Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Race

Karunamoy Mahato: দৌড়ে রেকর্ড ভেঙেও জুতো নিয়ে দুশ্চিন্তা

২০১৭-এ সাইতে ‘ট্রায়াল’-এ যোগ দিয়ে আবাসিক অ্যাথলিট হিসাবে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান দরিদ্র পরিবারের সন্তান করুণাময়।

করুণাময় মাহাতো।

করুণাময় মাহাতো। নিজস্ব চিত্র।

প্রশান্ত পাল 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২২ ০৬:০৮
Share: Save:

৪০০ মিটারে দৌড়ে রাজ্যে রেকর্ড গড়লেন পুরুলিয়ার করুণাময় মাহাতো।

এত দিন এই রেকর্ড ছিল গোলাম কিব্রিয়ার দখলে। ১৯৮৭ সালে রাজ্য অ্যাথলেটিক্স মিটে মোহনবাগানের হয়ে এই রেকর্ড গড়েছিলেন গোলাম কিব্রিয়া। এই ইভেন্টে তাঁর সময় ছিল ৪৮.১ মিনিট। সম্প্রতি কলকাতার সাই কমপ্লেক্সের মাঠে রাজ্য অ্যাথলেটিক্সের এই ইভেন্টে করুণাময় সময় নিয়েছেন ৪৭.৫ মিনিট। করুণাময়ও মোহনবাগানের হয়েই নেমেছিলেন।

পুরুলিয়ার বলরামপুরের ছোট উরমা গ্রামের বাসিন্দা করুণাময় ২০১৭ থেকে সাইতেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। টানা ৩৫ বছর পরে, ৪০০ মিটারে নতুন রেকর্ড গড়া এই তরুণের প্রাথমিক আগ্রহ ছিল ফুটবলে। শিক্ষকদের উৎসাহে দৌড়ের চর্চা শুরু।

২০১৬ সালে ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতায় প্রথম বার অ্যাথলেটিক্সের ট্র্যাকে নামা। তাঁর কথায়, ‘‘এই প্রতিযোগিতায় প্রথম বার পঞ্চায়েত স্তরে ৪০০ মিটারে নামি। তার পরে, ব্লক স্তর, জেলা, রাজ্য— প্রতিটি জায়গাই প্রথম হয়েছিলাম। জাতীয় প্রতিযোগিতা হয়েছিল গুজরাতে। আমি চার নম্বরে দৌড় শেষ করেছিলাম।’’

২০১৭-এ সাইতে ‘ট্রায়াল’-এ যোগ দিয়ে আবাসিক অ্যাথলিট হিসাবে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান দরিদ্র পরিবারের সন্তান করুণাময়। রাজ্যের রেকর্ড ভাঙার পরে, এখন দেশের হয়ে ট্র্যাকে নামার স্বপ্ন দেখেন। বাবা বনমালি মাহাতো বলরামপুরে পাইকারি সবজি বাজারের আড়তে কাজ করেন। বনমালিবাবুর কথায়, ‘‘ছেলে রাজ্যে রেকর্ড গড়েছে। প্রশিক্ষণ চালিয়ে যেতে যা খরচ, আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের পক্ষে তা চালানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। ট্র্যাকে দৌড়ের জন্য ওর একটা জুতো লাগবে, যার দাম ২১ হাজার টাকা। কষ্ট করে টাকা জমিয়ে কেনার চেষ্টা করছি।’’

প্রতিবন্ধকতা থাকলেও, করুণাময় লক্ষ্যে অবিচল থেকে অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছেন। রাজ্য অ্যাথলেটিক্স মিটে রেকর্ড ভাঙার লক্ষ্যেই তিনি সিনিয়র বিভাগে নামেন। তাঁর কথায়, ‘‘বয়স মোতাবেক আমার ইভেন্ট অনূর্ধ্ব-২৩। কিন্তু অনুশীলনে আমার বার বার ৪০০ মিটারে ৪৬.৯, ৪৬.৪৭ সেকেন্ড সময় হচ্ছিল। এই ইভেন্টে রাজ্যে রেকর্ড ৪৮.১ সেকেন্ডের ছিল। ঠিক করলাম, রাজ্যের রেকর্ডের থেকে যখন আমার সময় কম হচ্ছে, তখন সিনিয়র বিভাগেই নামব। নতুন রেকর্ড করে ভাল লাগছে। তবে আমার সামনে এখন লম্বা পথ। লক্ষ্য, দেশের হয়ে নামা। জানি না স্বপ্ন পূরণ হবে কি না! আমি বিশ্বাস করি, পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই।’’

মানভূম ক্রীড়া সংস্থার অ্যাথলেটিক্স বিভাগের তরফে গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, এত দিন রাজ্যে পুরুলিয়ার একটিই রেকর্ড ছিল। ৪০০ মিটার হার্ডলসে পিঙ্কি প্রামাণিক ২০০৫ সালে এই রেকর্ড গড়েছিলেন। সে রেকর্ড এখনও অক্ষত রয়েছে। করুণাময় সে মুকুটে আরও একটি পালক যোগ করলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Race purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE