পারলেন না অরিন্দম। শেষ মুহূর্তে বল জালে ঢুকে গেল। ছবি - আইএসএল
নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড -১ (ইদ্রিসা- ৯৪ মিনিট)
এটিকে মোহনবাগান -১ (ডেভিড উইলিয়ামস-৩৪ মিনিট)
তীরে এসে তরী ডোবা কি এটিকে মোহনবাগানের নিয়তি হয়ে গিয়েছে! আইএসএলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করার পরেও ড্র করে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হল এটিকে মোহনবাগান। আধুনিক ফুটবলে ১ গোলের ব্যবধান কখনোই সুরক্ষিত নয়। যদিও ৩৪ মিনিটে ডেভিড উইলিয়ামসের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরে সন্দেশ জিঙ্ঘনহীন সবুজ-মেরুন রক্ষণ বেশ ভালই খেলছিল। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে ক্ষণিকের ভুল ও অন্যমনস্কতা যেন বাড়া ভাতে ছাই ফেলে দিল! ‘সুপার সাব’ হিসেবে মাঠে নেমে কাজের কাজটা করে দিয়ে চলে গেলেন ইদ্রিসা সাইলা। তাই ফলাফল ১-১। এই অবস্থায় আগামী ৯ মার্চ দ্বিতীয় সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে যে জিতবে সেই দল খেলবে ১৩ মার্চের ফাইনাল।
গত দুটো ম্যাচ আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাসের কাছে মোটেও ভাল যায়নি। হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করার পর, লিগের শেষ ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে হেরে গিয়েছিল সবুজ-মেরুন। ফলে ভারতের প্রথম ক্লাব হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলা হয়নি। সেই ক্ষত ভুলে আইএসএল ফাইনালকে পাখির চোখ করেছিলেন স্প্যানিশ কোচ। কিন্তু কোথায় কী! শেষ মুহূর্তে রক্ষণের ব্যর্থতা ও গোল রক্ষক অরিন্দম ভট্টাচার্যের জয় মাঠে ফেলে এলেন রয় কৃষ্ণ, প্রীতম কোটালরা।
৪-৩-৩ ছকে দল সাজিয়ে খেলা শুরু করেন হাবাস। এ দিন শুরু থেকেই রাইট ব্যাকে প্রবীর দাস ও মাঝমাঠে হাভি হার্নান্ডেজকে খেলিয়ে নর্থ-ইস্টের ওপর চাপ বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করেন প্রধান কোচ। রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস ও মনবীর সিংহের সঙ্গে জুড়ে দেন ব্রাজিলীয় মার্সেলিনহোকে। রক্ষণে এ দিন তিরির বদলে কার্ল ম্যাকহিউকে মাঠে নামান। ফলে শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলে সবুজ-মেরুন।
৩৪ মিনিটে রয় কৃষ্ণর পাস থেকে নর্থ-ইস্টের রক্ষণকে বোকা বানিয়ে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অজি স্ট্রাইকার উইলিয়ামস। প্রথমার্ধে আরও বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেও সাফল্যে আসেনি। বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি নর্থ-ইস্টও। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধের শেষে মাঠ ছেড়েছিল মোহনবাগান।
পিছিয়ে থাকা নর্থ-ইস্ট দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল শোধ দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালাতে থাকে। খালিদ জামিলের ছেলেদের আক্রমণে জেরবার হয়ে একাধিকবার দলের রক্ষণভাগ সামাল দিতে নিচে নেমে আসতে হয় রয় কৃষ্ণ, মনবীর সিংহদের। ঠিক এমন সময় গোলের খোঁজে জোড়া বদল করেন খালিদ জামিল। ৬৬ মিনিটে বেঞ্জামিন ল্যাম্বটের বদলে মাঠে নামেন স্ট্রাইকার ইদ্রিসা সাইলা। নিম দর্জির পরিবর্তে নামেন ডিফেন্ডার মাশুর শারিফ। দুই দলের আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণে জমে যায় শেষ দিকের খেলা। ঠিক সেই সুযোগে বাগান রক্ষণের অন্যমনস্কতাকে কাজে লাগিয়ে ৯৪ মিনিটে সমতা ফেরান ঘানার স্ট্রাইকার।
আর এই ড্রয়ের ফলে প্রধান কোচ হিসেবে খালিদ জামিল এখনও পর্যন্ত অপরাজিত রয়ে গেলেন। গত ১০টি ম্যাচে কোচিং করিয়ে জিতেছেন ৬টি ম্যাচ। ড্র করছেন ৪টি। এর মধ্যে শনিবার জিএমসি ব্যাম্বোলিম স্টেডিয়ামের এই ম্যাচটাও রয়ে গেল। সব বিভাগে পিছিয়ে থেকেও স্রেফ অদম্য লড়াইয়ের উপর ভর করে প্রতিযোগিতায় বেঁচে রইলেন খালিদ ও তাঁর দল।
অন্য দিকে দুবারের আইএসএল জয়ী কোচ এর আগে একবারও প্রথম লেগের সেমি ফাইনালে জয়ের মুখ দেখেননি। এ বার সেই রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার সুযোগ এসেও গিয়েছিল। কিন্তু সেটা আর হল কোথায়! তাই তাঁর এ বারের আইএসএল ভাগ্যও সরু সুতোয় ঝুলছে। পরের ম্যাচটা জিতলে ভাল। না হলে যে এবারের মত বিদায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy