Advertisement
১১ মে ২০২৪

কিংগ খানের জন্য তৈরি তাঁর নাইটরা

দশটা মাথার গর্জন... দশটা বছরের গর্জন...দশ কি দহর, আমি কেকেআর! গর্জনটা শুরু হয়ে গিয়েছে। বাইশ গজে প্রথম বল পড়ার আগে থেকেই। গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে নাইটদের অন্দরমহলে ঢুঁ মারলেই শোনা যাচ্ছে সেই গর্জন।

আলোচনা: কোচ কালিসের সঙ্গে গম্ভীর। ছবি: পিটিআই

আলোচনা: কোচ কালিসের সঙ্গে গম্ভীর। ছবি: পিটিআই

কৌশিক দাশ
রাজকোট শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২৭
Share: Save:

দশটা মাথার গর্জন... দশটা বছরের গর্জন...দশ কি দহর, আমি কেকেআর!

গর্জনটা শুরু হয়ে গিয়েছে। বাইশ গজে প্রথম বল পড়ার আগে থেকেই। গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে নাইটদের অন্দরমহলে ঢুঁ মারলেই শোনা যাচ্ছে সেই গর্জন।

দশ কি দহর!

শোনা যাচ্ছে, নাইটদের প্রথম ম্যাচ দেখতে নাকি শুক্রবার রাজকোটে আসছেন শাহরুখ খান। সরকারি ভাবে কেকেআর থেকে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। মুম্বইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বাদশা আসতে পারেন। সেটা সত্যি হলে গর্জনটা কিন্তু ডেসিবেলের নিষেধাজ্ঞার যাবতীয় মাত্রা ভেঙে দেবে।

বৃহস্পতিবার রাজকোট স্টেডিয়ামের প্রেসবক্স থেকে পিচের যে হদিশ পাওয়া গেল, তাতে সবুজের আভা আছে, কিন্তু পুরু ঘাসের আচ্ছাদন নেই। শোনা গেল, অনেকটাই ঘাস ছেঁটে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যেটুকু এখনও আছে, তাতে একটা ইঙ্গিত থাকছে। নাইটদের স্পিন অস্ত্র ভোঁতা করে দাও। সুনীল নারাইন যাতে ভেল্কি না দেখাতে পারেন। নতুন বিস্ময় কুলদীপ যাদব যাতে ‘চায়নাম্যান’ থেকে ‘নো-ম্যান’ হয়ে যান। কিন্তু তাতে কি গর্জন থামছে? আদৌ না। বরং নাইটমহলের ভিতরের হুঙ্কার হল, গুজরাত আমাদের স্পিন ভোঁতা করতে চায়, করুক না। আমাদের পেস আক্রমণ কম কী? ক্রিস ওক্‌স, ট্রেন্ট বোল্ট, নেথান কোল্টার নাইলকে দলে রাখা হয়েছে কেন? কীসের জন্য রয়েছেন তরুণ ভারতীয় প্রতিভা অঙ্কিত রাজপুত বা অলরাউন্ডার ঋষি ধবন?

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গৌতম গম্ভীরের নাইটরা প্র্যাকটিসে নামার আগে মাঠ জুড়ে চলছিল শুক্রবারের রাজকোট-উদ্বোধনের প্রস্তুতি। কিশোর-কিশোরীদের গান-নাচের মহড়া। কিন্তু ব্রেকফাস্টের সময় থেকে লাঞ্চ— এই ঘণ্টা চারেক নাইটদের ঘাটিতে কাটিয়ে আসার অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, কেকেআর-অ্যান্থেমের তেজের কাছে এ কিছুই নয়।

দশ কি দহর!

কয়েক হাজার ওয়াটের সাউন্ড সিস্টেমে বেজে উঠছে নাইটদের ফেলে আসা নানা টিম সং। সাংবাদিকদের চোখের আড়ালে, হোটেলে স্পনসরদের একান্ত ব্যক্তিগত সেই অনুষ্ঠানে তখন ভক্তদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছেন ইউসুফ পাঠান, পীযূষ চাওলা, কুলদীপ যাদব, ক্রিস লিনরা। কখনও হাসিমুখে, কখনও একটু গম্ভীর হয়ে। আচ্ছা, গুজরাত ম্যাচে ক’টা ছয় মারবেন? ইউসুফের জবাব, ‘‘আমি তো কিছু প্ল্যান করে নামি না।’’ এ বার প্রশ্নটা উড়ে গেল পাশে বসা অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানের দিকে। ক্রিস লিনের সপাট উত্তর, ‘‘ওরা যদি দু’শো তোলে, তা হলে আমি বোধহয় একটার বেশি মারার সুযোগ পাব না। ইউসুফই সব ছয় মেরে দেবে।’’ হাসিতে ফেটে পড়ল গোটা হল। ক্রিকেটাররাও হাসছেন, কিন্তু সেই হাসির মধ্যেও লুকিয়ে আছে প্রচ্ছন্ন হুমকি— তোমরা দু’শো তুলতে পারো, কিন্তু আমরাও সেটা তুলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখি।

কিন্তু নাইট কোচের ত্রিসীমানায় হাসি ঠাট্টার বালাই নেই। জাক কালিস বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ হোটেলের দোতলার প্লেয়ার্স রুমে ঢুকলেন। মুখ বেজায় গম্ভীর। অন্য গম্ভীরকেও একটু পরে ডেকে নিলেন, মানে গৌতম। এর পর সাপোর্ট স্টাফকে সঙ্গে নিয়ে চলল ঘণ্টা দেড়েকের কাঁটাছেড়া। বৈঠক শেষে লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে জনা কয়েকের সঙ্গে সেলফি তুললেন ঠিকই, তখনও হাসির দেখা নেই! কালিস যে সব কিছু গম্ভীর মুখে করতেই ভালবাসেন। সুরেশ রায়নার গুজরাত আগের আইপিএলে দু’বারই হারিয়েছিল কেকেআর-কে। সেই যন্ত্রণা বোধহয় একটু বেশিই বিঁধছে শাহরুখের ছেলেদের। তাই তো হুঙ্কারটা বাড়ছে— আমরা তৈরি। তোমরা এসো।

সুরেশ রায়না কি শুনতে পেলেন? গর্জনটা কিন্তু ক্রমে জোরালো হচ্ছে।

দশ কি দহর! কেকেআর!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Knight Riders IPL 10 IPL 2017
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE