মাঠ ভরা কাদা। স্টেডিয়াম প্রায় ফাঁকা। ঝিরঝিরে বৃষ্টিও হয়েছে মাঝেমধ্যে।
তবু, সোমবার দুপুরে ডোমজুড় প্রাচ্যভারতী ক্রীড়াঙ্গনে জাতীয় স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় (সুব্রত কাপ) হাওড়া জেলার দু’টি বিভাগের ফাইনাল হল জমজমাট। সব মিলিয়ে ৬টি গোল হল। হ্যাটট্রিক করল এক জন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পর নিজেদের ক্রীড়া শিক্ষককে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠল চ্যাম্পিয়ন মাকড়দহ বামাসুন্দরী ইনস্টিটিউশন এবং সাঁকরাইল অভয়চরণ হাইস্কুলের ফুটবলাররা।
অনূর্ধ্ব-১৪ বিভাগে মাকড়দহ বামাসুন্দরী ইনস্টিটিউশন ৪-০ গোলে হারায় উলুবেড়িয়ার খালনা রাই রাধাগোবিন্দ ইনস্টিটিউশনকে। খেলার প্রথম ১০ মিনিট দু’দলের লড়াই ছিল টানটান। তবে, তারপর থেকেই মাঝমাঠ চলে যায় বামাসুন্দরীর ফুটবলারদের দখলে। প্রথমার্ধেই হয় তিনটি গোল। দ্বিতীয়ার্ধে একটি। ফ্রি কিক ও কর্নার থেকে দু’টি গোল আসে। হ্যাটট্রিক করে শুভ্রজিৎ চক্রবর্তী। অন্য গোলটি অধিনায়ক সৌভিক শাসমলের। শুভ্রজিতের দু’টি গোলের পিছনেও রয়েছে সৌভিকের ডিফেন্সচেরা পাস। তিন গোল হয়ে যাওয়ার পরেই খালনার ফুটবলারদের খেলায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই স্কুলের এক শিক্ষকের দাবি, ‘‘আমাদের কাছে খবর ছিল মাকড়দহ মাঠে খেলা হবে। প্রথমে আমরা সেখানে যাই। তারপর খবর পাই খেলা হবে ডোমজুড় প্রাচ্যভারতী মাঠে। এই টানাপড়েনের জন্যই খুদে ফুটবলারদের মনোসংযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।’’
অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হল সাঁকরাইল অভয়চরণ হাইস্কুল। তারা ২-০ গোলে শ্যামপুর হাইস্কুলকে হারায়। গোল দু’টি করে করমচাঁদ মুর্মু এবং অগ্নিভ সিংহ। প্রথম গোলটি হয় খেলার ১৫ মিনিটের মাথায়। শ্যামপুর স্কুলের ডিফেন্সের এক খেলোয়াড়ের পা থেকে বেরিয়ে আসা একটি বল তাড়া করে গোলরক্ষককে বাঁ দিকে রেখে গোল করে করমচাঁদ। এরপরে শ্যামপুরের ফুটবলাররা গোল শোধের বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। খেলার একবারে শেষ লগ্নে প্রতি আক্রমণ থেকে সাঁকরাইলের হয়ে ব্যবধান বাড়ান অগ্নিভ। খেলা শেষে জয়ী স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক নিরাপদ প্রামাণিক বলেন, ‘‘স্কুলের নিজস্ব মাঠ নেই। আশপাশের ক্লাবের মাঠেই ছাত্রেরা অনুশীলন করে। সুব্রত কাপকে সামনে রেখে প্রতি বছর আন্তঃশ্রেণি ফুটবল প্রতিযোগিতা চালাই। সেখান থেকে ফুটবলার বাছা হয়।’’
খেলা দু’টি পরিচালনা করেন অশোক রায়, দেবাশিস মণ্ডল ও শোভন লাহা। জেলা স্কুল ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে খবর, অনূর্ধ্ব-১৪ ও ১৭ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন স্কুল ক্লাস্টার পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় (কয়েকটি জেলা চ্যাম্পিয়ন নিয়ে এই বিভাগ তৈরি হবে) খেলবে। সেখানে সফল হলে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার সুযোগ মিলবে।