Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আগাম ফিরে এলেন গোয়েন্দাগিরি করতে

মাদ্রিদের শিবিরই কলকাতাকে এগিয়ে রাখবে, দাবি ব্যারেটোর

আইএসএলে তিনি কি কলকাতার জুনিয়র বাইয়ানো? কে এই জুনিয়র বাইয়ানো? ব্রাজিল বিশ্বকাপে ইনিই ছিলেন লুই ফিলিপ স্কোলারির অন্যতম গোয়েন্দা! যিনি নেইমারদের কোচকে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর প্রস্তুতির খবর দিয়ে রাখতেন আগেভাগেই।

যুবভারতীতে ব্যারেটো।—নিজস্ব চিত্র

যুবভারতীতে ব্যারেটো।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪১
Share: Save:

আইএসএলে তিনি কি কলকাতার জুনিয়র বাইয়ানো?

কে এই জুনিয়র বাইয়ানো? ব্রাজিল বিশ্বকাপে ইনিই ছিলেন লুই ফিলিপ স্কোলারির অন্যতম গোয়েন্দা! যিনি নেইমারদের কোচকে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর প্রস্তুতির খবর দিয়ে রাখতেন আগেভাগেই।

আপনি তা হলে কলকাতার বাইয়ানো? প্রশ্ন শুনে হাসছেন ময়দানের সবুজ তোতা। বলছেন, “মাদ্রিদে বসে অন্য দলগুলোর সব খবরই নিয়েছি। কোচ বললেন, ভারতে গিয়ে অন্য দলগুলোর প্রস্তুতি ম্যাচ দেখে টেকনিক্যাল তথ্য সংগ্রহ করতে। তাই আগে চলে এলাম। শুরুতেই অপারেশন মুম্বই। ফিক্সচার দেখে দু’তিন দিনের মধ্যেই উড়ে যাব ওদের মাপতে।”

সোমবার রাতে শহরে এসেছেন। তার পর থেকেই লেগে পড়েছেন কাজে। এ দিন সকালে প্রথমে গিয়েছিলেন রাজারহাটের টিম হোটেলে জিম, জাকুজি, সুইমিং পুল, প্লেয়ারদের রুম সব খুঁটিয়ে দেখতে। ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গেই পাঠিয়ে দিলেন মাদ্রিদে। তার পর যুবভারতীতে এসে প্রথমে দেখলেন ড্রেসিংরুম, জিম, মিক্সড জোন। তার পর সোজা মাঠে। সেখানে তখন ফিল্ডটার্ফের ঘাস সোজা করার প্রক্রিয়া চলছে। কৃত্রিম ঘাস সোজা করার মেশিনের সামনে বসে ব্যারেটো দেখলেন মাঠের অবস্থা। তার ফাঁকেই নস্ট্যালজিক হয়ে পড়ে বলা, “এই মাঠে নিজের একশো শতাংশ দিয়েছি। মাদ্রিদে আবাসিক শিবিরে যাওয়ার আগে সৌরভ (গঙ্গোপাধ্যায়) বলেছিল, কী ভাবে টিমের ভাল হবে সেটা তুমিই জান। সহকারী কোচ হিসেবেও একশো শতাংশই দিতে চাই। যাতে প্রথম বছর ট্রফিটা আমাদের হাতেই ওঠে।”

মাদ্রিদে রিয়ালের মিউজিয়াম আর আটলেটিকোর মাঠে গত সপ্তাহে নামার স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বলে। ব্যারেটো বলছেন, “সে দিন মিরান্দা-গডিনদের ড্রেসিংরুমে গিয়ে দেখলাম ওরা মাঠে নামার আগে তারস্বরে গান গাইছে। উফ্, ব্রাজিলকে মনে পড়ে যাচ্ছিল।” পরক্ষণেই স্বগতোক্তি, “এই টুর্নামেন্টটা কিন্তু বেশ কঠিন। কোনও দলই কমজোরি নয়। বিপক্ষদের দিকে তাকান! এক দিকে জিকোর অভিজ্ঞতা, আর এক দিকে মর্গ্যানের মতো ভারতে পোড়খাওয়া কোচ, দিল্লিতে আবার দেল পিয়েরো, নর্থ-ইস্টে কাপদেভিয়া, বাকিরাও বেশ শক্তিশালী। আইএসএল কিন্তু জমে যাবে।”

আর আপনার টিমের প্রস্তুতি? ব্যারেটো প্রথমে বললেন, “আমাদের কোচ হাবাস মাদ্রিদে প্রথম দু’সপ্তাহ কাউকে বল ধরতে দেননি। রোজ দু’বেলা প্র্যাকটিস সেশনে সকালে হার্ড ট্রেনিং। আর বিকেলে বল নিয়ে প্র্যাকটিস।” একটু থেমে ফের বললেন, “অন্য দলগুলোর বিদেশিরা ১৫ সেপ্টেম্বরের পর দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। আমাদের বিদেশিরা কিন্তু অগস্টের শেষ থেকেই শিবিরে নিজেদের নিংড়ে দিয়েছে। এর সুফল পাবই।”

আর টিমের ইউএসপি? এ বার সোজাসাপটা ব্যারেটোর হুঙ্কার, “লেফট উইং জেকব পোদানির দিকে নজর রাখুন। যেমন গতি, তেমন বক্সে ক্রস রাখে, ঠিক তেমনই পাসার। সঙ্গে লুই গার্সিয়া তো রয়েছেই। বিশ্বকাপার কিন্তু অহং ভাবটাই নেই। ভারতীয়দের সঙ্গে একদম মিশে গিয়েছে।”

দলের সেরা পাঁচ বিদেশি হিসেবে এই দু’জনের সঙ্গে রাখছেন, দুই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার বতসোয়ানার অফেন্তসে নাতো এবং স্পেনের বোরিয়া ফার্নান্দেজ ও ইথিওপিয়ান ফরোয়ার্ড ফিকরু তেফেরাকে। আর ভারতীয়দের মধ্যে অর্ণব, লোবো, বলজিৎ, রাকেশ মাসি এবং মোহনরাজদের প্রশংসাও করছেন সবুজ তোতা। ভারতে এসে বিদেশিদের পরিবেশগত অসুবিধা হবে, মানতে নারাজ আটলেটিকোর সহকারী কোচ। “আমি যখন এসেছিলাম তখন সামনে একটা লম্বা লিগ। পরিকাঠামো ছিল অন্য। আর এখানে টুর্নামেন্টের ফর্ম্যাট আলাদা। সেরা হোটেল, সেরা সাপোর্ট স্টাফ, সেরা ট্রেনিং পেয়েছে ওরা। অসুবিধা হবে না।”

এর পরেও যদি ব্যর্থতা আসে? এ বার কেকেআরের উদাহরণ টেনে আনলেন ব্যারেটো। “কেকেআর-কে কলকাতা সময় দিয়েছে। আজ দেখুন ওরা কত সফল। কলকাতা সুখে-দুঃখে পাশে থাকলে কে না বলতে পারে, এই টুর্নামেন্টে আমরাও এক দিন অদম্য হয়ে উঠব না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE