অনুশীলনে বোরহা, হিউম। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে। —নিজস্ব চিত্র।
এ বারের আইএসএল নিয়ে কেন জানি না সে ভাবে উন্মাদনা, উত্তেজনা হচ্ছে না। এটা শুধু এটিকে, মুম্বই কিংবা বাকি ছ’টা দলের কথা নয়। এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টটাই আমার ম্যাড়ম্যাড়ে লাগছে! ফুটবল স্কিল, মাঠে বিনোদন, কিছুই যেন নেই!
আর আটলেটিকো? গোড়াতেই তো ওদের গলদ! সফল হবে কী ভাবে? এটা শুধু ওদের কোচ কিংবা ফুটবলারদের দোষ নয়। কলকাতার ব্যর্থতার জন্য দায়ী গোটা এটিকে টিম ম্যানেজমেন্ট।
শুরুতেই আসা যাক ওদের টিম নির্বাচনে। মিডল থার্ডে এ বার না আছে একজন খাঁটি ব্লকার, না একজন ভাল বল মেকার। আমাদের ফুটবল আমলে যে কাজটা মোহনবাগানে-ইস্টবেঙ্গলে বছরের পর বছর করেছে গৌতম (সরকার), প্রসূন (বন্দ্যোপাধ্যায়) কিংবা পিন্টুদা (সমরেশ চৌধুরী)। গৌতম অসাধারণ ব্লকার ছিল। অন্য দু’জনের ছিল দুর্দান্ত বল সাপ্লাইয়ের ক্ষমতা। কৃশানু দে-র মতো ব্যক্তিগত দক্ষতার কোনও ফুটবলার নেই এই এটিকে দলে। তাই ভাল ড্রিবল, স্কুপ, কিছুই দেখা যাচ্ছে না ওদের খেলায়।
আটলেটিকো কলকাতার খেলা মানে চারটে ব্যাক পাস, দু’টো স্কোয়ার পাস আর সব শেষে গগনে-গগনে ফুটবল!
এ ধরনের টুর্নামেন্টে কোচকে শুধু টেকনিক্যালি ভাল হলে চলবে না। ফার্গুসন মোরিনহোর মতো বাইরে থেকে থিওরি পলিসি নিলাম, তাতে এখানে চলবে না। ফুটবলাররাও তিন পয়েন্ট তুলে দেবে না হাতে। ওটা বিদেশি লিগে হয়। এ দেশের ফুটবলে সম্ভব নয়। এখানে কোচিং মানে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ। সে তুমি যতই বিদেশি কোচ হও না কেন! তোমার ক্লাব তো এখানকার। মাঠের বাইরের এটিকে জগৎটাও তাই মলিনাকেই দেখতে হবে। কোথায় ফুটবলারদের অসুবিধে, কোথায় সুবিধে, সব।
এটিকে-কে দেখে মনে হচ্ছে, মোটিভেট করার লোক নেই। ফুটবলারদের মান খারাপ হতেই পারে। কিন্তু কোচকে সবার আগে বুঝতে হবে, টিমের কোন ফুটবলারকে কী ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে! অন্তত গোল না করতে পারি, গোল খাওয়া থেকে বাঁচতে হবে। আর সেখানে কলকাতা এখনই হাফডজন খেয়ে বসে আছে।
এটিকে-র আরও একটা সমস্যা, আক্রমণে গতিকে ব্যবহার করতে না পারা। দলগত দক্ষতার অভাব থাকলে এটা হয়। তার উপর দলের বিদেশিদের বয়স তো একটা ফ্যাক্টর বটেই। যে হিউমকে প্রথম দু’টো আইএসএলে কেরল আর কলকাতা টিমে দেখেছিলাম, তার সঙ্গে এ বারের হিউমের বিস্তর পার্থক্য। গতি কমেছে। সেই অ্যান্টিসিপেশনে ভাঁটা পড়েছে। তবে একা হিউম কেন? বোরহার অবস্থাও তো এক। মাঠের ভেতর সেই মারকাটারি ভাবটাই যেন উধাও! গোদের উপর বিষফোঁড়া আবার পস্টিগা। এটিকে-তে পরপর দু’মরসুমে অবদান এখনও শূন্য। এমনকী ওকে রাখতে গিয়েই এটিকে-তে একজন পজিটিভ স্ট্রাইকার নেই। মার্কির নামে পস্টিগা টিমের বোঝা।
তবে ফরোয়ার্ড লাইনকে যে বাঁচিয়ে তুলবেন, সেই ক্ষমতা নেই কোচেরও। ছ’টা ম্যাচ হয়ে গেল। এখনও পস্টিগার বিকল্প খুঁজে পেলেন না স্প্যানিশ কোচ। বেঞ্চে গালে হাত রেখে বসে আছে, কখন জাভি লারা একটা গোল করবে, দ্যুতি কোনও ম্যাজিক দেখাবে! কিন্তু চমৎকার তো আর রোজ রোজ হয় না? কোচকে সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। খেলায় নতুনত্ব আমদানি করতে হবে।
সে সব এখনও দেখতে পেলাম না মলিনার থেকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy