাতা নাইট রাইডার্স কি শুনেছে? এই আইপিএলে আরও একবার কিন্তু রাহুল পয়া বিপক্ষের পরীক্ষা নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE